১৫ দিনের রাত্রি শেষে দিনের আলো ফুটল চাঁদের দক্ষিণ মেরুর শিবশক্তি পয়েন্টে। ভোর হল চাঁদে। রোদ এসে পড়ল ভারতের চন্দ্রযান-৩ এর ল্যান্ডার বিক্রম ও রোভার প্রজ্ঞানের গায়ে। যাদের ঘুমন্ত বলা হচ্ছিল। কৌতূহল দানা বাঁধছে এবার তাদের ঘুম ভেঙে জেগে ওঠার পালা এল কি না তাই নিয়ে।
মঙ্গলবার ২০ সেপ্টেম্বর চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে সূর্যোদয় হয়েছে। রাতের আঁধার কাটছে ধীরে ধীরে। গত ১৫ দিন ধরে স্লিপ মোডে ছিল চন্দ্রযান-৩ এর ল্যান্ডার বিক্রম ও রোভার প্রজ্ঞান। ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরো জানিয়েছে, এবার তাদের ঘুম ভাঙানোর সময় এসেছে। সূর্যের আলোয় আবার সক্রিয় হবে বিক্রম-প্রজ্ঞানের সোলার প্যানেল। আবারও হয়ত প্রাণের সঞ্চার হবে। পৃথিবী থেকে ইসরোর ডাকে সাড়া দেবে তারা।
ইসরোর বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, সূর্যের আলোয় বিক্রম এবং প্রজ্ঞানের ব্যাটারি রিচার্জ করা হবে। এতদিন ব্যাটারি নিষ্ক্রিয় করে তাদের ঘুম পাড়িয়ে রাখা হয়েছিল। হাইবারনেশনে ছিল ল্যান্ডার ও রোভার। ব্যাটারি রিচার্জ সম্পূর্ণ হলেই আবার ল্যান্ডার এবং রোভারকে সক্রিয় করে তোলা যাবে বলে আশাবাদী ইসরোর বিজ্ঞানীরা।
চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে নামার পর থেকেই বিক্রম ও রোভারের পেলোডগুলি ভালভাবেই কাজ করেছে। যন্ত্রপাতিতে কোনও গোলমাল হয়নি। ইলসা, চ্যাস্টে, রম্ভা এবং অ্যারের কৌশলে প্রতিনিয়ত চাঁদের পরিবেশ সম্পর্কে জানতে পেরেছেন ইসরোর বিজ্ঞানীরা। চ্যাস্টে চাঁদের মাটির তাপমাত্রা মেপেছে, ইলসা দিয়ে চাঁদের কম্পন টের পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। লেজ়ার-ইনডিউসড ব্রেকডাউন স্পেক্ট্রোস্কোপ (এলআইবিএস) নমুনা সংগ্রহ করে তা লেজ়ার প্রযুক্তির মাধ্যমে পরীক্ষা করে চাঁদের মাটির উপাদানের বিশ্লেষণ করেছে। এলআইবিএসের মাধ্যমেই চাঁদের বুকে সালফার-সহ বেশ কিছু খনিজের হদিস পেয়েছে প্রজ্ঞান।
বিক্রমে রয়েছে লেজার রেট্রোরিফ্লেক্টর অ্যারে, রেডিও অ্যানাটমি অফ মুন বাউন্ড হাইপারসেনসিটিভ আয়নস্ফিয়ার অ্যান্ড অ্যাটমোস্ফিয়ার বা ‘রম্ভা’। রম্ভা চাঁদের মাটিতে থাকা প্লাজমার ঘনত্ব মেপেছে। বিক্রমের সব যন্ত্রই সঠিক ভাবে কাজ করেছে এখনও পর্যন্ত। এইসব পেলোডগুলিকে নিষ্ক্রিয় করা হয়েছিল ১৫ দিনের জন্য। এবার হয়ত ফের তাদের অ্যাকটিভ করে তোলা সম্ভব হবে বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা।