গত ৭ অক্টোবর ইসরাইল-ফিলিস্তিন সংঘাত নতুন করে শুরু হওয়ার পর পরই প্রতিক্রিয়া দিয়েছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। নিজের এক্স হ্যান্ডেল (পূর্ববর্তী ট্যুইটার)-এ জানিয়েছিলেন, এই লড়াইয়ে ভারত পুরোপুরি ইসরাইল-এর পাশে আছে। ইসরাইল-এর প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে নরেন্দ্র মোদীর ফোনে কথাও হয়।
সরকারিভাবে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রক বলেছে, ফিলিস্তিন নিয়ে নয়া দিল্লির অবস্থানের কোনও পরিবর্তন হয়নি। ভারত একটি স্বাধীন, সবল ফিলিস্তিন-এর পক্ষে। পরারাষ্ট্র মন্ত্রকের মুখপাত্র অরবিন্দম বাগচি বলেছেন, "ইসরাইল-ফিলিস্তিন সংঘাতে ভারতের নীতি দীর্ঘস্থায়ী এবং ধারাবাহিক। ভারত সর্বদাই ইসরাইল-এর পাশাপাশি নিরাপদ ও স্বীকৃত সীমানার মধ্যে বসবাসকারী একটি সার্বভৌম, স্বাধীন এবং কার্যকর ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পক্ষে। এজন্য যুদ্ধ থামিয়ে পুনরায় সরাসরি আলোচনা শুরু করার পক্ষে ভারত।"
পাঁচ দিন আগে প্রধানমন্ত্রী মোদীর বক্তব্য ছিল কিছুটা ভিন্ন। তিনি সরাসরি ইসরাইলকে সমর্থনের কথা বলেছিলেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রক প্রধানমন্ত্রী মোদীর কথার ব্যাখ্যা দিয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রকের মুখপাত্র বলেন, "প্রধানমন্ত্রী আসলে হামাসের সন্ত্রাসবাদী হামলার নিন্দা করেছিলেন। সেই অবস্থান থেকে ভারত সরেনি।"
ইতিমধ্যে পররাষ্ট্র মন্ত্রকের প্রতিক্রিয়া নিয়ে জাতীয় রাজনীতিতে বিজেপি বিরোধীদের আক্রমণের মুখে পড়েছে। বিরোধীদের মতে, প্রধানমন্ত্রীর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া ছিল দেশে পাঁচ রাজ্যের আসন্ন বিধানসভা ভোট। নির্বাচনে মেরুকরণের লক্ষ্যে তিনি দ্রুত হামাসের হামলার তীব্র নিন্দা করেছিলেন। কোনও রকম যুদ্ধ বিরোধী প্রতিক্রিয়া দেননি। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে ভারত যেমন কোনও পক্ষই না নিয়ে যুদ্ধ থামানোর কথা বলে চলেছে, ইসরাইল-ফিলিস্তিন সংঘাতের ক্ষেত্রে সে কথা বলেননি প্রধানমন্ত্রী।
অন্যদিকে, গত সোমবার ৯ অক্টোবর কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটি তাদের বিবৃতিতে ফিলিস্তিন প্রশ্নে ভারতের পররাষ্ট্রনীতি মেনেই যুদ্ধ থামানোর কথা বলে। সেই সঙ্গে ফিলিস্তিন-এর প্রতি সমর্থনও জানিয়ে দেয়।
কিন্তু কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির অবস্থানকে গত তিন দিন ধরে বিজেপি শিবির লাগাতার আক্রমণ করেছে সংখ্যালঘু তোষণের অভিযোগে। কংগ্রেস দলের অভ্যন্তরেও এই বিবৃতি দেওয়া নিয়ে সংশয় ছিল। দলের প্রবীণ নেতাদের একাংশ সতর্ক করেছিলেন, হামাসের হামলার কড়া নিন্দা না করলে বিজেপি, তোষণের অভিযোগ তুলতে পারে। বাস্তবে সেটাই শুরু হয়। অসমের বিজেপি সরকারের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা কংগ্রেসকে পাকিস্তানের সঙ্গে তুলনা করেন।
যুক্তরাষ্ট্র ১৯৯৭ সালে হামাসকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসাবে চিহ্নিত করে। ইসরাইল, মিশর, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং জাপানও হামাসকে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসেবে বিবেচনা করে।