দিল্লি পুলিশের অভিযোগ, ভারতে অস্থিরতা ও নির্বাচন প্রভাবিত করতে নিউজক্লিক পোর্টালে অর্থ লগ্নি করে চীন

দিল্লি পুলিশের অভিযোগ, ভারতে অস্থিরতা ও নির্বাচন প্রভাবিত করতে নিউজক্লিক পোর্টালে অর্থ লগ্নি করে চীন।

গত ১২ অগাস্ট ভারতের দিল্লির একটি থানায় ইংরেজি নিউজ পোর্টাল নিউজক্লিক-র সম্পাদক প্রবীর পুরকায়স্থ এবং সংস্থার হিউম্যান রিসোর্স বিভাগের প্রধান অমিত চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করে পুলিশ। ৩ অক্টোবর এই দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়।

আদালতের হস্তক্ষেপে শুক্রবার ৬ অক্টোবর দিল্লি পুলিশ ধৃত সম্পাদক প্রবীর পুরকায়স্থ এবং সংস্থার হিউম্যান রিসোর্স বিভাগের প্রধান অমিত চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে দায়ের করা এফআইআর-র কপি তাদের আইনজীবীদের হাতে তুলে দিয়েছে। আদালত তাদের সাত দিন পুলিশ হেফাজতে রাখার অনুমতি দিয়েছে। শুক্রবারই তাদের জামিনের আবেদন নিয়ে দিল্লি হাইকোর্টে শুনানি হওয়ার কথা।

দিল্লি পুলিশ এফআইআর-এ সংবাদ পোর্টালটির বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ এনেছে। বলা হয়েছে, ২০১৯-এ লোকসভা নির্বাচনকে প্রভাবিত করা এবং ভারতের অখণ্ডতা বিনষ্ট করার উদ্দেশে ওই সংস্থায় অর্থ লগ্নি করেছিল চীন সরকারের মিডিয়া সেল। সেই অর্থ আসে যুক্তরাষ্ট্রের এক ধনকুবের হাত ঘুরে। নেভিল রয় সিঙ্ঘম নামে ওই ব্যক্তি বর্তমানে চীনের সাংহাই শহরে বসবাস করছেন। এফআইআর-এ তার নামও আছে।

দিল্লি পু্লিশ এফআইআর-এ সমাজকর্মী ও আইনজীবী তিস্তা সেতলবাদের নামও উল্লেখ করেছে। বলা হয়েছে, ভারতে ব্যবসা করা চীনের কিছু কোম্পানির তৈরি ভুয়ো সংস্থার হাত দিয়ে অর্থ লেনদেন হয়েছে। বিনিময়ে পেইড নিউজ বা অর্থের বিনিময়ে খবর প্রচার করা হয়েছে। খবরগুলি মূলত ভারত সরকারের নীতি, পদক্ষেপের সমালোচনামূলক। নিউজক্লিক সম্পাদক প্রবীর পুরকায়স্থের বিরুদ্ধে ভারতের অখণ্ডতা ও ঐক্য বিনষ্ট করার অভিযোগ এনেছে দিল্লি পুলিশ। ওই সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে বেআইনি কার্যকলাপ প্রতিরোধ আইন বা ইউএপিএ-র ধারায় মামলা করা হয়েছে। পুলিশের অভিযোগ, ধৃতরা কাশ্মীর ও অরুণাচল প্রদেশের অখণ্ডতা সংক্রান্ত বিষয়ে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিলেন।

প্রবীর পুরকায়স্থ ও অমিত চক্রবর্তীর জামিনের আবেদন সোমবার অক্টোবর শুনবে দিল্লি হাইকোর্ট। শুক্রবার ভারতীয় সময় সকালে দিল্লি হাইকোর্টে এই আর্জির প্রাথমিক শুনানি হয়েছে। আইনজীবী কপিল সিব্বল দ্রুত শুনানির আর্জি জানালে আদালত সম্মত হয়। মামলায় ধৃতদের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া এফআইআর বাতিলের দাবিও জানানো হয়েছে।

ইতিমধ্যেই ভারতে সাংবাদিকদের একাধিক সংগঠন এই গ্রেফতারির বিরুদ্ধে সরব হয়েছে। সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে ইউএপিএ-র মতো আইনের ধারায় মামলা করা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে বিভিন্ন মহল থেকে। ওই ধারায় সাধারণত বিচ্ছিন্নতাবাদী, জঙ্গি এবং দেশ বিরোধী নাশকতা, ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। সাংবাদিক সংগঠনগুলি এই ব্যাপারে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের হস্তক্ষেপ দাবি করেছে।