জাতিসংঘের মূল্যায়নে, আফগান নারী স্বাধীনতাই তালিবানের বৈধতার চাবিকাঠি

কাবুলে আফগান নারীরা খাদ্যের জন্য অপেক্ষা করছেন। আফগানিস্তান, মে ২৩,২০২৩।

জাতিসংঘ কর্তৃক পরিচালিত একটি নিরপেক্ষ মূল্যায়নে তালিবান সরকারের স্বীকৃতিকে আফগানিস্তানের আন্তর্জাতিক চুক্তির বাধ্যবাধকতা এবং অঙ্গীকার মেনে চলার সাথে যুক্ত করা হয়েছে। ফলে শিক্ষা ও কর্মসংস্থানের সুযোগে নারীর অধিকারের উপর থেকে ব্যাপক বিধিনিষেধ অবিলম্বে অপসারণ করতে হবে।

ভয়েস অফ আমেরিকার পাওয়া প্রতিবেদনের খসড়া কপিতে বলা হয়েছে, “বৈশ্বিক প্রতিষ্ঠান ও ব্যবস্থায় আফগানিস্তানের যে কোনো আনুষ্ঠানিক পুনঃএকত্রীকরণের জন্য আফগান নারীদের অংশগ্রহণ ও নেতৃত্ব প্রয়োজন।”

গত মার্চে নিরাপত্তা পরিষদের এক প্রস্তাবে জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসকে ১৭ নভেম্বরের মধ্যে তালিবান নিয়ন্ত্রিত দেশটিতে “সমন্বিত ও সুসঙ্গত দূরদর্শী সুপারিশ” করতে বলা হয়। মিশনের নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য তিনি তুর্কি সরকারের সাবেক কর্মকর্তা ফেরিদুন সিনিরলিওগলুকে বিশেষ সমন্বয়ক নিযুক্ত করেন।

এরপর সিনিরলিওগলু আফগানিস্তান সফর করেন। তিনি তালিবান নেতৃবৃন্দ, দেশের বাইরে বসবাসরত আফগান স্বার্থসংশ্লিষ্ট এবং গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক স্বার্থসংশ্লিষ্টদের সাথে পরিস্থিতি মূল্যায়নের উদ্দেশ্যে জাতিসংঘ প্রধানের কাছে একটি প্রতিবেদন জমা দেন।

নথিতে, নারী ও মেয়েদের পরিস্থিতি উল্লেখ করা হয়। বিশেষত মেয়েদের শিক্ষার উপর বিধিনিষেধ “একমাত্র অভিন্ন বিষয়”যা আলোচনার সর্বাগ্রে উঠে আসে। আফগান নারী, মেয়ে, ব্যবসায়ী সম্প্রদায়, ধর্মীয় আলেম, উপজাতীয় প্রবীণ, সুশীল সমাজ, স্বাস্থ্য ও শিক্ষা পেশাজীবী এবং কার্যত তালিবান কর্তৃপক্ষের অনেক প্রতিনিধিই এই বিষয়টি তুলে ধরেন ।

তালিবান ২০২১ সালের আগস্টে যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত সরকারের কাছ থেকে ক্ষমতা পুনরুদ্ধার করে। তারা ইসলামী শরিয়া আইনের বিষয়ে তাদের কঠোর ব্যাখ্যা আরোপ করে, ষষ্ঠ শ্রেণীর পরে মেয়েদের জন্য স্কুল নিষিদ্ধ করে। জাতিসংঘ এবং অন্যান্য সহায়তা সংস্থাসহ বেশিরভাগ সরকারী ও বেসরকারী খাতের কর্মক্ষেত্রেও নারীদের নিষিদ্ধ করা হয়।

জাতিসংঘের প্রতিবেদনে বলা হয়, “বর্তমানের শাসক গোষ্ঠী এই নিষেধাজ্ঞাগুলিকে ইসলামী বিশ্বাস এবং আফগান ঐতিহ্যের অংশ হিসাবে বাধ্যতামূলক করে তোলার চেষ্টা করছে। তবে ইসলামি সহযোগিতা সংস্থার অন্য কোনো সদস্য রাষ্ট্রে এ ধরনের বিধিনিষেধ নেই। এমনকি অনেক আফগানও এই বিধিনিষেধ প্রত্যাখ্যান করেছেন।”

নিষেধাজ্ঞাগুলি জাতিসংঘ সনদ বা আন্তর্জাতিক আইনে অন্তর্ভুক্ত মূল্যবোধের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয় বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। আফগানিস্তানের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার পক্ষেও তা অনুকূল নয় বলে জানানো হয়।