ভারতে আগামী লোকসভা নির্বাচনে জিতে কংগ্রেস কেন্দ্রে সরকার গঠন করলে সংসদে, বিধানসভায় মহিলা সংরক্ষণ চালু করে দেবে। জনগণনার জন্য অপেক্ষা করবে না। এছাড়া মহিলা সংরক্ষণে ওবিসি কোটাও চালু করবে কংগ্রেস। সেই সঙ্গে চাকরি, শিক্ষায় ওবিসি কোটা বৃদ্ধি করা হবে।
সোমবার ৯ অক্টোবর ভারতের রাজধানী দিল্লিতে কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে প্রারম্ভিক ভাষণে এমনটাই জানালেন কংগ্রেসের সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়্গে। খাড়্গে বলেন, এসবই পাঁচ রাজ্যের আসন্ন বিধানসভা এবং লোকসভার নির্বাচনে কংগ্রেস প্রতিশ্রুতি দেবে। এখন থেকেই এ বিষয়ে দলকে প্রচারে ঝাঁপিয়ে পড়ার পরামর্শ দেন কংগ্রেস সভাপতি।
তিনি বলেন, "মহিলা সংরক্ষণ এবং কাস্ট সেন্সাস নিয়ে বিজেপি বিপাকে পড়েছে। তাই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ মানুষকে ভুল বোঝাতে শুরু করেছেন। পাল্টা প্রচারে কংগ্রেসকে প্রকত সত্য তুলে ধরতে হবে।"
পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা ভোটের নির্ঘণ্ট সোমবার দুপুরেই ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে পাঁচ রাজ্যের ভোটের কৌশল নিয়েও কথা হবে। বৈঠকে কথা হবে পাঁচ রাজ্যে আম আদমি পার্টির সঙ্গে নির্বাচনী বোঝাপড়া নিয়েও।
কাস্ট সেন্সাস নিয়ে দলের উদয়পুর কনক্লেভ এবং গত সেপ্টেম্বর মাসে হায়দরাবাদে ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকেই সিদ্ধান্ত হয় কংগ্রেস ক্ষমতায় এলে গোটা দেশে কাস্ট সেন্সাস করাবে। রাহুল গান্ধী স্লোগান তুলেছেন, ‘জিতনি আবাদি উতনা হক।’ এই স্লোগান নিয়ে রাহুলকে তীব্র আক্রমণ করেছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী।
অন্যদিকে দলের অভ্যন্তরে এই নিয়ে প্রশ্ন, সংশয় আছে। সোমবারের বৈঠকে খাড়্গে সেই সংশয় দূর করার চেষ্টা করেন। তিনি বলেন, "গরিব মানুষকে যদি ন্যায্য সরকারি সুবিধা দিতে হয় তাহলে কাস্ট সেন্সাস জরুরি। দলকে এই কথা দেশবাসীকে বোঝাতে হবে। তাতেই বিজেপি বিপাকে পড়বে।" খাড়্গে ইঙ্গিত দেন, কাস্ট সেন্সাস ইন্ডিয়া জোটের অন্যতম ইস্যু হতে চলেছে।
অতীতে কংগ্রেস জাত ভিত্তিক রাজনীতির তীব্র বিরোধিতা করেছে। বিশ্বনাথ প্রতাপ সিং প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন ওবিসি কোটা চালু করেন। কেন্দ্রীয় সরকারে চাকরি ও শিক্ষায় ২৭ শতাংশ পদ/আসন ওবিসি-দের জন্য সংরক্ষণ করেন। রাজীব গান্ধী সেই সময়ে কংগ্রেস সভাপতি এবং দেশের বিরোধী দলনেতা ছিলেন। তিনি দলকে বিশ্বনাথ প্রতাপের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামতে বলেন। ওবিসি কোটার বিরোধিতা করে কংগ্রেস।
তার আগে ইন্দিরা গান্ধীও ওবিসি সংরক্ষণ চাননি। তার কথা ছিল, ‘না জাত পর, না পাত পর রাজনীতি করনি হ্যায়।’ বর্তমানে সনিয়া গান্ধী, রাহুল গান্ধীই জাতিসমীক্ষা নিয়ে এখন সবচেয়ে সরব। রাহুল গান্ধী মনে করছেন, এই পথে চলে এখন উত্তর ও দক্ষিণ ভারতের আঞ্চলিক দলগুলির সঙ্গে কংগ্রেসের সহজে সখ্য হতে পারে। আর ক্রমে কংগ্রেস তার এসসি, এসটি এবং ওবিসি ভোটব্যাঙ্ক ফিরে পেতে পারে। খাড়্গে আজ রাহুলের কথাও বারে বারে উল্লেখ করেন। বলেন, রাহুল গান্ধীর স্লোগান এখন বিরোধী নেতারাও বলছেন।