একটি শীর্ষ বিরোধী গোষ্ঠী এবং ঐ অঞ্চলের বাসিন্দারা মিয়ানমারের পশ্চিমাঞ্চলের একটি গ্রামে সেনাবাহিনীর বিমান হামলায় আট শিশুসহ অন্তত ১১ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন।
চিন রাজ্যের মাতুপি শহরের দক্ষিণে ভুইলু গ্রামে বুধবারের হামলায় চারজন আহত হয়েছেন বলে স্বাধীন স্থানীয় গণমাধ্যমের অনলাইন প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। মিয়ানমারের সামরিক সরকার ওই স্থানে কোনো হামলার ঘোষণা দেয়নি।
হামলার খবর ছড়িয়ে পড়তে শুরু করলে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক প্রধান মিয়ানমারের সব পক্ষকে সামরিক অভিযানে সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়ে একটি বিবৃতি জারি করেন। বেসামরিক নাগরিকদের ক্ষতি করতে পারে এমন সবকিছু এড়িয়ে চলতে বলা হয়েছে। ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে অং সান সু চির নির্বাচিত সরকারের কাছ থেকে সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখলের পর থেকে গণতন্ত্রপন্থী বাহিনী এবং জাতিগোষ্ঠীভিত্তিক সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলির উপর, সামরিক বাহিনী -প্রতিষ্ঠিত সরকারের হামলা চলছে। এতে প্রায়শই বেসামরিক লোকজনের হতাহতের ঘটনা ঘটেছে।
‘সেনাবাহিনী দখলের পর থেকে চিন রাজ্য সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে সশস্ত্র সংগ্রামে গভীরভাবে জড়িত। সশস্ত্র জাতিগোষ্ঠীগত বিরোধী দল চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট এবং তার মিত্ররা সোমবার ভারতের সীমান্তবর্তী রিহখাওদা শহরটি দখল করে নিয়েছে।
জাতীয় ঐকমত্যের সরকারের মানবিক বিষয়ক ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিষয়ক উপমন্ত্রী নাগাই তাম মং শুক্রবার অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে বলেন, চিন রাজ্যের দক্ষিণাঞ্চলের পার্বত্য অঞ্চলের একটি বিচ্ছিন্ন গ্রাম ভুইলুতে বুধবার সন্ধ্যায় দুটি সামরিক বিমান বোমা নিক্ষেপ করেছে।
তিনি টেলিফোনে বলেন, “নিহতদের সবার বয়স ১২ বছরের কম এবং তাদের মধ্যে দুজন শিক্ষকদের সন্তান”। তিনি বলেন,গ্রামের একটি গির্জা, দুটি স্কুল ভবন ও ১৮টি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গ্রামে প্রায় ৮০টি বাড়ি রয়েছে।
শুক্রবার জেনেভায় জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার তুর্কের কার্যালয় থেকে জারি করা এক বিবৃতিতে বলা হয়, তার সংস্থা “মিয়ানমারের ঘটনাবলী নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। সামরিক বিরোধী সশস্ত্র গোষ্ঠী ও তাদের মিত্ররা উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে। কয়েকশ সৈন্য তাদের অস্ত্র সমর্পণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে”।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, “আটককৃতদের সবার সঙ্গে মানবিক আচরণ অপরিহার্য” এবং প্রতিশোধ নেওয়া পুরোপুরি নিষিদ্ধ।
বিবৃতিতে বলা হয়, গত ২৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া যুদ্ধ বেড়ে যাওয়ায় এ পর্যন্ত প্রায় ৭০ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত ও ৯০ জনেরও বেশি আহত হয়েছে। আরও দুই লাখেরও বেশি লোক বাস্তুচ্যুত হয়েছে। ‘এর আগে জাতিসংঘ বলেছিল যে ২০২১ সালে সামরিক বাহিনী ক্ষমতা দখল করার পর থেকে এই লড়াইয়ে প্রায় ১৭ লাখ লোক বাস্তুচ্যূত হয়েছে। এতে জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে সংঘাতের অবসান ঘটাতে তাদের প্রচেষ্টা জোরদার করার আহ্বান জানানো হয়।