জি-২০ সামিট: দিল্লিতে শীর্ষ সম্মেলনকে সফল বলে সার্টিফিকেট দিল যুক্তরাষ্ট্র, চীন

জি-২০ সামিট: দিল্লিতে শীর্ষ সম্মেলনকে সফল বলে সার্টিফিকেট দিল যুক্তরাষ্ট্র, চীন।

ভারতের রাজধানী দিল্লিতে জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেওয়ার পরই ভারত থেকে ভিয়েতনাম পৌঁছন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। সেখানে ভারতে মানবাধিকার, গণতন্ত্র নিয়ে সরব হয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। বলেছেন, একান্ত বৈঠকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে এই বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগের কথা বলেছেন।

পর্যবেক্ষকদের মতে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের ভারত সম্পর্কে তৃতীয় দেশের মাটিতে দাঁড়িয়ে এমন মন্তব্যে কিছুটা বিব্রত হয়ে পড়ে নয়া দিল্লি অর্থাৎ কেন্দ্র সরকার। আবার দেশে কংগ্রেস-সহ বিরোধী দলগুলি জি-২০ সম্মেলনের বিপুল খরচ নিয়ে সরব হয়েছে। বিরোধীদের অভিযোগ, মোদী সরকার বিদেশিদের কাছে দেশের দারিদ্র লুকোতে গিয়ে বিপুল খরচ করেছে।

এই পরিস্থিতিতে মোদী সরকারকে কিছুটা স্বস্তি দিল সম্মেলন সম্পর্কে চীন ও যুক্তরাষ্ট্র উভয় দেশের মূল্যায়ন। দুই দেশই ভারতে অনুষ্ঠিত হওয়া সম্মেলনকে সফল বলে সার্টিফিকেট দিয়েছে। যে কারণে প্রেসিডেন্ট বাইডেন ভারতে এসেছিলেন সেই জি-২০ সম্মেলন নিয়ে তার প্রশাসন খুশি। যুক্তরাষ্ট্রের বিদেশেমন্ত্রক বলেছে, দিল্লির জি-২০ সম্মেলন অত্যন্ত সফল হয়েছে।

একই কথা বলেছে চীনের বিদেশমন্ত্রকও। চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিংপিন দিল্লি আসেননি। চীনের প্রতিনিধিত্ব করেন সে দেশের প্রধানমন্ত্রী লি কুইয়াং। তিনি ফিরে গিয়ে সম্মেলন সম্পর্কে দেশের শীর্ষ নেতৃত্বকে রিপোর্ট দিয়েছেন। তার ভিত্তিতে সে দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রকের মুখপাত্র মাও নিং সাংবাদিক সম্মেলন ডেকে বলেছেন, দিল্লির জি-২০ সম্মেলন থেকে ইতিবাচক বার্তা গিয়েছে গোটা বিশ্বের কাছে।

বৈঠকে সব দেশের সহমতের ভিত্তিতে একটি প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে। যা আসলে ‘দিল্লি ঘোষণা পত্র'। এই ঘোষণাপত্রে ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ প্রসঙ্গ কীভাবে রাখা হবে তা নিয়ে দীর্ঘ বিতর্ক চলে সদস্য দেশগুলির কূটনীতিকদের মধ্যে। সম্মেলনে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনও যোগ দেননি। চীন চায়নি রাশিয়ার নাম প্রস্তাবে থাকুক। ভারত প্রস্তাব দেয় রাশিয়ার নাম উল্লেখ না করেই যুদ্ধ বিরোধী প্রস্তাব নেওয়া হোক। শেষে সেই প্রস্তাবে সব দেশই সায় দেয়। যুক্তরাষ্ট্র জোরালো আপত্তি তুলবে বলে মনে করা হয়েছিল। বাস্তবে প্রেসিডেন্ট বাইডেন তেমন কঠোর মনোভাব নেননি। এক সঙ্গে কাজ করে বৈশ্বিক সমস্যা সমাধানের কথা বলা হয়েছে 'দিল্লি ঘোষণা পত্র'-এ, যা কার্যকরী ইতিবাচক বার্তা বহন করছে।

ওয়াশিংটনে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফে ম্যাথুউ মিলার বলেন, "দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রী মোদী প্রেসিডেন্ট জো বিডেনের জন্য নৈশভোজের আয়োজন করেছিলেন। একান্ত আলোচনার বাইরেও শীর্ষ সম্মেলনে ভারত-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা হয়। দিল্লির এই সম্মেলন সম্পূর্ণ সফল হয়েছে বলে আমরা মনে করি।"
দিল্লি থেকেই প্রেসিডেন্ট বাইডেন ভিয়েতনামের রাজধানী হ্যানয়-এ যান। দিল্লিতে মোদী-বাইডেনের বৈঠকের পর প্রথামাফিক দুই রাষ্ট্রপ্রধান সাংবাদিকদের মুখোমুখি হননি। ভারত সরকারের আপত্তিতেই তা সম্ভব হয়নি বলে যুক্তরাষ্ট্রের দাবি। বিশেষজ্ঞদের পর্যবেক্ষণ, প্রেসিডেন্ট বাইডেন তাই ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তার বৈঠকের বিষয়ে হ্যানয়-এ গিয়ে মুখ খোলেন।