নেপালে ভয়াবহ ভূমিকম্পের পর খোলা আকাশের নিচে ঘুমাচ্ছে হাজার হাজার মানুষ

উত্তর-পশ্চিম নেপালের জাগারকোট জেলায় ভূমিকম্পে নিহতদের শেষকৃত্যে অংশ নিচ্ছেন বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিরা। (৫ নভেম্বর, ২০২৩)

নেপালের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় পার্বত্য অঞ্চলের হাজার হাজার গ্রামবাসী শনিবার রাতে ভূমিকম্পে বেশিরভাগ বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হওয়ার পর প্রচণ্ড ঠাণ্ডায় খোলা আকাশের নিচে ঘুমাচ্ছে। ঐ ভূমিকম্পে কমপক্ষে ১৫৭ জন মারা যায়।

শুক্রবার রাতে আকস্মিক ভূমিকম্পে জাগারকোট জেলার গ্রামগুলির বেশিরভাগ বাড়ি ধসে পড়ে বা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। শহরগুলির কয়েকটি কংক্রিটের বাড়িও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

রবিবার সকালে সৎকারের অপেক্ষায় থাকা সাদা কাপড়ে মোড়ানো ১৩টি মৃতদেহের দিকে ইঙ্গিত করে চিউরি গ্রামের বাসিন্দা লাল বাহাদুর বিকা বলেন, "আমরা আমাদের গ্রামবাসীদের মৃতদেহ সৎকারের জন্য অপেক্ষা করছি এবং ভূমিকম্পে আহতদের যত্ন নেওয়ার চেষ্টা করছি।“

চিউরি গ্রামের বেশিরভাগ বাড়ি ধসে পড়েছে।

স্থানীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, ভূমিকম্পের আঘাতে নিহতদের অধিকাংশ ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে।

উদ্ধারকর্মীরা যখন সাহায্যের জন্য তাড়াহুড়ো করলেও , অনেক পাহাড়ি গ্রামে কেবল পায়ে হেঁটে পৌঁছানো সম্ভব হয়নি।

উপ-প্রধানমন্ত্রী নারায়ণ কাজি শ্রেষ্ঠ শনিবার বলেছেন, সরকার ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় ত্রাণ পৌঁছানোর চেষ্টা করছে।

সাহায্যের পাশাপাশি উদ্ধারকর্মীরা জীবিতদের খুঁজে বের করার দিকে মনোনিবেশ করেছেন।

আমেরিকান ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) জানিয়েছে, ভূমিকম্পটির প্রাথমিক মাত্রা ছিল ৫ দশমিক ৬ এবং এটি ভূপৃষ্ঠের ১৮ কিলোমিটার গভীরে আঘাত হানে। নেপালের ন্যাশনাল আর্থকোয়েক মনিটরিং অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টার জানিয়েছে, ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল রাজধানী কাঠমান্ডু থেকে প্রায় ৪০০ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে জাগারকোটে।

৮০০ কিলোমিটার দূরে ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতেও এই ভূমিকম্প অনুভূত হয়।

নেপালের পার্বত্য অঞ্চলে ভূমিকম্প খুবই সাধারণ ঘটনা। ২০১৫ সালে ৭ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্পে প্রায় ৯ হাজার মানুষ নিহত ও প্রায় ১০ লাখ স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়।