আটকের প্রায় ১০ ঘণ্টা পর, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে, প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের বাসভবন ভাঙচুরের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। মির্জা ফখরুলকে আদালতে পাঠানোর পর তার জামিন আবেদন করা হয়। আদালত তার আবেদন অগ্রাহ্য করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
শনিবার বিএনপির মহাসমাবেশ কর্মসূচিতে সহিংসতার সময় প্রধান বিচারপতির বাসভবনে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। রবিবার (২৯ অক্টোবর) ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) উপকমিশনার (মিডিয়া) ফারুক হোসেন বলেছেন, প্রধান বিচারপতির বাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় রমনা থানায় দায়ের করা মামলায় বিএনপি মহাসচিবকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। পরে তিনি জানান, রবিবার রাত ৮টার দিকে মির্জা ফখরুলকে ঢাকার সিএমএম আদালতে হাজির করা হয়।
২৯ অক্টোবর (রবিবার) বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে আটক করে বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
ভয়েস অফ আমেরিকাকে বিএনপি মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান জানান, "...২৯ অক্টোবর সকাল ৯ টা ২০ মিনিট গুলশান ১৮ বাসা ৭১ নম্বর রোড থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর স্যার-কে নিয়ে গিয়েছেন। তিনি অসুস্থ, এই পরিস্থিতিতে নিয়ে যাওয়া খুবই দুঃখজনক।"
আমরা তার নিঃশর্ত মুক্তি চাই: শামারুহ মির্জা
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নিঃশর্ত মুক্তির দাবী জানিয়েছেন তার মেয়ে শামারুহ মির্জা।
রবিবার (২৯ অক্টোবর) ভয়েস অফ আমেরিকাকে পাঠানো বার্তায় তিনি বলেন, "আমার বাবা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে আজ সকালে বাংলাদেশ পুলিশ আটক করেছে। তারা ঢাকায় আমাদের বাসায় এসে তাকে তুলে নিয়ে যায়। আমরা তার নিঃশর্ত মুক্তি চাই!"
সরকারকে অবিলম্বে তার (মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর) অবস্থান সম্পর্কে জানানোর দাবী জানান শামারুহ মির্জা।
দলের মহাসচিবকে গ্রেফতারের প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান ভয়েস অফ আমেরিকাকে বলেন, "মহাসচিবকে বাসা থেকে গ্রেফতার ও নির্যাতন করা হয়েছে, তাকে সবাই চেনেন, তিনি কোনো সন্ত্রাসী কার্যক্রমে কখনো জড়িত না। এমনকি সহায়তাও করেন না। স্বরাষ্টমন্ত্রীর কথায় বুঝলাম, তাকে সন্ত্রাসী কার্যক্রমের জন্য আসামি করা হয়েছে। তারা পুরো ব্যাপারটিকে সন্ত্রাসী কার্যক্রম হিসেবে দেখাচ্ছে তারা।"
সহিংসতার দায় বিএনপির নেতারা এড়াতে পারবেন না: আসাদুজ্জামান খান কামাল
বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, ২৮ অক্টোবরের সহিংসতার দায় বিএনপির নেতারা এড়াতে পারবেন না। রবিবার সচিবালয়ে মন্ত্রীর দপ্তরে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। আসাদুজ্জামান খান বলেন, হামলার ঘটনায় মামলা হবে।
বিএনপি নেতাদের গ্রেপ্তার প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যখন সহিংসতা চলছিল তখন দলের সিনিয়র নেতারা মিটিং করছিলেন। তাদের ডিএমপি কমিশনার বার বার জিজ্ঞেস করছিলেন, তাদের মহাসমাবেশের সীমানা কতদূর হবে। তারা জনিয়েছিলেন, নাইটিঙ্গেল মোড় পর্যন্ত।
তিনি প্রশ্ন করেন, "যে সহিংসতা হয়েছে সেটির দায় কি বিএনপি নেতারা এড়াতে পারবেন?"