ভারতে স্কুলের পাঠ্যক্রম সংশোধনের উদ্দেশ্যে সোশ্যাল সায়েন্স-এর জন্য একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করেছে ন্যাশনাল কাউন্সিল অফ এডুকেশনাল রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং (এনসিইআরটি)। সেই কমিটি পাঠ্যবইতে 'ইন্ডিয়া'-নামটি 'ভারত'-এ পরিবর্তন করার সুপারিশ করেছে। একইসঙ্গে প্রাচীন ইতিহাসের পরিবর্তে পাঠ্যবইতে ক্লাসিক্যাল ইতিহাস (গুপ্তযুগ) রাখার সুপারিশ করা হয়েছে। ২৫ অক্টোবর, বুধবার এমনটাই জানিয়েছেন কমিটির চেয়ারপার্সন সিআই আইস্যাক।
এর আগে সিলেবাস থেকে বাদ পড়েছে মুঘল যুগ, ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে মৌলানা আবুল কালাম আজাদের ভূমিকা, ধর্মনিরপেক্ষতা, চার্লস ডারউইনের বিবর্তনবাদ। এবার সেই তালিকায় নবতম সংযোজন ‘ইন্ডিয়া’। পাঠ্যবইয়ে 'ইন্ডিয়া'র পরিবর্তে 'ভারত' করার সুপারিশ নিয়ে ফের বিতর্কের মুখে এনসিইআরটি।
এনসিইআরটি-র পরবর্তী সংস্করণে বইয়ের নাম পরিবর্তন করা হবে। এনসিইআরটি কমিটি সমস্ত স্কুলের পাঠ্যবইতে 'ইন্ডিয়া'-কে 'ভারত' করার সুপারিশ করেছে। এই নাম পরিবর্তন প্রসঙ্গে কমিটির চেয়ারপার্সন জানান, ভারত অনেক পুরনো নাম। ৭০০০ বছরের পুরনো বিষ্ণু পুরাণের মতো প্রাচীন ইতিহাসেও 'ভারত' নামটির উল্লেখ রয়েছে। আর 'ইন্ডিয়া' নামটি ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির প্রতিষ্ঠার পরই বেশি ব্যবহৃত হয়েছে। তাই পড়ুয়াদের পাঠ্যবইয়ে 'ভারত' নামটি ব্যবহারের সুপারিশ করছে কমিটি।
গত সেপ্টেম্বর মাসে ভারতে অনুষ্ঠিত হয়েছে জি-২০ সম্মেলন। অধিবেশন শুরু হওয়ার পরেই বিভিন্ন সরকারি আমন্ত্রণপত্রে দেশের নাম ‘ইন্ডিয়া’-র পরিবর্তে ‘ভারত’ লেখায় বিতর্ক তৈরি হয়। প্রধানমন্ত্রীর পোডিয়ামে ‘ইন্ডিয়া’-র পরিবর্তে লেখা হয় ‘ভারত’। দেশের নাম বিজেপি সরকার বদলে ফেলতে চাইছে কি না তা নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়ে যায় বিভিন্ন মহলে। দেশে ২৯টি বিজেপি বিরোধী দলের বিরোধী জোটের নাম ‘ইন্ডিয়া’ হওয়ায় বিতর্ক আরও দানা বাঁধে। এই আবহেই এবার স্কুলের পাঠ্য বইতে 'ইন্ডিয়া'-র পরিবর্তে 'ভারত' রাখার সুপারিশ করেছে এনসিইআরটি। প্রসঙ্গত, জাতীয় শিক্ষানীতি ২০২০ অনুযায়ী এনসিইআরটি স্কুলে পাঠ্যবই পর্যালোচনা করছে। যার জন্য সম্প্রতি ১৯ সদস্যের কমিটি গঠন করেছে এনসিইআরটি।