ভারতীয় ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞদের সতর্কবার্তা, হিমালয় পর্বতমালায় তীব্র ভূমিকম্পের আশঙ্কা, প্রভাব পড়বে উত্তর ভারতে

ভারতের হিমালয় পর্বতমালা ও সংশ্লিষ্ট এলাকায় প্রবল তীব্র ভূমিকম্পের সতর্কবার্তা দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

ভারতের ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞরা সতর্কবার্তা দিয়েছেন হিমালয় পর্বতমালা ও সংশ্লিষ্ট এলাকায় ভূমিকম্প হলে তার হবে প্রবল তীব্র, এই অঞ্চলে ভূমিকম্প হলে তার মাত্রা হবে রিখটার স্কেলে ৮.৫। এই কম্পনের ধাক্কায় টলে যাবে হিমালয় পার্বত্য এলাকা।

৫.৬ রিখটার মাত্রার ভূমিকম্পে কেঁপে উঠেছে দিল্লি-সহ উত্তর ভারতের বিভিন্ন এলাকা। গত শুক্রবার নেপালের তীব্র ভূমিকম্পের রেশ ছড়িয়েছে উত্তর ভারতে। দু’দিন পরে আবারও ভূমিকম্প দিল্লিতে। এবারের কম্পন ৫.৮ রিখটার মাত্রার। একদিকে নেপাল, অন্যদিকে রাজধানী-সহ গোটা উত্তর ভারত যে ভাবে ঘন ঘন কেঁপে উঠছে, তাতে আতঙ্কের প্রহর গুনছেন ভূবিজ্ঞানীরা। ভূকম্প বিশেষজ্ঞেরা এই ধারাবাহিক কম্পন নিয়ে অনেক আগেই পূর্বাভাস দিয়ে বলেছে}ল উত্তর-পশ্চিম হিমালয়ে অদূর ভবিষ্যতে রিখটার স্কেলে ৮ মাত্রার ভূমিকম্পের আশঙ্কা রয়েছে।

২০১৫ সালে নেপালের কাঠমান্ডুর ৭০ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে যে ভূমিকম্পটি তৈরি হয়েছিল, তার জেরে অন্তত ৩০ বার কেঁপেছিল নেপালের মাটি। ভূ-বিজ্ঞানীরা নিশ্চিত, সেগুলো সব আফটারশক। এর একটার মাত্রা ছিল ৬.১। ভূবিজ্ঞানীরা সিসমোগ্রাফের তরঙ্গ ও অন্যান্য পরীক্ষা নিরীক্ষা করে বলেছিলেন, ভারতীয় প্লেটটি ইউরেশীয় প্লেটের মধ্যে ঢুকে যাওয়ার সময় দু’জায়গায় ফাটল তৈরি হয়েছিল। এই ফাটল দিয়েই শক্তি নির্গত হয়ে ভূমিকম্প তৈরি হয়েছে। বারবার কেঁপেছে নেপালের মাটি। এবারে নেপালে যে ভূমিকম্প হয়েছে তাতে আফটারশক ছিল ১৫৯ বার।

ভূবিজ্ঞানীরা বলছেন, হিমালয়ের তলায় যে প্লেট বা পাত রয়েছে, তাতে দীর্ঘদিন ধরে চাপ পড়ছে। এই চাপের ফলে পাতের একটি অংশ আরেকটির ভেতরের দিকে ঢুকে যাচ্ছে। এভাবে চাপ বাড়তে বাড়তে চাপের সর্বোচ্চ সীমায় পৌঁছে গেছে ওই পাত। ফলে যে কোনও মুহূর্তে রিখটার স্কেলে ৮.৫ মাত্রার ভূমিকম্প হতে পারে। মাটির তলায় এই চাপ বাড়তে বাড়তে যে জায়গায় গিয়ে পৌঁছেছে, তাতে পাতের একটি অংশ অন্য অংশের তুলনায় প্রায় ১৫ মিটার সরে যেতে পারে। এই ১৫ মিটার সরে যাওয়ার প্রভাবও বহুগুণ হয়ে দেখা দিতে পারে মাটির উপরে। তবে এই ভয়াবহ প্রভাবে কী পরিমাণ ক্ষতি হতে পারে, তা ভাবলেই চমকে উঠতে হয়।

এই ভূমিকম্পের প্রভাব যে কেবলমাত্র হিমালয়ের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে তা নয়, উত্তর ভারতেও তা ছড়িয়ে পড়বে। ভূবিজ্ঞানীরা বলছেন, ভবিষ্যতের কথা না ভেবে হিমালয়ে একের পর এক জনপদ তৈরি হচ্ছে। পরিবেশে হস্তক্ষেপ করছে মানুষ। কিন্তু যদি এই মাত্রার ভূমিকম্প হয়, তাহলে মানুষের পক্ষে তা সামলানো অসম্ভব। গত কয়েক বছর ধরে মাঝেমধ্যেই কেঁপে উঠেছে হিমালয়। ভূবিজ্ঞানীদের মতে, এই কম্পন আসলে বড় ভূমিকম্পের লক্ষণ।