নারী নিপীড়নের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য শান্তিতে নোবেল জিতলেন কারাবন্দী ইরানি সক্রিয় কর্মী নার্গিস মোহাম্মদী

বিশিষ্ট ইরানি মানবাধিকার কর্মী নার্গিস মোহাম্মদী (মাঝে) তেহরানে ইরানের নারী অধিকার বিষয়ক একটি সভায় যোগদানের সময় ইরানের নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী শিরিন এবাদির পাশে বসে আছেন। ২৭ আগস্ট, ২০০৭। ফাইল ছবি।

শুক্রবার কারাবন্দী ইরানি সক্রিয় কর্মী নার্গেস মোহাম্মদী নারী অধিকার ও গণতন্ত্রের জন্য এবং মৃত্যুদণ্ডের বিরুদ্ধে তার অক্লান্ত প্রচারণার স্বীকৃতিস্বরূপ নোবেল শান্তি পুরস্কার জিতেছেন।

ইরানি কর্তৃপক্ষ তাকে বহুবার গ্রেপ্তার করার পরেও এবং বছরের পর বছর কারাবন্দী থাকা সত্ত্বেও মোহাম্মদী (৫১) তার সক্রিয়তা অব্যাহত রেখেছেন।

অসলোতে পুরস্কার ঘোষণার সময় নরওয়েজিয়ান নোবেল কমিটির চেয়ারম্যান বেরিট রেইস-অ্যান্ডারসন বলেছেন, “এই পুরস্কার ইরানের অবিসংবাদিত নেতা নার্গিস মোহাম্মদী এবং ইরানের সমগ্র আন্দোলন সংক্রান্ত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কাজের প্রথম এবং প্রধানতম স্বীকৃতি।”

রেইস অ্যান্ডারসন জানান, মোহাম্মদী তেরোবার কারাবরণ করেছেন এবং পাঁচবার দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন। তাকে মোট একত্রিশ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।

২০০৩ সালে মানবাধিকার কর্মী শিরিন এবাদির পর মোহাম্মদী হলেন ঊনিশতম নারী এবং দ্বিতীয় ইরানি নারী যিনি শান্তিতে নোবেল জিতলেন।

পুলিশ হেফাজতে মাহসা আমিনির (২২) মৃত্যুর ঘটনায় সাম্প্রতিক বিক্ষোভের কারণে মোহাম্মদীকে কারান্তরীণ করা হয়। এই বিক্ষোভ ইরানের ধর্মতন্ত্রের জন্য সবচেয়ে তীব্র চ্যালেঞ্জগুলোর মধ্যে একটির জন্ম দিয়েছে। ব্যাপক নিরাপত্তা অভিযানে পাঁচশোজনের বেশি মানুষ নিহত হয় এবং বাইশ হাজারের বেশি মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়।

বর্তমানে কারারুদ্ধ নার্গিস মোহাম্মদী নিউইয়র্ক টাইমসে কলাম লিখেছেন।

তিনি লেখেন, “সরকার যা বুঝতে পারে না তা হলো তারা আমাদের যত বেশি তালাবদ্ধ করবে, আমরা তত শক্তিশালী হবো।”

ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন এবং রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত অন্যান্য গণমাধ্যম থেকে তাৎক্ষণিক কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। কিছু আধা-সরকারি সংবাদ সংস্থা বিদেশী গণমাধ্যমের প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে অনলাইন বার্তায় মোহাম্মদীর নোবেল বিজয়ের কথা স্বীকার করেছে।