যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী লয়েড অস্টিন রবিবার পূর্ব আফ্রিকার দেশ জিবুতিতে সে দেশের নেতা এবং সোমালিয়ার প্রেসিডেন্টের সাথে দেখা করেন। হর্ন অফ আফ্রিকা অঞ্চলে অব্যাহত সহিংসতার মধ্যে প্রতিরক্ষা মন্ত্রী হিসাবে আফ্রিকায় এটাই তাঁর প্রথম সফর। সপ্তাহের শেষে তিনি কেনিয়া এবং অ্যাঙ্গোলা যাবেন।
জিবুতি আফ্রিকা মহাদেশে আমেরিকান সামরিক বাহিনীর অন্যতম প্রধান ঘাঁটি উল্লেখ করে অস্টিন বলেন, প্রতিবেশী সোমালিয়ার সমর্থনে জিবুতিয়ান বাহিনী এবং আফ্রিকান ইউনিয়ন বাহিনীর সাথে অংশীদারিত্ব করতে পেরে যুক্তরাষ্ট্র গর্বিত। ওই অঞ্চলে সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে চলমান সামরিক অভিযানের মধ্যে আল-শাবাব জঙ্গিরা ক্রমবর্ধমান প্রতিরোধ গড়ে তুলছে।
আল-শাবাব আফ্রিকা মহাদেশে আল-কায়েদার প্রধান শাখা।
গত ২৬ আগস্ট কাউসওয়েন শহরে এক মারাত্মক হামলার পর, আল-শাবাবের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সোমালিয়া বেশ বিপর্যয়ের সম্মুখীন হয়৷ এই হামলায় কয়েক ডজন সরকারি সৈন্য নিহত হয় এবং এর ফলে জঙ্গি গোষ্ঠীর কাছ থেকে পূর্বে দখল করা শহরগুলি হাতছাড়া হয় এবং শহরগুলি থেকে দ্রুত পশ্চাদপসরণ করতে বাধ্য হয় সোমালিয়ার বাহিনী৷
যুক্তরাষ্ট্রের একজন প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা আল-শাবাবকে একটি "কঠিন চ্যালেঞ্জ" হিসেবে বর্ণনা করে বলেছেন, "এটি এমন নয় যে এই পরিস্থিতি রাতারাতি থামানো সম্ভব।"
বছরের পর বছর ধরে সোমালিয়ার বিশেষ বাহিনীকে প্রশিক্ষণ এবং সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে বিমান হামলা চালানোসহ আল-শাবাবের বিরুদ্ধে যুদ্ধে সোমালি বাহিনীকে "পরামর্শ ও সহায়তা" দিয়ে আসছে আমেরিকান সামরিক বাহিনী।
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের এক প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা নিশ্চিত করেছেন, শুক্রবার কেনিয়ার প্রতিরক্ষা বাহিনীর কর্মীদের একটি ঘাঁটিতে আল-শাবাব জঙ্গিরা গুলি চালালে, একজন আমেরিকান ঠিকাদারসহ অংশীদার বাহিনীর অপর একজন সদস্য আহত হয়েছেন। যদিও আল-শাবাব দাবি করেছে, তাদের হামলায় চার আমেরিকান সেনা এবং নয়জন কেনিয়ার সেনা আহত হয়েছে। তবে, আল-শাবাবের এই দাবিকে "অতিরঞ্জিত" বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের ওই প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা।
আফ্রিকান ইউনিয়ন ট্রানজিশন মিশন, এটিএমআইএস-এর অংশ হিসেবে কেনিয়ার হাজার হাজার সৈন্য সোমালিয়ায় কাজ করছে। ১০ বছর আগে রাজধানী নাইরোবির ওয়েস্টগেট মলে এক ভয়াবহ হামলায় অন্তত ৬৭ জন নিহত হয়। এছাড়া বারবার আল-শাবাবের আক্রমণের মুখোমুখি হয়েছে দেশটি।
সপ্তাহের শেষে কেনিয়া এবং অ্যাঙ্গোলা ভ্রমণ করবেন অস্টিন। যুক্তরাষ্ট্রের একজন ঊর্ধ্বতন প্রতিরক্ষা কর্মকর্তার মতে, তিনিই প্রথম কোনো আমেরিকান প্রতিরক্ষা মন্ত্রী যিনি অ্যাঙ্গোলা সফর করছেন। এছাড়া ১৯৭৬ সালের পর এই প্রথমবারের মতো একজন আমেরিকান প্রতিরক্ষা প্রধান কেনিয়া সফর করছেন।