ভারতের মণিপুরে নতুন করে শুরু সহিংসতা, জঙ্গি আক্রমণে নিহত পুলিশ আধিকারিক, আহত একাধিক কমান্ডো

পুলিশ আধিকারিক চিংথাম আনন্দ কুমার মোরেহ শহরের সাব ডিভিশনাল অফিসার পদে কর্মরত ছিলেন।

ভারতের উত্তর-পূর্বের রাজ্য মণিপুর বিগত কিছু দিন শান্ত থাকার পর, সেখানে কুকি ও মেইতেই, এই দুই জনজাতি গোষ্ঠীর মধ্যে নতুন করে হিংসা শুর হয়েছে। মঙ্গলবার ৩১ অক্টোবর ভারতীয় সময় বিকেলে জঙ্গি হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন এক পদস্থ পুলিশ আধিকারিক। এই ঘটনার কয়েক ঘণ্টা পরে ফের অতর্কিতে হামলা চালায় দুষ্কৃতীরা। তাতে আহত হন কয়েকজন পুলিশ কমান্ডো।

মণিপুরের সীমান্তবর্তী মোরেহ শহরে ঘটনাটি ঘটেছে। মৃত পুলিশ আধিকারিক চিংথাম আনন্দ কুমার মোরেহ শহরের সাব ডিভিশনাল অফিসার পদে কর্মরত ছিলেন। জানা গেছে, চিংথাম শহরের উত্তরাঞ্চলে নির্মীয়মাণ হেলিপ্যাড পরিদর্শনে গিয়েছিলেন তিনি। সেই সময় তার উপর হামলা করে আততায়ীরা। পরপর গুলি চালানো হয়। আহত অবস্থায় তাকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানে তার মৃত্যু হয়। দুষ্কৃতীদের খুঁজতে তল্লাশি অভিযান শুরু করেছে পুলিশ।

পুলিশ আধিকারিকের উপর হামলার পরেই এলাকার পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েন করতে হয়। পরে সেই বাহিনীর উপরেই আবার অতর্কিতে হামলা চালায় জঙ্গিরা। তাতে কয়েকজন পুলিশ কমান্ডো জখম হন।

মণিপুর মন্ত্রীসভার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, মোরেহ শহরের এক স্কুলের মাঠে বিএসএফ এবং রাজ্য পুলিশের যৌথ উদ্যোগে একটি হেলিপ্যাড তৈরি করা হচ্ছিল। মাঠ পরিষ্কারের কাজের তদারকি করছিলেন চিংথাম আনন্দ কুমার। সেই সময়ই দুষ্কৃতিরা আক্রমণ করলে তার পেটে গুলি লাগে। পুলিশের অনুমান কোনও স্নাইপার বন্দুক থেকে গুলি ছোড়া হয়েছিল। এরপর, মোরেহতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করতে রাজ্য পুলিশের কমান্ডোদের একটি বাহিনীকে সেখানে পাঠানো হয়। বিকেল ৩টে নাগাদ, তেংনৌপাল জেলার সিনাম গ্রামের কাছে, পুলিশ কমান্ডোদের কনভয়ের উপর হামলা করে দুষ্কৃতীরা। জায়গাটি মোরেহ থেকে প্রায় ৪৯ কিলোমিটার দূরে। খবর পেয়ে, ঘটনাস্থলে ছুটে যান অসম রাইফেলসের সেনারা। সরকারি সূত্র থেকে জানা গিয়েছে তারাই পুলিশ কমান্ডোদের উদ্ধার করেছে। আহত অনেককে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

এই ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এম বীরেন সিং। নিজের এক্স হ্যান্ডেল (পূর্ববর্তী ট্যুইটার)-এ তিনি লেখেন, “ঘটনার কথা শুনে আমি মর্মাহত। আজ সকালে ঠাণ্ডা মাথায় খুন করা হয়েছে এসডিপিও চিংথাম আনন্দকে। কর্তব্যরত অবস্থায় তার উপর হামলা হয়েছে। অপরাধীরা উচিত শাস্তি পাবে।“