আগামী ৩ নভেম্বর ভারতের উত্তর-পূর্বের রাজ্য মণিপুরের জনজাতি দাঙ্গার ছয় মাস হবে। গত ছয় মাসেও মণিপুরে লুট হওয়া অস্ত্রের ৭৫ শতাংশ উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। ৩ মে জাতি দাঙ্গার শুরুতেই ইম্ফল-পূর্ব, বিষ্ণুপুর এবং চূড়াইচাঁদপুর জেলায় পুলিশ ও আধা সেনার অস্ত্রাগারে লুটপাট চালিয়ে ছিল দুষ্কৃতীরা। প্রথম দুটি জেলা সংখ্যাগরিষ্ঠ মেইতেই সম্প্রদায় বহুল। চূড়াইচাঁদপুরে সংখ্যায় বেশি কুকিরা।
সরকারি সূত্রের খবর, এই তিন জেলার অস্ত্রাগার থেকে মোট ৫৬০০টি আগ্নেয়াস্ত্র লুট করা হয়। লুট হয় প্রায় সাড়ে ছয় লাখ রাউন্ড গুলি। এখনও পর্যন্ত দেড় হাজারের মতো অস্ত্র এবং ২০ হাজারের কাছাকাছি গুলি উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে।
এরমধ্যে পুলিশ ও আধা সেনার অভিযানে উদ্ধার হওয়া অস্ত্রও আছে। এছাড়া আছে স্বেচ্ছায় ফেরত দেওয়া অস্ত্র। লুট করার পর সেগুলি নিজেদের সম্প্রদায়ের মধ্য বিলি করেছিল মেইতেই ও কুকি - এই দুই শিবির। পরে পুলিশ, আধাসেনা ও সেনার যৌথ অভিযানের মুখে অনেকেই গ্রাম ছেড়ে আশ্রয় শিবিরে গিয়ে অস্ত্র ফিরিয়ে দেয়। রাজ্যের নানা জায়গায় সরকার অস্ত্র জমা দেওয়ার সেন্টার খুলেছিল। যদিও তাতে খুব একটা সাড়া মেলেনি।
বিগত কয়েকদিন এই রাজ্য আপাতভাবে শান্ত আছে। বড় ধরনের কোনও গোলমালের খবর পাওয়া যায়নি।
তবে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র এবং গোলাবারুদ এখনও উদ্ধার না হওয়ায় অশান্তির আশঙ্কা থেকে গেছে। জাতিদাঙ্গা থামলেও ভবিষ্যতে জঙ্গি নাশকতায় যে এই অস্ত্র ব্যবহার করা হবে না, সে বিষয়ে নিশ্চিত হতে পারছে না প্রশাসন।
প্রশাসনের একাংশের আশঙ্কা, লুট হওয়া অস্ত্রের অনেকটাই মিয়ানমারে পাচার করে দেওয়া হয়েছে। মণিপুরের সঙ্গে মিজোরামের দীর্ঘ সীমান্ত রয়েছে। মিয়ানমার এবং মণিপুরের বাসিন্দাদের একাংশ চীন-কুকি সম্প্রদায় ভুক্ত।
ইম্ফল-পূর্ব ও বিষ্ণুপুর জেলায় লুট হওয়া অস্ত্র পাচার হওয়ার সম্ভাবনা তুলনামূলকভাবে কম। সেখানে লুট হওয়া অস্ত্র রাজ্যের মধ্যেই রয়েছে, মনে করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
বেশ কয়েকবার ওই এলাকায় অভিযানে গিয়ে মহিলাদের বাধার মুখে পড়ে পুলিশ-সেনার যৌথবাহিনী। মেইতেই সম্প্রদায়ের মধ্যে মহিলারা তুলনামূলকভাবে বেশি সক্রিয়। তারাই এলাকা পাহারায় নেমেছেন। মহিলাদের প্রতিরোধ প্রাচীর ভেদ করতে এখনও তেমন শক্তি প্রয়োগ করেনি প্রশাসন।