উত্তর-পূর্ব ভারতের মিজোরামে বিধানসভা নির্বাচনের প্রচারে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মঞ্চে দাঁড়াতে রাজি নন মুখ্যমন্ত্রী

মিজোরামে একটি সমাবেশ; ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রী জোরামথাঙ্গা।

আগামী নভেম্বর মাসে ভারতে পাঁচ রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। সেই ভোটের প্রচারে আগামী ৭ নভেম্বর উত্তর-পূর্ব ভারতের মিজোরামে যাবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তার আগেই মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রী জোরামথাঙ্গা জানিয়ে দিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে এক মঞ্চে দাঁড়িয়ে সভা করবেন না তিনি।

মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষণায় বিধানসভা ভোটের আগে মিজোরামের রাজ্য রাজনীতিতে আলোড়ন পরে গেছে। এই রাজ্যে জোরামথাঙ্গা-র দল মিজো ন্যাশনাল ফ্রন্টের শরিক বিজেপি। আবার জাতীয় স্তরে আঞ্চলিক দল মিজো ন্যাশনাল ফ্রন্ট বিজেপির নেতৃত্বাধীন এনডিএ-তে আছে। মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষণায় অস্বস্তিতে পড়েছে উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্যটির বিজেপি শিবির। প্রধানমন্ত্রী মোদীর সভায় লোক সমাগম করাও এর ফলে কঠিন হতে পারে বলে মনে করছে মিজোরামের বিজেপির দলের একাংশ। ২০১৭-থেকে মিজোরামে এমএনএফ এবং বিজেপির জোট সরকার চলছে।

মিজেরামের মুখ্যমন্ত্রী বিবিসি-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেছেন, মণিপুর পরিস্থিতির কারণেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। তার বক্তব্য, মিজোদের সঙ্গে মণিপুরের কুকিদের জাতিগত সম্পর্ক রয়েছে। তার কথায় মণিপুরে যা হয়েছে তা মিজোরামের উপরও আঘাত। মিজোরামের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ খ্রিস্টান।

নিরাপত্তার কারণে কয়েক হাজার কুকি সম্প্রদায়ের মানুষ বর্তমানে মিজোরামের ত্রাণ শিবিরে আছেন। মিয়ানমার-এর বহু উদ্বাস্তুকেও স্থান দিয়েছে মিজোরাম। জোরামথাঙ্গা বলেন, "আমরা উদ্বাস্তুদের অস্ত্র দিচ্ছি না। কিন্তু খাবার, বাসস্থানের ব্যবস্থা করা নৈতিক কর্তব্য।"

জোরামথাঙ্গা বলেন, "১৯৭১-এ বাংলাদেশের মুক্তি আন্দোলনের সময় আমি পূর্ব পাকিস্তানে ছিলাম। তখনও আমরা পূর্ব পাকিস্তানের উদ্বাস্তুদের আস্তানা দিয়েছি।"

মিজো ন্যাশনাল ফ্রন্ট-এর প্রধানমন্ত্রী তথা বিজেপিকে এড়িয়ে প্রচারের সিদ্ধান্ত নিয়ে রাজ্য-রাজনীতিতে নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। বিজেপি শিবির এখনও জোরামথাঙ্গার সিদ্ধান্ত নিয়ে মন্তব্য করেনি।

অন্যদিকে, কংগ্রেস-সহ অন্যান্য দলগুলি প্রশ্ন তুলেছে কেন এমএনএফ বিজেপির নেতৃত্বাধীন এনডিএ ছেড়ে বেরিয়ে আসছে না। জোরামথাঙ্গা বা তার দল এই ব্যাপারে নীরব।