জাতিসংঘের একটি সংস্থা জানিয়েছে, ইন্দোনেশিয়ার একেবারে পশ্চিমে অবস্থিত এক প্রদেশে ৩টি নৌকায় করে ৫০০ রোহিঙ্গা শরণার্থী অবতরণ করেছে। ২০১৭ সালে মিয়ানমারে এই সংখ্যালঘু গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে সামরিক দমন-পীড়ন শুরুর পর এটাই ইন্দোনেশিয়ায় এককভাবে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক রোহিঙ্গা গমনের ঘটনা।
রোহিঙ্গাদের বেশিরভাগই মুসলিম। তারা মিয়ানমারে বড় আকারে নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। হাজার হাজার রোহিঙ্গা প্রতিবছর জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মালয়েশিয়া বা ইন্দোনেশিয়ায় পৌঁছানোর জন্য এ ধরনের দীর্ঘ ও ব্যয়বহুল সমুদ্র যাত্রায় অংশ নেন। তাদের ব্যবহার করা নৌকাগুলো অনেক ক্ষেত্রেই বেশ ভঙ্গুর থাকে।
জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থার প্রটেকশান অ্যাসোসিয়েট ফায়সাল রাহমান এএফপি-কে বলেন, ১টি নৌকা আচেহ প্রদেশের বিরিউয়েন জেলায় ২৫৬ যাত্রীসহ এসে পৌঁছায়। অপর এক নৌকায় আরও অন্তত ২৪১ জন এসে আচেহ’র পিডিয়ে অঞ্চলে আসেন এবং ছোট এক নৌকায় ৩৬ জন পূর্ব আচেহ পৌঁছান।
রাহমান রবিবার বলেন, “তাদেরকে বিভিন্ন জায়গায় পাওয়া যায়।”
তিনি জানান, বিরিউয়েন জেলায় পৌঁছানো নৌকাটিতে ২৫৬ জন আরোহী ছিলেন, যাদের ১১০ জন নারী ও ৬০ জন শিশু।
স্থানীয় কর্মকর্তারা জানান, এ সপ্তাহে ৮০০ জনেরও বেশি শরণার্থী আচেহ প্রদেশে অবতরণ করেছেন। এর আগে মঙ্গলবার ১৯৬ জন ও বুধবারে ১৪৭ জন অবতরণ করেন।
শরণার্থীদের একটি অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রে রাখা হয়েছে। কর্তৃপক্ষ শিগগির তাদের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে। বেশিরভাগ শরণার্থী শারীরিকভাবে সুস্থ আছেন বলে জানা গেছে।
২০ বছর বয়সী আজিজ উল্লাহ বলছেন তিনি বাংলাদেশের কক্সবাজারের একটি শিবিরে বসবাস করছিলেন। দলবদ্ধভাবে তারা ১৬ দিন আগে সেখান থেকে যাত্রা শুরু করেন।
তিনি এএফপিকে বলেন, “আমাদের যাত্রার পেছনের (কারণ) ছিল…মিয়ানমার সরকার (আমাদের বিরুদ্ধে) বারবার সহিংস আচরণ করেছে।”
“আমি শুধু একটি শান্তিপূর্ণ জীবন চাই, যেখানেই হোক না কেনো। আমি যদি এখানে শান্তিপূর্ণ জীবন পাই, আমি এখানেই থাকব”, বলেন তিনি।
জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর-এর মতে, ২০২২ সালে দুই হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতে এই ঝুঁকিপূর্ণ যাত্রা করে।