স্পেন সফর করছেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়।
স্পেন-এর বার্সেলোনার শিল্প সম্মেলনে রাজনীতিবিদ তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মঙ্গলবার ১৯ সেপ্টেম্বর ভাষণে নিজেকে রাজ্যের শিল্প দূত হিসাবে তুলে ধরলেন। সুদূর স্পেন থেকে কেন একজন শিল্পপতি পশ্চিমবঙ্গে বিনিয়োগ করতে আসবেন, যুক্তিপূর্ণভাবে তা বোঝাতে রাজ্যের শিল্প পরিকাঠামোর নিপুণ বর্ণনা দিলেন তিনি। তুলে ধরলেন রাজ্যের সাফল্য, অগ্রগতি।
বনধ সংস্কৃতির অবসান, পশ্চিমবঙ্গের দক্ষ শ্রমিক, শিল্পের জন্য সরকারের নিজস্ব জমি ম্যাপ, একশোরও বেশি ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক, শক্তিশালী যোগাযোগ ব্যবস্থা থেকে শুরু করে পশ্চিমবঙ্গের মানুষের সামাজিক সুরক্ষা প্রতিটি বিষয় একেবারে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে মঙ্গলবারের শিল্প সম্মেলনে তুলে ধরেন মুখ্যমন্ত্রী।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, "বাংলায় শিল্পস্থাপন করলে সেটা শুধু বাংলার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে না। বাংলায় রয়েছে আন্তর্জাতিক করিডর। বাংলাদেশ, ভুটান, নেপাল, মায়ানমারের মতো দেশগুলিতে খুব সহজেই যাওয়া যায় বাংলা থেকে।"
এদিনের শিল্প সম্মেলনের শুরুতে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বাংলার শিল্প সংস্কৃতির সঙ্গে স্পেন-এর শিল্পপতিদের প্রাথমিক আলাপ পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন শিল্পপতি হর্ষ নেওটিয়া, উমেশ চৌধুরী, কমল মিত্তাল, তরুণ ঝুনঝুনওয়ালা, রমেশ জুনেজার-রা। বাংলায় একসময় কথায় কথায় ধর্মঘট লেগেই থাকত। তারা বলেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে গত এক যুগে পশ্চিমবঙ্গের আমূল বদল ঘটেছে। পশ্চিমবঙ্গের দক্ষ শ্রমিক এবং শূন্য কর্মদিবস নষ্টের কথাও তুলে ধরেন তারা।
মুখ্যমন্ত্রীর স্পেন-এর শিল্পপতিদের কাছে আন্তরিক অনুরোধ, "বাংলায় আসুন, বিনিয়োগ করুন। কথা দিচ্ছি, বাংলা আপনাদের খালি হাতে ফেরাবে না। মনে রাখবেন, আমরা রাজ্যে ১০০ ভাগ মানুষকে ৯৯ শতাংশ সামাজিক সুরক্ষা দিই। আমরা মেয়েদের পকেট মানিও (লক্ষ্মীর ভাণ্ডার) দিই, বয়স্কদের ভাতাও।"
প্রসঙ্গত, কদিন আগে স্পেন থেকেই পশ্চিমবঙ্গের মেদিনীপুর জেলার শালবনিতে শিল্পপতি গোষ্ঠী জিন্দলদের ফেলে রাখা জমিতে ইস্পাত কারখানা তৈরির ঘোষণা করেছেন ভারতীয় ক্রিকেট দলের প্রাক্তন অধিনায়ক সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। প্রাথমিক পর্যায়ে আড়াই হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগের ঘোষণাও করেছেন সৌরভ। শিল্প সম্মেলনে সেই প্রসঙ্গ এনে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "ভৌগলিক সীমারেখা আজকে আর কোনও বাধা নই। এখন থেকে স্পেন আর বাংলা, আমরা সকলে একটা পরিবারের মতো।"