ভারতের কেরলে খ্রিস্টানদের ধর্মীয় সভায় বিস্ফোরণের মাস্টারমাইন্ড-এর দাবি বোমা বানানো শিখেছেন ইন্টারনেট থেকে

ভারতের কেরলের কোচি-র কালমাসেরি-র এক কনভেনশন সেন্টারে খ্রিস্টানদের ধর্মীয় সভায় তিনটি বোমা বিস্ফোরণের ঘটনার দায় স্বীকার করেন ডোমিনিক মার্টিন।

ভারতের কেরলে রবিবার ২৯ অক্টোবর খ্রিস্টানদের ধর্মীয় সভায় বিস্ফোরণের মূল চক্রী ডমিনিক মার্টিন বর্তমানে পুলিশ হেফাজতে। তাকে জেরা করে পুলিশ যে তথ্য জেনেছে তার মধ্যে রয়েছে, ডমিনিক-এর দাবি, ইন্টারনেট থেকেই বোমা বানানোর কৌশল রপ্ত করেছিলেন তিনি। মাত্র তিন হাজার টাকা খরচ করে তিনটি শক্তিশালী আইআইডি বানিয়ে ফেলেন। ইলেকট্রিক সার্কিট বিশেষজ্ঞ ডমিনিক গত পাঁচ, ছয় বছর ধরে কেরলের ‘জেহোবা'স উইটনেস’ সংগঠনের উপর হামলা চালানোর ছক কষছিলেন বলে দাবি করেছে পুলিশ।

কেরলের কালাসামেরির কনভেনশন সেন্টারে ধারাবাহিক বিস্ফোরণ ঘটানোর পর থানায় আত্মসমর্পণ করে বিস্ফোরণের দায় নিয়েছিলেন ডমিনিক মার্টিন। তিনটি বিস্ফোরণে মৃত্যু হয়েছে অন্তত ১৮ জনের। ৬০ জনের বেশি আহত। বিস্ফোরণকাণ্ডের তদন্ত করছে এনসিজি ও এনআইএ। তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, ডমিনিক ১৫ বছর দুবাইতে ছিলেন। গত পাঁচ বছর ধরে কেরলের কোচির কাছে ঘর ভাড়া নিয়ে বসবাস করে মার্টিনের পরিবার। কয়েক বছর তিনি দুবাইতে একটি সংস্থায় ফোরম্যান হিসেবে কাজ করছেন। সেখানে একাধিক বৈদ্যুতিন যন্ত্রের সার্কিট জোড়ার কাজও শিখেছিলেন। দু’মাস আগে হঠাৎই তিনি দেশে ফিরে আসেন।

তদন্তকারীদের অনুমান, নাশকতার জন্যই দেশে ফিরেছিলেন তিনি। আতসবাজির মতো অল্প ক্ষমতাসম্পন্ন বিস্ফোরক দিয়েই যে এই বিস্ফোরণের আইইডিগুলি বানানো হয়েছিল, সে বিষয়ে নিশ্চিত হয়েছেন তদন্তকারীরা। বাড়িতে বসেই বোমা বানানোর কাজ করেছিলেন ডমিনিক। তারপর সেগুলো রেখে আসেন প্রার্থণাসভায়। রিমোট কন্ট্রোল দিয়ে বোমাগুলোকে অপারেট করেছিলেন তিনি।

তদন্তকারী অফিসারদের ডমিনিক বলেছেন, গত ১৬ বছর ধরে 'জেহোবা'স উইটনেস' নামে একটি ধর্মীয় সংগঠনের সঙ্গে তিনি যুক্ত ছিলেন, তার দাবি, এই জেহোবারা তরুণ মনে বিরূপ ভাবনা গেঁথে দিচ্ছে, মগজধোলাই করছে। দেশবিরোধী কার্যকলাপ করতে বাধ্য করছে। তাই তিনি এই সংগঠন থেকে বেরিয়ে আসতে চাইছিলেন, জেহোবাদের ভাবনার বিরোধিতা করেছিলেন। এই অসন্তোষের জায়গা থেকেই রবিবার ধর্মীয় সভায় বিস্ফোরণ ঘটান।

বিস্ফোরণের পর ৪৮ ঘণ্টা কেটে গিয়েছে। কিন্তু তাও আতঙ্ক কাটছে না সেদিন প্রার্থণাস্থলে হাজির থাকা মানুষদের। এই বিস্ফোরণকে ‘দুর্ভাগ্যজনক’ বলে ব্যাখ্যা করেন কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন। বিস্ফোরণে জখমদের চিকিৎসার জন্য যাবতীয় ব্যবস্থা করতে স্বাস্থ্য দফতরকে নির্দেশ দিয়েছেন কেরলের স্বাস্থ্যমন্ত্রী বীণা জর্জ। সব হাসপাতালকে তৎপর থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।