প্রয়াত দুই বোনের শেষ স্মৃতি ছিল কেবল কয়েকটি ছবি। আগুনের হাত থেকে বাঁচাতে পারেননি সেগুলোও। ঘরবাড়ির সাথে সবকিছু পুড়ে গিয়েছিল ২০১২ সালে - রামু দাঙ্গার দুর্বিষহ স্মৃতি স্মরণ করে ভয়েস অফ আমেরিকাকে বলেন রামু বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক সুমথ বড়ুয়া। তার ৬৭ বছরের বৃদ্ধ বাবা এ ঘটনার পরপর মানসিক ট্রমার মধ্যে চলে যান। মৃত্যুর আগে পর্যন্ত মনুষ্যত্বের উপর হারানো বিশ্বাস ফিরে পাননি তিনি।
আজ থেকে ঠিক এগারো বছর আগে কক্সবাজারের রামুতে ঘটেছিল এক সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা। ২০১২ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর বিকেলে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া কুরআন অবমাননার এক গুজবকে কেন্দ্র করে সূত্রপাত এ ঘটনার, যার জের ধরে শুধু রামুতেই ১২ টি বৌদ্ধবিহারে অগ্নি সংযোগ করা হয়। জ্বালিয়ে দেয়া হয় বৌদ্ধপল্লীর ৫০ টিরও বেশি ঘরবাড়ি। লুটপাট হয় শত শত বছরের পুরনো অমূল্য পুরাতাত্ত্বিক সম্পদ। উপজেলার বিভিন্ন স্থানে সারা রাত ধরে চলা তান্ডব নিয়ন্ত্রণে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ব্যর্থতা নিয়ে অনেক অভিযোগ রয়েছে ভুক্তভোগীদের।
বিমুক্তি বিদর্শন বিহারের পরিচালক করুণাশ্রী মহাথেরো ভয়েস অফ আমেরিকাকে বলেন, "এক ঘন্টা দুই ঘন্টা না, সারা রাত ধরে এতগুলো বিহার পুড়িয়ে গেল। তাহলে আমাদের প্রশাসন কী করলো?"
পরবর্তীতে দায়েরকৃত ১৮টি মামলার একটিরও বিচারকার্য আজও শুরু হয়নি সাক্ষীর অভাবে।
এখন কেমন আছে রামুর ধর্মীয় সংখ্যালঘু বৌদ্ধ জনগোষ্ঠী?
"সবকিছু আগের মত হয়ে গেছে, আগের মত আছি - এগুলা জাস্ট খুশি করার কথা।" বলেন কক্সবাজার জেলা বৌদ্ধ সুরক্ষা পরিষদের সভাপতি প্রজ্ঞানন্দ ভিক্ষু। "এখানে যদি কোনদিন সেরকম বারো সালের মতো ক্ষেত্র তৈরি হয়, তাহলে পরিস্থিতি হবে অন্যরকম - বারো সালের চেয়েও ভয়ঙ্কর হতে পারে।" তিনি বলেন।
সাকিব প্রত্যয়ের রিপোর্ট।