মাহসা আমিনির মৃত্যুবার্ষিকীতে ইরানে ধর্মঘট, বিভিন্ন দেশে বিক্ষোভ

২০২২ সালে ইরানের নৈতিকতা পুলিশ কর্তৃক গ্রেপ্তার ২২ বছর বয়সী কুর্দি নারী মাহসা আমিনির মৃত্যুর প্রথম বার্ষিকীতে লন্ডনের ট্রাফালগার স্কয়ারে মানুষ বিক্ষোভ করছে। ১৫ সেপ্তেম্বর, ২০২৩)

মাহসা "জিনা" আমিনির মৃত্যুর এক বছর পূর্তিতে শনিবার ইরানের বিভিন্ন প্রদেশের কুর্দি শহরগুলিতে সামরিক নজরদারির মধ্যেও ব্যবসায়ী ও দোকানদারদের সাধারণ ধর্মঘট চলে। পাশাপাশি বিশ্বব্যাপী প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

শনিবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া অসংখ্য ছবিতে ইরানের কুর্দি অঞ্চলের সাক্কেজে আমিনি পরিবারের বাসভবনের আশেপাশে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক সামরিক ও নিরাপত্তা বাহিনীকে দেখা গেছে।

গত সপ্তাহে নিরাপত্তা কর্তৃপক্ষের বারবার সমন জারি সত্ত্বেও মাহসার বাবা আমজাদ আমিনি ও মোজগান এফতেখারি বলেন, ইরানের নৈতিকতা পুলিশের হেফাজতে থাকা অবস্থায় মাহসার “মর্মান্তিক মৃত্যুর” বার্ষিকী উপলক্ষে শনিবার তাদের মেয়ের কবরস্থানে “ধর্মীয় ও ঐতিহ্যবাহী অনুষ্ঠান” করার পরিকল্পনা রয়েছে।

গত কয়েকদিন ধরে আমিনির পরিবার জানিয়েছে, নিরাপত্তা কর্তৃপক্ষ তাদের বার্ষিকী অনুষ্ঠানের আয়োজন থেকে বিরত থাকার অনুরোধ করেছিল, তবে তার বাবা দৃঢ়ভাবে স্মারক অনুষ্ঠানের আয়োজনের তাৎপর্য তুলে ধরেন।

কুর্দিস্তান হিউম্যান রাইটস নেটওয়ার্ক জানিয়েছে, আমজাদ আমিনীকে শনিবার অল্প সময়ের জন্য আটক করা হয়। ইরানের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা ইরনা তাকে গ্রেপ্তারের কথা অস্বীকার করলেও তাকে সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য আটক করা হয়েছিল নাকি সতর্ক করা হয়েছে তা নিশ্চিত করা হয়নি।

আমজাদ আমিনী সম্প্রতি ভয়েস অব আমেরিকার পার্সিয়ান সার্ভিসকে বলেন, “নিষ্পাপ ও বিশুদ্ধ আত্মার শহীদ জিনার নাম ও স্মৃতির প্রতি সম্মান জানাতে এবং আমাদের পরিবার, আত্মীয়-স্বজন ও তার শুভাকাঙ্ক্ষীদের হৃদয়কে সান্ত্বনা দিতে আমরা এ বছর বর্ষপূর্তি উদযাপনে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। তবু বিদ্যমান পরিস্থিতি বিবেচনা করে, আমরা জনসাধারণকে আনুষ্ঠানিক আমন্ত্রণ জানাতেও পারছি না অথবা তাদের উপস্থিত না হওয়ার পরামর্শও দিতে পারছি না।”

গত কয়েক দিন ধরে বিক্ষোভগুলো নিরাপত্তা বাহিনী দ্বারা কঠোর ভাবে দমনের শিকার হয়েছে। শহরের কেন্দ্র এবং রাস্তাগুলিতে সামরিক কর্মীদের উল্লেখযোগ্য মোতায়েন দেখা যায়।

শনিবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ছবিতে দেখা যায়, নিউজিল্যান্ডে ইরানিরা আমিনির মৃত্যুবার্ষিকীতে একটি প্রতিবাদ সমাবেশে অংশ নিচ্ছে। সেখানে ইরানিরা ইরানের প্রতিবাদ আন্দোলনের সাথে সংহতি জানিয়ে প্ল্যাকার্ড বহন করে এবং ইরানে গণতন্ত্র ও স্বাধীনতার পক্ষে স্লোগান দেয়। অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নে এবং জাপানের ইরানি দুতাবাসের সামনেও একই প্রতিবাদ সমাবেশ দেখা যায়।