যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় সৌদি-ইসরাইলের সম্ভাব্য স্বাভাবিকীকরণ নিয়ে পর্যবেক্ষকদের উদ্বেগ 

ফাইলঃ প্রেসিডিন্ট জো বাইডেন ও বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু, ৯ মার্চ ২০১০

বাইডেন প্রশাসন যখন সম্ভাব্য ঐতিহাসিক ইসরাইল-সৌদি আরব স্বাভাবিকীকরণ চুক্তিটি এগিয়ে নেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছে তখন পর্যবেক্ষকরা চুক্তিটি বাস্তবায়নের জন্য যুক্তরাষ্ট্র যদি খুব বেশি প্রতিশ্রুতি দেয় তাতেও কিছু সমস্যা দেখছেন।

বাইডেন প্রশাসন ঐতিহাসিকভাবে শত্রুতার সম্পর্ককে স্বাভাবিক করতে সক্ষম হবে এমন একটি প্যাকেজ নিয়ে সৌদি আরব ও ইসরাইলের সঙ্গে চুক্তি এবং কি কি বিষয়ে ছাড় দেওয়া হবে তা নিয়ে কাজ করছে। ওয়াশিংটন বলছে, এ ধরনের একটি চুক্তিতে পৌঁছানোর জন্য এখনও অনেক আলোচনা বাকি রয়ে গেছে।

তবে ওয়াশিংটনের উইলসন সেন্টারের বিশ্লেষক ডেভিড অটোয়ে ইতোমধ্যে সম্ভাব্য চুক্তি নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন।

উইলসন সেন্টারের ভিউপয়েন্ট সিরিজের সিনিয়ার উইলসন স্কলার বলেন, ইসরাইলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্বাভাবিক করার বিনিময়ে সৌদি আরব যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে আনুষ্ঠানিক নিরাপত্তার নিশ্চয়তা চায়।

ওয়াশিংটন ইতোমধ্যে ১৪হাজার কোটি ডলার সামরিক সহায়তা প্রদান করেছে এবং সৌদি আরব যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান নিরাপত্তা অংশীদার আর সে কারণে অটোয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন যে সৌদিরা এখন কেন এই ধরণের চুক্তি করতে চায়।

ওয়াশিংটনভিত্তিক কুইন্সি ইন্সটিটিউটের এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট ত্রিতা পার্সির মত আরও বিশ্লেষক বলছেন, সৌদি আরব কেবলমাত্র নিরাপত্তার নিশ্চয়তাই চায় না তারা যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে পারমাণবিক কর্মসূচি সম্পর্কিত সহায়তাও চাইছে।

তিনি ইনস্টিটিউটের অনলাইন ফোরামে প্রশ্ন রেখেছেন, এটা কি তাহলে মধ্যপ্রাচ্যে অস্ত্র প্রতিযোগিতা শুরু করতে পারে?

ভার্জিনিয়া রাজ্যের জর্জ ম্যাসন বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা বিষয়ক পরিচালক এলেন লাইপসন বলেন, বাইডেন প্রেসিডেন্ট হিসেবে কূটনীতিকে তিনি কেন্দ্রবিন্দুতে রেখেছেন। তবে ইসরাইল বা সৌদি আরব কেউই কোনো চুক্তিতে শর্তযুক্ত করতে চায় না।

লাইপসন বলেন, “ইসরাইল ও সৌদি আরব যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে নতুন প্রতিশ্রুতি পেয়ে পুরোপুরি খুশি হতে পারে তবে তা রাশিয়া ও চীনের প্রতি তাদের নীতিকে খুব বেশি প্রভাবিত করবে না। তারা তাদের পদক্ষেপস্বাধীনভাবে নেওয়ার উপরেও জোর দেবে।”

পর্যবেক্ষকদের মতে, যুক্তরাষ্ট্র যদি সৌদি আরবকে পারমাণবিক কর্মসূচিতে সহায়তা করে তাহলে তা যুক্তরাষ্ট্রকে মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতির সঙ্গে আরও গভীরভাবে যুক্ত করবে এবং সৌদি আরব ও তার শত্রু ইরান উভয়ই পারমাণবিক অস্ত্র অর্জন করার উদ্বেগকে বাড়িয়ে তুলতে পারে।