চাঁদে ঘুমিয়ে থাকা ভারতের চন্দ্রযান-৩-এর ল্যান্ডার, রোভারকে ঘিরে ধরছে অগুন্তি তারা

চাঁদে ঘুমিয়ে থাকা ভারতের চন্দ্রযান-৩-এর ল্যান্ডার, রোভারকে ঘিরে ধরছে অগুন্তি তারা।

ভারতের চন্দ্রযান ৩-এর ল্যান্ডার ও রোভার বিক্রম ও প্রজ্ঞানকে পাকাপাকিভাবে ঘুম পাড়িয়ে দিয়েছে ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরো। চাঁদের দক্ষিণ পিঠে আঁধার নেমেছে। সেখানে প্রচণ্ড ঠান্ডাও। এখন শীতঘুমেই থাকবে চন্দ্রযানের ল্যান্ডার ও রোভার। কিন্তু রাত গভীর হলেই তাদের ঘিরে ধরছে ঝাঁকে ঝাঁকে তারা।

ভারতের মণিপাল সেন্টার ফর ন্যাচারাল সায়েন্স-এর ডিরেক্টর অধ্যাপক ডা. পি শ্রীকুমার জানাচ্ছেন, চাঁদের মাটিতে বিপদ বাড়ছে বিক্রম, প্রজ্ঞানের। তিনি বলছেন, চাঁদে পৃথিবীর মতো বায়ুমণ্ডল নেই। তাই মহাজাগতিক রশ্মিরা সরাসরি চাঁদের মাটিতে আছড়ে পড়ে। সম্প্রতি শয়ে শয়ে ধূমকেতু চাঁদের চারপাশে আনাগোনা করছে। তারা আছড়ে পড়ছে চন্দ্রপৃষ্ঠে। খোলা আকাশের নীচেই গভীর ঘুমে রয়েছে বিক্রম, প্রজ্ঞান। কাজেই মহাজাগতিক রশ্মির সামান্যও যদি তাদের উপর পড়ে তাহলে সঙ্গে সঙ্গে সমস্ত সফটওয়্যার নষ্ট হয়ে যাবে।

রাত গভীর হলেই চাঁদে হানা দিচ্ছে ধূমকেতুরা। তাদের দাপটে চাঁদের ধুলো বা রেগোলিথ উত্তেজিত হয়ে উঠেছে। পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল আমাদের অনেক রকমের ঝড়, ঝাপটার হাত থেকে বাঁচায়। সূর্যের করোনা বা বায়ুমণ্ডল থেকে ধেয়ে আসে সৌরবায়ু, সৌরঝড়, করোনাল মাস ইজেকশান। বায়ুমণ্ডল না থাকলে যাদের দাপটে মানুষের টিকে থাকা কোনওভাবেই সম্ভব হত না। মহাজাগতিক শত্রুদের হাত থেকে পৃথিবীকে বাঁচায় শক্তিশালী চৌম্বক ক্ষেত্রের আবরণী। চাঁদে বায়ুমণ্ডল বা চৌম্বক ক্ষেত্র কিছুই নেই। তাই উল্কা, ধূমকেতু বা মহাজাগতিক রশ্মিরা চাঁদের মাটিতে সরাসরি হামলা চালায়।

অধ্যাপক শ্রীকুমার জানিয়েছেন, সূর্যের অতিবেগুনী রশ্মি বা অন্য কোনও মহাজাগতিক রশ্মি চাঁদের মাটিতে সরাসরি আছড়ে পড়ার সময় সূক্ষাতিসূক্ষ ধুলিকণাগুলিকে আঘাত করে। ফলে এগুলির মধ্যে বিদ্যুৎ তরঙ্গ তৈরি হয়। গরম হলে স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরার জন্য ধুলিকণাগুলো তড়িৎ ঋণাত্মক কণা বা ইলেকট্রন ছাড়তে থাকে। তাপমাত্রার ফারাক এবং মহাজাগতিক রশ্মির প্রভাবে বিরাট এলাকা জুড়ে ধুলোর ঝড় শুরু হয়। তেমন কিছু শুরু হলে বিপদ আরও বাড়বে বিক্রম, প্রজ্ঞানের।