ইথিওপিয়ার সংঘাতে ১০ হাজারের বেশি মানুষ যৌন সহিংসতার শিকার, বলছেন জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা

ফাইল ছবি- বাস্তুচ্যুত নারীরা উত্তর ইথিওপিয়ার টিগ্রায় অঞ্চলের মেকেলেতে একটি অভ্যর্থনা কেন্দ্রে স্থানীয় বাসিন্দাদের দান করা খাবার খাচ্ছে। (৯ মে, ২০২১)

জাতিসংঘ সমর্থিত মানবাধিকার বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, সংঘাত বন্ধে এক বছর আগে চুক্তি হওয়া সত্ত্বেও ইথিওপিয়ার উত্তরাঞ্চলীয় টিগ্রায় অঞ্চলে যুদ্ধাপরাধ অব্যাহত রয়েছে। এই সংঘাতে কমপক্ষে ১০ হাজারের বেশি মানুষ যৌন সহিংসতার মুখোমুখি হয়েছেন। এদের মধ্যে বেশিরভাগই নারী ও শিশু।

তারা সতর্ক করে বলেছেন, পরবর্তীতে সহিংসতা আরও বেড়ে “নৃশংস অপরাধ” সৃষ্টি করতে পারে। এর ফলে পুর্ব আফ্রিকায় নিরাপত্তা বিপন্ন হবার আশংকা রয়ে গেছে। বিভিন্ন জাতির প্রায় ১২ কোটি মানুষের এই অঞ্চলটিতে ইথিওপিয়ার জনসংখ্যাই সবচেয়ে বেশি।

সোমবার প্রকাশিত এই বিশেষজ্ঞ প্রতিবেদনটি লিখেছেন একদল তদন্তকারী, যাদের ভবিষ্যত অনিশ্চয়তায় ঘেরা। জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক কাউন্সিল আগামী মাসের শুরুতে নির্ধারণ করবে এই দলটির চুক্তি নবায়ন হবে কি না। ইতোমধ্যে ইথিওপিয়ার সরকার ও এর প্রধানমন্ত্রী আবিই আহমেদ এই দলটির কাজ বন্ধ করার উদ্যোগ নিয়েছে।

মূলত টিগ্রায় অঞ্চলটিকে ঘিরে ২০২০ সালের নভেম্বরে সহিংসতা শুরু হয়। এরপর বেশ কয়েক মাস ধরে বহির্বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন থাকে এই অঞ্চল। প্রতিবেদনে গনহত্যা, ধর্ষণ, অনাহার এবং স্কুল এবং চিকিৎসা সুবিধা ধ্বংসসহ যুদ্ধে সব পক্ষের নৃশংসতার কথা তুলে ধরা হয়েছে।

ইথিওপিয়া বিষয়ক আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ চান্দে ওথম্যান বলেছেন, শান্তিচুক্তি সত্ত্বেও পরিস্থিতি “অত্যন্ত গুরুতর” রয়ে গেছে।

তিনি আরও বলেন, “সহিংস সংঘাত এখন প্রায় সারা দেশেই ছড়িয়ে পড়েছে। টিগ্রায়ে চলমান সংঘাত এবং বিশেষ করে আমহারা এলাকার সাধারন জনগণের বিরুদ্ধে চলা নৃশংসতার উদ্বেগজনক প্রতিবেদন পাওয়া যাচ্ছে।”

ইথিওপিয়ার কমিশনার রাধিকা কুমারাস্বামী বলেন, ইথিওপিয়ায় ইরিত্রিয়ার সৈন্যদের উপস্থিতি শুধু দায় এড়িয়ে থাকার নীতিই নয় বরং এ ধরনের নৃসংশতার প্রতি দেশটির সরকারের সমর্থন আর সহনশীলতাই প্রকাশ করে।

তদন্তকারী দলটি ইথিওপিয়ান সরকারের কাছ থেকে “যথাযথ সহযোগিতা” না পাওয়ার অভিযোগ তুলে বলেছে, ইথিওপিয়ার অপরাধ কাণ্ডে ইরিত্রিয়ার সরকারের কথিত ভূমিকা নিয়ে প্রশ্নের জবাব তারা দেয়নি। দেশটির সরকারের তার নিজস্ব অন্তর্বর্তীকালীন বিচার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার চেষ্টাকে কমিশন আন্তর্জাতিক তদন্ত এড়ানোর একটি প্রচেষ্টা বলে মনে করছে।