ভারতের অভিনেত্রী রশ্মিকা মান্দানা-র ডিপফেক কাণ্ডে তথ্যপ্রযুক্তি আইনে কড়া বার্তা দিল কেন্দ্র সরকার

ভারতের অভিনেত্রী রশ্মিকা মান্দানা

সম্প্রতি ভারতের অভিনেত্রী রশ্মিকা মান্দানার একটি ভুয়ো ভিডিও নেটমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। সেই ভিডিওতে অভিনেত্রীকে হাসিমুখে কথা বলতে দেখা যাচ্ছে। ভাইরাল হওয়া মাত্রই ভিডিও নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়, কারণ সেখানে একটি লিফট-এর মধ্যে রশ্মিকাকে দেখা যাচ্ছিল এমন এক পোশাকে, যার বক্ষ বিভাজিকা অত্যন্ত স্পষ্ট। ভিডিওটি ভাইরাল হয়ে বিতর্ক তুঙ্গে ওঠার পরেই জানা যায়, সেটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ডিপফেক প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছে। অন্য এক মহিলার ভিডিওতে রশ্মিকার মুখ বসিয়ে সেই জাল ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে সমাজমাধ্যমে।

রশ্মিকা মান্দানার ডিপফেক-কাণ্ডে এবার কড়া বার্তা জারি করল ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, যারা ডিপফেক-এর শিকার হবেন, তারা প্রত্যেকে যেন পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন। তথ্যপ্রযুক্তি আইনের মাধ্যমে তাদের সুবিচার পাইয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে কেন্দ্র।

জনপ্রিয় অভিনেত্রী ডিপফেক-এর শিকার হওয়ার ঘটনা নিয়ে দেশজুড়ে আলোড়ন পড়ে গেছে। অমিতাভ বচ্চন রশ্মিকার পাশে দাঁড়িয়ে তাকে অভিযোগ দায়ের করার পরামর্শ দেন এবং অপরাধীর কঠোর শাস্তির দাবি করেন। মুখে খুলেছেন আসল ভিডিওটি যার, সেই মহিলাও। জারা প্যাটেল নামে ভারতীয় বংশোদ্ভূত এই ব্রিটিশ মহিলা জানিয়েছেন, রশ্মিকার সঙ্গে হওয়া এই ঘটনায় তিনি বিরক্ত এবং চূড়ান্ত হতাশ।

এই ঘটনাপ্রবাহের পরিপ্রেক্ষিতে তথ্যপ্রযুক্তির এমন অপব্যবহারকে অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে দেখে বার্তা দিল কেন্দ্রীয় সরকার। কেন্দ্রীয় তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী রাজীব চন্দ্রশেখর জানিয়েছেন, ভুল তথ্যপূর্ণ কন্টেন্ট দেখতে পেলে তা ছড়িয়ে পড়া থেকে আটকানো অনলাইন প্ল্যাটফর্মগুলির কাছে আইনি বাধ্যবাধকতা। তিনি আরও জানিয়েছেন, কোনও ইন্টারনেট ব্যবহারকারী কিংবা সরকারের কাছ থেকে রিপোর্ট পাওয়ার পর ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে এই ধরনের বিষয়বস্তু মুছে ফেলতে হবে।

কোনও কারণে যদি এই নির্দেশ পালনে ব্যর্থ হয় অনলাইন প্ল্যাটফর্মগুলি, তাহলে আইনি পদক্ষেপের মধ্যে পড়তে হবে তাদের। চন্দ্রশেখর জানিয়েছেন, সরকার নাগরিকদের, বিশেষ করে যেসব শিশু এবং মহিলারা এই ধরনের বিষয়বস্তুর 'টার্গেট' হয়েছেন, তাদের নিরাপত্তা এবং ভরসার প্রশ্নটিকে খুব গুরুত্ব সহকারে দেখছে।

কেন্দ্র আরও জানিয়েছে, ডিপফেক তৈরি এবং প্রচারের জন্য কঠোর শাস্তির বিধান রয়েছে আইনে। এমন অপরাধের জন্য ১ লক্ষ টাকা জরিমানা এবং তিন বছরের জেল হতে পারে।