ইন্ডিয়া জোটের শরিক আপ-এর নেতা সঞ্জয়ের গ্রেফতারির পর কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব শেষ পর্যন্ত কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়েছে। এরপরেই দিল্লি ও পাঞ্জাবে দুই দলের আসন সমঝোতা নিয়ে আলোচনা একপ্রকার থমকে গেছে।
আজ থেকে দেড় বছর আগে দিল্লি প্রদেশ কংগ্রেস উপ-রাজ্যপালের কাছে মদের ডিলারশিপ বণ্টন দুর্নীতি নিয়ে অরবিন্দ কেজরিওয়ালের সরকারের বিরুদ্ধে নালিশ ঠুকেছিল। পথে নেমে আন্দোলনও শুরু করে। পরে বিজেপি ইস্যুটি নিয়ে নেয়।
সঞ্জয় সিংয়ের গ্রেফতারিতে কংগ্রেসের বাড়তি অস্বস্তির কারণ, আপ-র এই সাংসদই দিল্লি ও পাঞ্জাবে দুই দলের আসন সমঝোতা নিয়ে আলোচনা চালাচ্ছিলেন। এই নেতা আপ-র নীতি নির্ধারকদের একজন এবং কেজরিওয়ালের অতি ঘনিষ্ট বলে পরিচিত। মণীশ সিসোদিয়াকে ইডি-সিবিআই গ্রেফতার করার পর সঞ্জয় ছিলেন কেজরিওয়ালের অঘোষিত দলীয় উপদেষ্টা। বিরোধী দলগুলির সঙ্গেও আপ-র এই নেতার ভালো সম্পর্ক। তার চেষ্টাতেই মাস দুই আগে থেকে আপ-কংগ্রেস সম্পর্কের বরফ গলা শুরু হয়।
বৃহস্পতিবার ৫ অক্টোবর রাজধানী দিল্লির হাউস অ্যাভিনিউ কোর্ট আপ সাংসদকে ইডির হেফাজতে দেওয়ার পর কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক কেসি বেণুগোপাল মুখ খোলেন। আদালতের নির্দেশ এবং মামলার কাগজপত্র থেকে স্পষ্ট হয়ে যায়, সঞ্জয়কে আপাতত ইডির হেফাজতে থাকতে হবে।
সঞ্জয়ের গ্রেফতারিকে বিজেপির প্রতিহিংসা বলে উল্লেখ করে বেণুগোপাল বৃহস্পতিবার রাতে প্রতিক্রিয়া দেন। সেই সঙ্গে এই ইস্যুতে কংগ্রেসকে পাশে পেতে আপ-র উপর শর্ত চাপান কংগ্রেসের এই সাধারণ সম্পাদক। পাঞ্জাবে কংগ্রেস বিধায়ক সুখপাল খাইরার বিরুদ্ধে সেখানকার আপ সরকারের মামলার প্রসঙ্গ তোলেন বেণুগোপাল।
উল্লেখ্য, সুখপালকে পাঞ্জাবের আপ সরকারের পুলিশ মাদক চোরাচালান এবং বেআইনি পথে অর্থ লেনদেনের মামলায় গত সপ্তাহে গ্রেফতার করেছে। বেণুগোপাল সেই সিদ্ধান্তকেও প্রতিহিংসা বলে বর্ণনা করে কংগ্রেস বিধায়কের মুক্তি দাবি করেছেন। মন্তব্য করেন কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়্গেও। সুখপালের গ্রেফতারি নিয়ে তার বক্তব্য, "আপ সরকারের প্রতিহিংসা আমরা কিছুতেই মেনে নেব না।" পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত মান এই দাবি উড়িয়ে সাফ জানিয়ে দেন, মামলা প্রত্যাহারের প্রশ্ন নেই। কংগ্রেস বিধায়ক মাদক পাচারের সংঘঠিত অপরাধে যুক্ত।
আপ ও কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্বের কড়া প্রতিক্রিয়া আদানপ্রদান জানাজানি হতেই দিল্লি ও পাঞ্জাবে দুই দলের নেতারা খোলাখুলি একে-অপরকে আক্রমণ শুরু করেন। দিল্লির সাতটি লোকসভা আসনেই প্রার্থী দেওয়ার পক্ষপাতী রাজধানীর কংগ্রেস। আপ-ও জানিয়ে দেন, তারাও একাই লড়তে আগ্রহী। পাঞ্জাবের ১৩টি আসন নিয়েও আপাতত আলোচনা চায় না কংগ্রেস। একই মনোভাব আপ-র। দলীয় বিধায়ককে মুক্তি না দেওয়া পর্যন্ত আসন নিয়ে আলোচনায় আগ্রহী নয় পাঞ্জাব কংগ্রেস।