ভারতের হরিয়াণায় নুহ-র দাঙ্গায় ধৃত কংগ্রেস বিধায়ক, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে জারি ১৪৪ ধারা, বন্ধ ইন্টারনেট পরিষেবা

ভারতের হরিয়াণায় নুহ-র দাঙ্গায় ধৃত কংগ্রেস বিধায়ক, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে জারি ১৪৪ ধারা, বন্ধ ইন্টারনেট পরিষেবা

ভারতের হরিয়াণায় নুহ-র দাঙ্গায় কংগ্রেস বিধায়ক মামন খানকে শুক্রবার ১৫ সেপ্টেম্বর সকালে গ্রেফতার করেছে হরিয়াণা পুলিশ। গ্রেফতারের পরেই নুহ জেলা জুড়ে ১৪৪ ধারা জারি করেছে প্রশাসন। বন্ধ রাখা হয়েছে ইন্টারনেট পরিষেবা। মন্দির-মসজিদে জমায়েতও নিয়ন্ত্রণ করা হবে, জানিয়েছে প্রশাসন। শুক্রবার বাড়িতেই নমাজ পাঠ করতে মুসলিম সমাজের কাছে আর্জি জানিয়েছে হরিয়াণা প্রশাসন।

দু’দিন আগেই নুহ দাঙ্গায় যুক্ত থাকার অভিযোগে পুলিশ বিশ্ব হিন্দু পরিষদের কর্মী মনু মানেসরকে গ্রেফতার করে। তার বিরুদ্ধে রাজস্থানে জোড়া খুনের অভিযোগ থাকায় ওই রাজ্যের পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে মনুকে। মানেসরের গ্রেফতারির বিরুদ্ধে সরব হয়েছে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ। ওই গ্রেফতারি ঘিরে পরিস্থিতি ক’দিন ধরেই ফের উত্তপ্ত। শুক্রবার সকালে কংগ্রেস বিধায়ককে গ্রেফতার করার পর পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে ধরে নিয়ে বিশাল পুলিশ বাহিনী মোতায়েন হয়েছে জেলা জুড়ে।

গ্রেফতারি এড়াতে কংগ্রেস বিধায়ক মামন খান আদালতে আগাম জামিন প্রার্থনা করেছিলেন। কিন্তু পুলিশ তার বিরুদ্ধে দাঙ্গায় যুক্ত থাকার নির্দিষ্ট তথ্যপ্রমাণ হাজির করে। ঘটনায় ধৃত এক আসামির সঙ্গে গত ৩১ জুলাই দাঙ্গা শুরুর আগের দু’দিন কংগ্রেস বিধায়কের ঘন ঘন মোবাইলে কথা হয়। দাঙ্গার সময়ও ঘটনাস্থল থেকে দেড় কিলোমিটার দূরে ছিলেন তিনি। মোবাইলের টাওয়ার লোকেশন থেকে এই তথ্য বের করে পুলিশ। সঙ্গে ধৃতের বয়ান পেশ করা হয় আদালতে। ধৃত ব্যক্তি কংগ্রেস বিধায়কের বিরুদ্ধে দাঙ্গায় উসকানি দেওয়ার অভিযোগ করে।

পুলিশের দাবি, কংগ্রেস বিধায়ককে তদন্তের জন্য তিন বার ডাকা হয়। তিনি হাজির হননি। শুক্রবার সকালে তাকে রাজস্থানের আজমেঢ় থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

গত ৩১ জুলাই হরিয়ানার নুহ-তে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ বৃজমণ্ডল শোভাযাত্রার আয়োজন করেছিল। সেটি ছিল স্থানীয় মন্দিরে শিবের মাথায় জল ঢালার কর্মসূচি। সেই কর্মসূচির আগে থেকেই স্থানীয় মুসলিম সমাজকে উদ্দেশ্য করে নানা ধরনের হিংসাত্মক এবং উসকানিমূলক পোস্ট ছড়ানো হতে থাকে সমাজমাধ্যমে। জোড়া খুনের আসামি মানু মানেসরও সেই পোস্টদাতাদের তালিকায় ছিলেন। নুহ-র বাসিন্দাদের সিংহভাগ মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ। তারাও পাল্টা কর্মসূচির ডাক দেয় বিশ্ব হিন্দু পরিষদকে রুখে দিতে। তা থেকেই দাঙ্গার সূত্রপাত। দাঙ্গায় দুই পুলিশকর্মী-সহ ছয়জন নিহত হন। দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়ে দিল্লি লাগোয়া গুরুগ্রামেও। সেখানে একটি মসজিদে হামলা চালায় দুষ্কৃতীরা। মসজিদে আগুন ধরিয়ে দিলে মারা যান এক তরুণ ইমাম।