ভারতে সংসদের বিশেষ অধিবেশনে বুধবার পেশ হতে পারে বহু প্রতিক্ষীত মহিলা সংরক্ষণ বিল

আগামী বুধবার ২০ সেপ্টেম্বর নতুন সংসদ ভবনে মহিলা সংরক্ষণ বিল পাশ করাতে চাইছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। কংগ্রেস, তৃণমূল-সহ প্রধান বিরোধী দলগুলিও এই ব্যাপারে সরকারের পাশে আছে।

ভারতে কেন্দ্রের প্রস্তাবে সোমবার ১৮ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হয়েছে সংসদের বিশেষ অধিবেশন। মঙ্গলবার ১৯ সেপ্টেম্বর ভারতে পালিত হবে হিন্দুদের উৎসব গণেশ চতুর্থী। এই দিনটিকেই বেছে নেওয়া হয়েছে নতুন সংসদ ভবনে আনুষ্ঠানিকভাবে অধিবেশন শুরু করার জন্য। পুরনো সংসদ ভবনকে সোমবারই আনুষ্ঠানিকভাবে বিদায় জানাতে চলেছে দেশ। এদিন অন্তিম অধিবেশন চলছে পুরনো ভবনে।

সংবাদ সূত্রের খবর, আগামী বুধবার ২০ সেপ্টেম্বর নতুন সংসদ ভবনে মহিলা সংরক্ষণ বিল পাশ করাতে চাইছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। কংগ্রেস, তৃণমূল-সহ প্রধান বিরোধী দলগুলিও এই ব্যাপারে সরকারের পাশে আছে। রবিবার ১৭ সেপ্টেম্বর সর্বদলীয় বৈঠকে একাধিক দল এই বিলটি নতুন সংসদ ভবনের প্রথম অধিবেশনে পাশ করানোর প্রস্তাব দেয়।

সোমবার ১৮ সেপ্টেম্বর পুরনো ভবনে বিশেষ অধিবেশন শুরু হলে অধিবেশনের ভাষণে প্রধানমন্ত্রী সংসদের মহিলা সাংসদদের ভূমিকার কথা উল্লেখ করেন। মহিলারা সংখ্যায় কম, এই কথাও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।

সংবাদ সূত্রের খবর, সংসদের এই ঘাটতি দূর করতেই লোকসভা, রাজ্যসভা এবং রাজ্য বিধানসভা ও বিধান পরিষদের এক তৃতীয়াংশ আসন মহিলাদের জন্য সংরক্ষণের সিদ্ধান্ত হয় আজ থেকে ২৭ বছর আগে, ১৯৯৬ সালে। অধিকাংশ দল বিলে সম্মতি জানালেও লালুপ্রসাদ যাদব, মুলায়ম সিং যাদব, মায়াবতী, নীতীশ কুমাররা দাবি তোলেন সংরক্ষিত এক তৃতীয়াংশ আসনের মধ্যে ওবিসি এবং তফসিলি জাতি ও উপজাতিদের জন্য সংরক্ষণ চালু করতে হবে। এই প্রস্তাব কংগ্রেস-বিজেপি-সহ বাকি দলগুলি মানেনি। সেই সময় থেকে বিভিন্ন পর্বে কেন্দ্রে ক্ষমতায় আসা বিভিন্ন সরকারের শরিকও ছিলেন এই সব নেতাদের দল। ফলে বিলটি নিয়ে সহমত তৈরি হচ্ছিল না। এখন মায়াবতীর দল বাদে বাকিরা ইন্ডিয়া জোটের শরিক। লালুপ্রসাদ যাদব, নীতীশকুমাররা বিলটির বিষয়ে কী অবস্থান নেবে এখনও স্পষ্ট নয়।

তবে ২৭ বছর কেটে যাওয়ায় লালুপ্রসাদ যাদবের আরজেডি, প্রয়াত মুলায়ম সিংয়ের দল সমাজবাদী পার্টি আর আগের মতো বিরোধিতায় অনড় থাকবে না বলেই রাজনৈতিক ওয়াকিবহাল মহল মনে করছে। হালে মহিলা বিল নিয়ে চর্চা শুরুর পর ওই দলগুলিকে আপত্তি করতে দেখা যায়নি। কারণ, মহিলা ভোটের কথাও সব দলকেই বিবেচনায় রাখতে হচ্ছে।

অতীতে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, প্রথমে মহিলাদের জন্য সংরক্ষণ চালু হোক। কয়েক বছর পর জাতিগত সংরক্ষণ চালু করা হবে। তবে দলগুলি নিজেদের সংরক্ষণ নীতি মেনে প্রার্থী নির্বাচন করতে পারে সংশ্লিষ্ট আসনে। তবে সব দলেই পুরুষ সদস্যদের একাংশের মধ্যে কম-বেশি মহিলা সংরক্ষণ নিয়ে আপত্তি আছে। কারণ এই বিল পাশ হলে লোকসভাতেই ১৮১টি আসন মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত হয়ে যাবে। অর্থাৎ পুরুষরা সেগুলিতে প্রার্থী হতে পারবেন না।