ভারতের বিহারের মুখ্যমন্ত্রী তথা জনতা দল ইউনাইটেড-এর নেতা নীতীশ কুমার পাটনায় এক জনসভায় বৃহস্পতিবার ২ নভেম্বর অভিযোগ করেন, আগামী বছর ২০২৪-এ ভারতের লোকসভা নির্বাচন নিয়ে কংগ্রেসের কোনও মাথাব্যথা নেই। তিনি বলেন, কংগ্রেসের নেতারা চলতি মাসের ৭ তারিখ থেকে শুরু হওয়া দেশের পাঁচটি রাজ্যের বিধানসভা ভোট নিয়েই ব্যস্ত হয়ে আছেন। অথচ, লোকসভা ভোটও দুয়ারে কড়া নাড়ছে। কিন্তু 'ইন্ডিয়া' জোটের সবচেয়ে বড় দলটির সে বিষয়ে কোনও চিন্তা নেই।
নীতীশ কুমার এই কথাগুলি বলেছেন দেশের বিজেপি বিরোধী ২৯টি দলের 'ইন্ডিয়া' জোটের অন্যতম শরিক সিপিআই-এর জনসভায়। বিজেপির বিরুদ্ধে সারা দেশেই প্রচার চালাচ্ছে সিপিআই। পাটনার সমাবেশে সিপিআই-এর শীর্ষ নেতৃত্ব হাজির ছিলেন।
ইন্ডিয়া জোট নিয়ে তৎপরতা থেমে যাওয়ার বিষয়ে নীতীশ কুমারের মতোই কিছু দিন আগে মন্তব্য করেন এনসিপি নেতা শরদ পাওয়ারও একই কথা বলেন। তারও মত ছিল কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব পাঁচ রাজ্যের ভোট নিয়ে ব্যস্ত।
এমন পরিস্থিতির সম্ভাবনা তৈরি হতে পারে চিন্তা করে তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী ও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দু'মাস আগে মুম্বইয়ে 'ইন্ডিয়া' জোটের বৈঠকে প্রস্তাব করেছিলেন আসন সমঝোতা সেরে ফেলার, যাতে দলগুলি নিজেদের আসনে প্রচার শুরু করে দিতে পারে। তৃণমূল নেত্রীর কথায় তখন সম্মত হয়নি কংগ্রেস।
বিহারে জনতাদল ইউনাইটেডের নেতারা অভিযোগ করেন, নীতীশ কুমারকে জোটে প্রাপ্য মর্যাদা দেওয়া হচ্ছে না। অথচ বিভিন্ন রাজ্যে ঘুরে তিনিই 'ইন্ডিয়া' জোট গঠনে সূত্রধরের ভূমিকা পালন করে চলেছেন। জোট গঠনের শুরুতে নীতীশ চেয়েছিলেন তাকে জোটের চেয়ারম্যান কিংবা আহ্বায়ক করা হোক। কিন্তু কংগ্রেস নেতৃত্ব তাতে সাড়া দেয়নি। বরং পাটনার বৈঠকের পর জোটের লাগাম কংগ্রেস নিজেদের হাতে নিয়ে নিয়েছে।
জোটের ‘ইন্ডিয়া’ নামে আপত্তি ছিল নীতীশের। এই ব্যাপারে রাহুল গান্ধী শুধু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে অভিযোগ ছিল নীতীশ শিবিরের। বিহারের মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, 'ইন্ডিয়া' নাম গ্রামীণ ভারতের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না।
এছাড়া আসন সমঝোতার বিষয়টি কংগ্রেস সিদ্ধান্ত না নেওয়াতেও তিনি অসন্তুষ্ট। কংগ্রেস পাঁচ রাজ্যে বিধানসভা ভোটে ফলাফলের পর লোকসভার আসন নিয়ে জোটের অভ্যন্তরে আসন সমঝোতায় দল ভাল জায়গায় থাকবে।
নীতীশ কুমার বৃহস্পতিবার আরও বলেন, "আমরা সব দল কংগ্রেসকেই এগিয়ে দিয়েছি 'ইন্ডিয়া' জোটের নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য। কিন্তু কংগ্রেসের নেতাদের মধ্যে আমরা কোনও উৎসাহ লক্ষ্য করছি না।"