বিশ্বের সামনে উদ্ভূত জলবায়ু চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় তরুণ নেতাদের প্রতিশ্রুতি সত্যিই প্রশংসনীয় ও অনুপ্রেরণাদায়ক। “সবাইকে অবশ্যই তাদের ভূমিকা পালন করতে হবে”। এ কথা বলেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস।
জলবায়ু ফ্রন্টের তরুণ নেতাদের প্রশংসা করে তিনি বলেন, “আমি আপনাদের নিজ নিজ দেশে কমিউনিটি প্রকল্প বাস্তবায়নে আপনাদের উৎসর্গের জন্য সমস্ত জলবায়ু চ্যাম্পিয়নদের প্রশংসা করি”।
যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস এবং জেনল্যাবের যৌথ আয়োজনে ভারত, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, ভুটান ও বাংলাদেশের ৫০ জন জলবায়ু উদ্যমী তরুণ এই অঞ্চলে বায়ুর মান উন্নত করা নিয়ে আলোচনা করতে এক হয়েছিল। ২৬ থেকে ২৮ সেপ্টেম্বর ঢাকার যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস জেনল্যাবের সঙ্গে যৌথভাবে ক্লাইমেট অ্যাকশন চ্যাম্পিয়ন্স নেটওয়ার্ক (সিএসিএন) বাংলাদেশ এই কনক্লেইভের আয়োজন করে। এর লক্ষ্য ছিল বায়ুর মান উন্নত করায় তরুণ জলবায়ুকর্মীদের সঙ্গে সহযোগিতার সুযোগ নিয়ে আলোচনা করা।
সিএসিএন হলো যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের অর্থায়নে আঞ্চলিক একটি উদ্যোগ। এর লক্ষ্য এই অঞ্চলে জলবায়ু সংক্রান্ত কর্মকাণ্ড চালানোর জন্য তরুণ নেতৃত্বকে প্রশিক্ষণ দেওয়া এবং ক্ষমতায়ন করা। ঢাকায় এই আসরে ভারতীয় উপমহাদেশে বায়ুদূষণ মোকাবিলায় অংশগ্রহণকারীদের বিভিন্ন পরামর্শ এবং সুযোগ সম্পর্কে জানাতে যোগ দেন বাংলাদেশ এবং আঞ্চলিক জলবায়ু ও পরিবেশ বিশেষজ্ঞরা।
বৃহস্পতিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) এই আয়োজনের সমাপনী অনুষ্ঠানে পিটার হাস বক্তব্য দেন।
তিনি তরুণ প্রতিনিধিদের পরিবেশ সংরক্ষণে প্রয়োজনীয় কাজ চালিয়ে যেতে অনুপ্রাণিত করে বলেন, তৃণমূল পর্যায়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করে এবং সীমানা পেরিয়ে কাজ করার মাধ্যমে এই তরুণ নেতারা তাদের সম্প্রদায়কে দেখিয়ে দিচ্ছেন যে, ভাগ করা সমৃদ্ধির জন্য তাদের একে অপরের প্রয়োজন।
পিটার হাস বলেন, “আপনাদের আবেগ, উৎসর্গ ও উদ্ভাবনী চিন্তা আমাদের সময়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জগুলোর মোকাবিলার একটি অমূল্য সম্পদ। … ইতিবাচক কাজ চালিয়ে যান এবং জেনে রাখুন যে বিশ্ব আপনাদের গুরুত্বপূর্ণ প্রচেষ্টা দেখছে এবং সমর্থন করছে”।
পিটার হাস বলেন, “ভারতীয় উপমহাদেশে জলবায়ু পরিবর্তনের জরুরি চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় নিবেদিত সমগ্র অঞ্চলের চ্যাম্পিয়নদের দেখাটা অনুপ্রেরণাদায়ক৷ আমাদের গ্রহের জন্য একটি টেকসই ও স্থিতিস্থাপক ভবিষ্যত গড়ে তোলার জন্য আপনাদের নিরলস প্রচেষ্টা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ”।
পিটার হাস আরও বলেন, “ঢাকার মতো শহরে বায়ুদূষণের স্থানীয়, আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক সমাধান এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি প্রয়োজন”। ঢাকার বায়ুর গুণমানসংক্রান্ত সমস্যাগুলোকে সমাধান করা শুধুমাত্র জনস্বাস্থ্যের বিষয় নয়, শহরের দীর্ঘমেয়াদি স্থায়িত্ব এবং জীবনযাত্রা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রেও একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। যুক্তরাষ্ট্র জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। বাইডেন প্রশাসন সাম্প্রতিক আমেরিকান ক্লাইমেট কর্পস এবং অন্য উদ্যোগ চালু করেছে। এসব উদ্যোগ তরুণদের পরিবেশবান্ধব পরিচ্ছন্ন শক্তি, সংরক্ষণ এবং জলবায়ু সহনশীলতার দক্ষতা প্রশিক্ষণে নিবেদিত। যা জলবায়ু সংকটকে সামনাসামনি মোকাবিলা করবে।
পিটার হাস বলেন, জলবায়ু ঝুঁকি মডেলিং এবং প্রস্তুতির প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সক্রিয় দৃষ্টিভঙ্গি জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সৃষ্ট চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার প্রচেষ্টার একটি অপরিহার্য উপাদান। “এর মাধ্যমে আমরা বিশেষজ্ঞ ও অংশীজনদের জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবগুলোর আলোচনায় নিযুক্ত করি। যার মধ্যে আরও ঘন ঘন এবং গুরুতর আবহাওয়া বিপর্যয়, ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রা, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি এবং বৃষ্টিপাতের ধরণগুলোও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে”।
পিটার হাস বলেন, “আমরা তরুণ জলবায়ু চ্যাম্পিয়নদের জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে একটি উল্লেখযোগ্য এবং ইতিবাচক পার্থক্য তৈরি করতে সমর্থন করি”।