ভারতের উত্তরাখন্ড রাজ্যের উত্তরকাশীতে নির্মীয়মান টানেল ভেঙে পড়ার দুর্ঘটনায় টানা ১০ দিন সুড়ঙ্গে আটকে আছেন ৪১ জন শ্রমিক। বিবিধ পদ্ধতিতে উদ্ধার অভিযান চলছে। মঙ্গলবার ২১ নভেম্বর সুড়ঙ্গে আটক ৪১ জন শ্রমিক কেমন আছেন, তা দেখার জন্য পাইপলাইনের মাধ্যমে সুড়ঙ্গের ভিতর প্রবেশ করানো হয়েছিল এন্ডোস্কোপিক ক্যামেরা। সেই ক্যামেরাতেই বিপর্যয়ের পর প্রথমবার দেখতে পাওয়া গেল আটকে পড়া শ্রমিকদের।
শুক্রবার ১৭ নভেম্বর টানেলে উদ্ধারকাজ চলার সময়েই ফাটল ধরার শব্দ শোনার পর বাধ্য হয়েই বন্ধ করে দিতে হয়েছিল উদ্ধারকাজ। কিন্তু ৩ দিন চেষ্টার পর সোমবার ২০ নভেম্বর রাতে একটি ৬ ইঞ্চি চওড়া পাইপ ঢোকানো গিয়েছিল সুড়ঙ্গের ভিতর। তার মধ্যে দিয়েই কাচের বোতলে করে পাঠানো হয়েছিল গরম খিচুড়ি, ডালিয়া, কলা, আপেল। সেই পাইপের মধ্যে দিয়েই ঢোকানো হয়েছিল এন্ডোস্কোপিক ক্যামেরা এবং ওয়াকি টকি, রেডিও হেডসেট। সেই ক্যামেরাতেই দেখা গেছে শ্রমিকদের। তাদের মাথায় এখনও রয়েছে কাজের সময়ে পরার হলুদ শক্ত টুপি, গায়ে গিয়ার। ক্যামরা দেখেই হাত নেড়েছেন তারা। জানিয়েছেন, যথাসম্ভব ঠিকই থাকার চেষ্টা করছেন সকলে।
উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামি ঘটনার ভিডিও শেয়ার করেছেন এক্স হ্যান্ডেল (পূর্ববর্তী ট্যুইটার)-এ।
খাবার পৌঁছে দেওয়ার মতো পদক্ষেপের জন্য নতুন পাইপটিকে ‘লাইফলাইন পাইপ’ বলে উল্লেখ করেছেন উদ্ধারকারীরা। বর্তমানে শুধু খাবার দেওয়া শুরু হলেও বাইরে না বেরনো পর্যন্ত ওই পাইপ দিয়েই শ্রমিকদের মোবাইল ফোন এবং চার্জারের মতো প্রয়োজনীয় জিনিসও পাঠানোর পরিকল্পনা রয়েছে উদ্ধারকারীদের। আপাতত শ্রমিকদের সঙ্গে যাতে সবসময় যোগাযোগ রাখা যায়, তার জন্য সুড়ঙ্গের ভিতর একটি ওয়াকি টকি পাঠানো হয়েছে।
আটকে পড়া শ্রমিকদের কী কী খাবার পাঠানো হবে, সেই বিষয়ে প্রথমে চিকিৎসকদের সঙ্গে পরামর্শ করে নেওয়া হয়েছে। চিকিৎসকদের পরামর্শ মতো শ্রমিকদের জন্য খাবারের একটি তালিকা তৈরি করা হয়েছে। সেই তালিকা মেনেই একেক সময়ে একেক রকম খাবার পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন উদ্ধার অভিযানের দায়িত্বে থাকা কর্নেল দীপক পাতিল।
গত ১২ নভেম্বর ভোরে উত্তরাখণ্ডের সিল্কিয়ারায় নির্মীয়মাণ সুড়ঙ্গে ধস নেমেছিল। ভেঙে পড়া সেই টানেলে আটকে পড়েছিলেন ৪১ জন শ্রমিক। দেশের পাশাপাশি বিদেশি সংস্থা উদ্ধারকাজে সহায়তা করছে। ধ্বংসস্তূপের মধ্য দিয়ে পাইপ ঢুকিয়ে চলছে অক্সিজেন পাঠানো। সোমবার উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামির সঙ্গে ফোনে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আটকা পড়া শ্রমিকদের উদ্ধারকাজে সমস্ত রকম সহায়তা দেওয়ার আশ্বাস দেন তিনি।