রাজনৈতিক দলগুলির আয়ের উৎস জানার অধিকার নেই জনতার, ভারতের সুপ্রিম কোর্টে দাবি জানাল কেন্দ্র সরকার

ভারতের সুপ্রিম কোর্ট ভবন। ফাইল ছবি।

ভারতের রাজনৈতিক দলগুলির আয়ের উৎস জানার অধিকার নেই জনতার। অর্থাৎ কোন পথে রাজনৈতিক নেতারা তহবিল সংগ্রহ করছে তা জানার অধিকার নেই সাধারণ মানুষের। সুপ্রিম কোর্টে এমনই দাবি করল কেন্দ্রীয় সরকার। ‘নির্বাচনী বন্ড’ সংক্রান্ত মামলায় সুপ্রিম কোর্টে সেই দাবি করেছেন কেন্দ্রের আইনজীবী তথা অ্যাটর্নি জেনারেল আর ভেঙ্কটরমানি।

সোমবার ৩০ অক্টোবর প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চে নির্বাচনী বন্ড-এর বৈধতা সংক্রান্ত মামলার শুনানি ছিল। সংশ্লিষ্ট মামলায় সোমবার অ্যাটর্নি জেনারেল জানান, তথ্যের অধিকার আইনে রাজনৈতিক দলগুলির অনুদান তথা নির্বাচনী বন্ড-এর উৎস জানার অধিকার নেই আমজনতার। অ্যাটর্নি জেনারেল যুক্তি দেন, সংবিধান সবকিছু জানার অধিকার দেয় না জনতাকে। সেক্ষেত্রে যুক্তিসঙ্গত গোপনীয়তার প্রসঙ্গ তোলেন তিনি। সংবিধানের প্রসঙ্গ টেনে নিজের যুক্তির স্বপক্ষে কেন্দ্রের আইনজীবী বলেন, ‘‘সংবিধানের তিন নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী বিষয়টি ভারতীয় নাগরিকদের মৌলিক অধিকারের মধ্যে পড়ে না।’’

আগামী ৩১ অক্টোবর, মঙ্গলবার মামলাটির ফের শুনানি হবে। শীর্ষ আদালতে নির্বাচনী বন্ড-এর পক্ষে সওয়াল করে লিখিত জবাব জমা দেয় কেন্দ্র। এপ্রসঙ্গে কেন্দ্রের আইনজীবী দাবি করেন, নির্বাচনীয় বন্ডে রাজনৈতিক দলগুলির তহবিলে দাতাদের পরিচয় সম্পর্কে যে গোপনীয়তা রয়েছে তা যুক্তিসঙ্গত।

২০১৮ সালে নির্বাচনী বন্ড চালু করেছিল মোদী সরকার। যার ফলে কোনও ব্যক্তি বা কর্পোরেট সংস্থা রাজনৈতিক দলগুলিকে চাঁদা দিতে চাইলে, বন্ড কিনে সংশ্লিষ্ট দলকে দিতে হবে। যত টাকাই দিক না কেন, রাজনৈতিক দলগুলি নির্দিষ্ট অ্যাকাউন্ট-এ সেই বন্ড ভাঙিয়ে নিতে পারবে। কিন্তু কে, কার তহবিলে কত টাকা দিচ্ছে তা বোঝা যাবে না। ২০২১ সালে পশ্চিমবঙ্গ ও অসম বিধানসভা ভোটের আগে নির্বাচনী বন্ড-এর বিরোধিতায় জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছিল শীর্ষ আদালতে। মামলাকারীরা অভিযোগ করেন, রাজনৈতিক দলগুলি অবৈধভাবে এবং বিদেশ থেকে এই বন্ডের মাধ্যমে টাকা পেতে পারে। যদিও কোনও রাজনৈতিক দলই এই দাবি মানতে চায়নি।