ইন্দোনেশয়ার উইডোডোর সাথে বাইডেনের বৈঠককে জটিল করে তুলেছে গাজা যুদ্ধ

ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো উইডোডো ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তায় হালিম পেরদানাকুসুমা বিমান ঘাঁটিতে রওনা হওয়ার আগে গাজায় ফিলস্তিনিদের জন্য সহায়তা পরিদর্শনের সময় ত্রাণ সহায়তার মধ্য দিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন। ৪ নভেম্বর, ২০২৩।

সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো উইডোডোর মধ্যে নানান কার্যক্রম নিয়ে একটি বৈঠক হবে বলে আশা করা হয়েছিল। গাজায় ইসরাইলের ধ্বংসাত্মক সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানে মুসলমানদের ব্যাপক ক্ষোভের আলোকে বৈঠকটি আরও সংবেদনশীল হয়ে উঠেছে।

উইডোডোর সরকারি সফরের সময় যুক্তরাষ্ট্র এই গুরুত্বপূর্ণ ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অংশীদারের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্কের উন্নয়ন করবে বলে আশা করা হচ্ছে। ইন্দোনেশিয়া চীনের প্রভাববলয়ের দিকে অগ্রসর হচ্ছে।ওয়াশিংটনকে বেইজিং-এর সমতুল্য রেখে দুই নেতা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে “বিস্তৃত কৌশলগত অংশীদারিত্ব”-তে উন্নীত করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

তবে প্রেসিডেন্টরা ইসরাইল-হামাস যুদ্ধে প্রতিক্রিয়ার ব্যাপারে একে অপরের চেয়ে অনেক দূরে অবস্থান নিয়েছেন। । বাইডেন ইসরাইলে হামাসের ৭ অক্টবরের হামলার প্রতিক্রিয়ায় ইসরাইলকে দৃঢ় সমর্থনের প্রস্তাব দিয়েছিলেন। অন্যদিকে উইডোডো গাজার মানবিক পরিস্থিতিকে “অগ্রহণযোগ্য” বলে অভিহিত করেছেন।

কৌশলগত যোগাযোগের জন্য জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের সমন্বয়ক জন কার্বি বৃহস্পতিবার এক ব্রিফিং-এর সময় ভয়েস অফ আমেরিকাকে বলেছেন, বাইডেন বুঝতে পারেন, এ সম্পর্কে “দৃঢ় অনুভূতি রয়েছে” তবে “যুক্তরাষ্ট্র যে ইসরাইলের সাথে অবস্থান করছে তা তারা স্পষ্ট করে দিতে থাকবে।”

বাইডেন এটিও স্পষ্ট করবেন যে, যুক্তরাষ্ট্র ফিলিস্তিনি জনগণের জন্য মানবিক সহায়তা এবং নিরাপদ করিডোর প্রদানের জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করবে এবং “দুই-রাষ্ট্র সমাধানের প্রকৃত প্রতিশ্রুতি” থেকে পিছপা হবে না।

ফিলিস্তিনের বিষয়টি ইন্দোনেশিয়ার ঔপনিবেশিক বিরোধী ঐতিহ্য এবং জনসংখ্যার ওপর ভিত্তি করে রাজনৈতিক মতামতকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করে। প্রায় ২২ কোটি ৯০ লাখ মুসলিম অর্থাৎ বিশ্বের মোট ১৩ শতাংশ মুসলিম ইন্দোনেশিয়ায় বসবাস করে। দেশটির জনসংখ্যার ৮৭ শতাংশ মুসলিম।

যুক্তরাষ্ট্রে যেমন ইসরাইলের প্রতি সমর্থনের প্রতিশ্রুতি ছাড়া কোনো প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী জিততে পারে না, ইন্দোনেশিয়ার ক্ষেত্রে ব্যাপারটা ঠিক তার বিপরীত।

গাজায় বেসামরিক হতাহতের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় ইসরাইলের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনের প্রতিবাদে বেশ কয়েকটি শহর বিক্ষোভে ফেটে পড়েছে।বিশিষ্ট ইসলামি দলগুলো প্রায়ই ফিলিস্তিন ইস্যুকে পুঁজি করার চেষ্টা করে। পরের বছর একটি প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতাসীন ইন্দোনেশিয়ান ডেমোক্র্যাটিক পার্টি অফ স্ট্রাগল গাজার যুদ্ধে উইডোডোকে খুব নম্র করে দেখানোর বিষয়ে সতর্ক।

হোয়াইট হাউস সফরের ঠিক একদিন আগে উইডোডোর রিয়াদে সৌদি আরব আয়োজিত অর্গানাইজেশন অফ ইসলামিক কো-অপারেশনের শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেয়ার কথা রয়েছে।সেখানে আলোচ্যসূচিতে “ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে নৃশংস ইসরাইলি আগ্রাসন” নিয়ে আলোচনার আহ্বান জানানো হয়েছে।


ভয়েস অফ আমেরিকার রিভান দ্বিয়াস্তোনো এবং ভার্জিনিয়া গানওয়ান এই প্রতিবেদন তৈরিতে সহায়তা করেছেন।