মেক্সিকো সীমান্তে ধর্ষিত হচ্ছে অভিবাসন প্রত্যাশিরা

ইকুয়েডর থেকে আসা এক আশ্রয়প্রার্থী নিউজার্সিতে সংবাদদাতাদের সাথে কথা বলার সময় উপহার হিসেবে পাওয়া নেকলেস ধরে আছেন। তিনি জানান, যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো সীমান্তের কাছে তিনি অপহরণ ও যৌন পাচারের শিকার হয়েছিলেন; ১৮ আগস্ট, ২০২৩।

বেআইনিভাবে সীমান্ত অতিক্রমের সংখ্যা রেকর্ড হারে বৃদ্ধি পাওয়ার মুখে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন মে মাসে নতুন একটি ব্যবস্থা গ্রহণ করে। এই ব্যবস্থার অধীনে, বৈধ ভাবে সীমান্ত অতিক্রম করে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের জন্য সাক্ষাৎকার দিতে হয় অভিবাসন প্রত্যাশীদের। এর জন্য তাদের সিবিপি ওয়ান নামে পরিচিত একটি অ্যাপের মাধ্যমে আগে থেকে অ্যাপয়েনমেন্ট নিশ্চিত করতে হয়।

আইনজীবী, চিকিৎসা পেশাজীবী এবং ত্রান কর্মীসহ নয়জন বিশেষজ্ঞ রয়টার্সকে বলেছেন, নতুন ব্যবস্থাটির ফলে দুটি শহরে অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে; যার ফলে সহিংসতা বৃদ্ধি পেয়েছে।

চারজন সহায়তাকারী (অ্যাডভোকেট) বলেছেন, অভিবাসন প্রত্যাশীরা অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রম করতে বাধ্য হচ্ছেন; আর এর অন্যতম কারণ হলো রেইনোসা এবং মাতামোরোসে অপহরণ এবং যৌন নিপীড়নের উচ্চ ঝুঁকি। সেপ্টেম্বরে সীমান্ত অতিক্রমের হার বৗাপক হারে বেড়েছে বলে জানান তারা।

বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, এখন অনেক আশ্রয়প্রার্থী তাদের সীমান্তের ওপারে নিয়ে যাওয়ার জন্য আর চোরাকারবারিদের অর্থ প্রদান করছেন না। এর বদলে অ্যাপে অ্যাপয়েন্টমেন্ট পাওয়ার আশায় নিজেরাই সীমান্তের দিকে অগ্রসর হচ্ছেন।

বিশেষজ্ঞরা জানান, তবে অপরাধী গোষ্ঠীগুলো এখনো এই অভিবাসন প্রত্যাশীদের তাদের অঞ্চলে প্রবেশের জন্য অর্থ দাবি করছে।

ওয়াশিংটনে অবস্থিত সিবিপির একজন কর্মকর্তা বলেছেন, দুটি শহরে অভিবাসীদের যৌন নিপীড়নের খবরে সিবিপি উদ্বিগ্ন বোধ করছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এই কর্মকর্তা বলেন, “এটি সার্বিকভাবেই এমন ধরণের ঘটনা, যা নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন।”

এই কর্মকর্তা জানান, যুক্তরাষ্ট্রের কর্তৃপক্ষ “চাঁদাবাজি এবং অপহরণের মতো উদ্বেগের কারণে” জুন মাসে তামাউলিপাস সীমান্তের কাছে, নুয়েভো লারেডো শহরে সিবিপি ওয়ান ব্যবহার করে অ্যাপয়েন্টমেন্ট নেয়া সাময়িকভাবে স্থগিত করেছে।

সিবিপি-এর পরিসংখ্যান অনুসারে, আড়াই লাখের বেশি অভিবাসন প্রত্যাশী সিবিপি ওয়ান অ্যাপে অ্যাপয়েন্টমেন্টের সময় নির্ধারণ করেছে। আর ২ লাখের বেশি কিউবা হাইতি, নিকারাগুয়া এবং ভেনিজুয়েলার নাগরিক আকাশ পথে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করেছে। তারা বাইডেন প্রশাসনের আর একটি মানবিক কর্মসূচির অধীনে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করেছে।