ইসরাইল সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে গাজার হামাস জঙ্গীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে। ফলে ইসরাইলে হামাসের সর্বসাম্প্রতিক হামলার জবাবে বড় মাপের ইসরাইলি সেনা অভিযানের ক্ষেত্র তৈরি হলো।
শনিবার সে দেশের প্রধানমন্ত্রী বিনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছিলেন যে তার দেশ হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে। কিন্তু এখন ইসরাইলের মন্ত্রীসভার সিদ্ধান্ত আনুষ্ঠানিকভাবেই যুদ্ধের ঘোষণা।
ইসরাইলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, ইসরাইলে হামাসের আকস্মিক হামলার একদিন পরও দেশটিতে অবস্থানরত হামাস যোদ্ধাদের নিঃশেষে সরিয়ে দিতে রবিবার তারা কাজ করেছে। গাজা উপত্যকাভিত্তিক এই ফিলিস্তিনি জঙ্গি গোষ্ঠীর আকস্মিক হামলার পর, রবিবার ইসরাইলি সামরিক বাহিনীর এক কর্মকর্তা বলেছেন, “শত শত সন্ত্রাসী” নিহত ও আটক হয়েছে।
গাজা উপত্যকার নিকটবর্তী দক্ষিণাঞ্চলের বেশ কয়েকটি স্থানে লড়াই করছে বলে জানিয়েছে ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনী। হামাস শনিবার সেই এলাকা থেকেই হামলা চালিয়েছিলো। অবস্থানগুলোর মধ্যে রয়েছে ইসরাইলি শহর ডেরট। শনিবার প্রায় এক হাজার হামাস যোদ্ধা ইসরাইলে প্রবেশ করেছে বলে আইডিএফ-এর মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট কর্নেল জোনাথন কনরিকাস সিএনএন-কে জানিয়েছেন।
ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অপহৃত ইসরাইলি নাগরিকদের নিরাপত্তা ও অবস্থান সম্পর্কে তথ্য জানার জন্য ইসরাইল মিশরের সাহায্য চেয়েছে। হামাস এবং ইসরাইলি সামরিক বাহিনী, উভয়ই শনিবার জানিয়েছে যে হামাসের হাতে ইসরাইলি সৈন্য ও বেসামরিক নাগরিক অপহৃত হয়েছে। তবে, তাদের সঠিক সংখ্যা জানা যায়নি।
রবিবার গাজা উপত্যকায় আবার প্রতিশোধমূলক বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরাইল।আইডিএফ জানিয়েছে, তাদের বাহিনী এখন পর্যন্ত যেসব লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হেনেছে, সেগুলোর মধ্যে রয়েছে হামাসের একটি গোয়েন্দা সদর দপ্তর, একটি অস্ত্র উৎপাদন কেন্দ্র এবং দুটি ব্যাংক।
এদিকে, হামাস রাতভর তাদের হামলা অব্যাহত রেখেছে। তেল আবিব-সহ বেশ কয়েকটি শহরে রাতে রকেট নিক্ষেপ করেছে হামাস। গাজা থেকে স্থল, সমুদ্র ও আকাশপথে ইসরাইলে অনুপ্রবেশকারী যোদ্ধা ও হামাসের রকেট হামলায় কমপক্ষে ২৫০ জন ইসরায়েলি নিহত হয়েছে; আর, আহত হয়েছে এক হাজারের বেশি মানুষ। গাজায় ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানিয়েছে, হামলায় ২০ শিশুসহ অন্তত ২৫৬ জন নিহত হয়েছে; আহত হয়েছে ১ হাজার ৭৮৮ জন,এর মধ্যে ১২১ জন শিশু রয়েছে।
রবিবার লেবানন সীমান্তেও হিজবুল্লাহ জঙ্গিদের সঙ্গে ইসরাইলি সেনাবাহিনীর গুলি বিনিময় হয়েছে। এই ঘটনা, পরিস্থিতিকে বৃহত্তর সংঘাতের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। লেবানন এবং ইসরাইল পরস্পরকে শত্রু রাষ্ট্র হিসাবে বিবেচনা করে। তবে, তাদের মধ্যে ২০০৬ সালের একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি সম্পাদিত হয়। তারপরও, লেবাননের ভূখণ্ড থেকে মাঝে-মধ্যে ইসরাইলে ছোটখাটো রকেট হামলা চালানো হয়; আর ইসরাইল এগুলোর প্রতিশোধমূলক জবাব দেয়।
জেরুজালেমের লিন্ডা গ্রাডস্টেইন এই প্রতিবেদন তৈরিতে সহায়তা করেছেন; প্রতিবেদনের কিছু তথ্য এপি এবং এএফপি থেকে নেয়া হয়েছে।