লিঙ্গ বৈষম্যের প্রতিবাদে আইসল্যান্ডের নারীরা মঙ্গলবার ২৪ ঘণ্টা ধর্মঘট পালন করেছেন। তাদের সঙ্গে যোগ দেন দেশটির প্রধানমন্ত্রীও। তিনি বলেন, দেশে এবং দেশের বাইরে নারী-পুরুষের সম-অধিকার আদায়ের বিষয়টি নিয়ে সংগ্রাম অত্যন্ত ধীরগতিতে আগাচ্ছে।
বেশিরভাগ নারী কর্মী নিজ নিজ বাড়িতে থাকায় এই ক্ষুদ্র দ্বীপ রাষ্ট্রের স্কুল ও লাইব্রেরিগুলো হয় বন্ধ ছিল নয়তো অল্প কয়েক ঘণ্টার জন্য খোলা ছিল। হাসপাতালগুলো বলছে, তারা শুধু জরুরী সেবা দিয়েছে।
এই বিক্ষোভের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী ক্যাটরিন জাকোবসদোত্তির জানান, তিনি মঙ্গলবার কাজে যাবেন না।
রাস ওয়ান পাবলিক রেডিও স্টেশনকে তিনি বলেন, “সারা বিশ্বের দিকে লক্ষ্য করলে ধারণা হয়, সম-অধিকার অর্জনে ৩০০ বছরও লেগে যেতে পারে।”
পুরুষদের সঙ্গে তুলনায় বৈষম্যমূলক বেতন ও লিঙ্গ ভিত্তিক সহিংসতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে এই ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়। আয়োজকরা জানান, এর অন্যতম উদ্দেশ্য ছিল শিশুর যত্ন নেওয়ার মতো কাজগুলোর দিকে সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করা, যেগুলো থেকে কোনো উপার্জন নেই এবং সাধারণত নারীদের ওপরই এ ধরনের কাজের দায়িত্ব আসে।
নারী-পুরুষের সম-অধিকার প্রতিষ্ঠার দিক দিয়ে আইসল্যান্ডকে বিশ্বের সবচেয়ে প্রগতিশীল দেশগুলোর অন্যতম হিসেবে বিবেচনা করা হয়। দেশটি টানা ১৪ বছর ধরে বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের জেনডার গ্যাপ ইনডেক্সের শীর্ষস্থানে অবস্থান করছে।
তবে স্ট্যাটিসটিকস আইসল্যান্ডের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, কিছু কিছু শিল্প ও পেশায় নারীরা পুরুষদের চেয়ে ২০ শতাংশ কম আয় করছেন।
আইসল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় জানা গেছে, আইসল্যান্ডের ৪০ শতাংশ নারী তাদের জীবদ্দশায় অন্তত একবার লিঙ্গভিত্তিক ও যৌন সহিংসতার শিকার হন।
মঙ্গলবারের ধর্মঘটের শ্লোগান ছিল, “এটাকেই কি আপনারা সমঅধিকার বলেন?” এতে অংশ নেন আইসল্যান্ডের নারী ও পুরুষ ব্যতীত অন্যান্য লিঙ্গের ব্যক্তিরা। এটা ছিল ১৯৭৫ সালে নারীদের এক বিক্ষোভের পর প্রথম, পূর্ণ-দিবস ধর্মঘটের ঘটনা।