জি-২০ সামিট: রাষ্ট্রনেতাদের সারা ভারতের বাছাই করা সামগ্রী উপহার দিলেন প্রধানমন্ত্রী মোদী

জি-২০ সামিট: রাষ্ট্রনেতাদের সারা ভারতের বাছাই করা সামগ্রী উপহার দিলেন প্রধানমন্ত্রী মোদী

গত শনি ও রবিবার ৯ ও ১০ সেপ্টেম্বর ভারতের রাজধানী দিল্লির প্রগতি ময়দানে বসেছিল জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনের আসর। যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া সহ বিশ্বের নানা দশ থেকে প্রথম সারির রাষ্ট্রনেতারা হাজির হয়েছিলেন ভারতে। সম্মেলনের শেষে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর তরফে উপস্থিত সমস্ত দেশের কূটনীতিবিদদের বিশেষ উপহার দেওয়া হয়েছে। সেই তালিকায় যেমন রয়েছে কাশ্মীরের জাফরান , আরাকুর কফি, তেমনই রয়েছে পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিং চা, সুন্দরবনের খাঁটি মধু।

বেনারসী সিল্কের স্টোল: পুরোদস্তুর রেশম সুতো দিয়ে বোনা এই হালকা চাদর উপহার হিসেবে দেওয়া হয়েছে স্প্যানিশ প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজের স্ত্রী মারা বেগোনা গোমেজ ফার্নান্দেজকে। বারাণসীর সমৃদ্ধ সংস্কৃতি এবং এর ঐতিহ্যবাহী বয়নশিল্পের স্মারক এই চাদর। আবলুস কাঠের তৈরি একটি বাক্সে করে দেওয়া হয়েছে সেটি। কেরালার কারিগররা ভারতীয় আবলুস কাঠের উপর সূক্ষ্ম ‘জালি’ নকশা কেটে তৈরি করেছেন বাক্সটি।

সীসম কাঠের সিন্দুক: সীসম উড হল ভারতীয় রোজ উড। এই কাঠ দিয়ে তৈরি সিন্দুকটির উপর পিতল দিয়ে সূক্ষ্ম কারুকাজ করা হয়েছে। সোনালি-বাদামি রং এবং দুর্দান্ত টেঁকসই হওয়ার জন্য বিখ্যাত এই সিন্দুক।

কাশ্মীরি জাফরান: জাফরান বা কেশর হল বিশ্বের সবচেয়ে দামি মশলা। রান্নায় স্বাদ এবং গন্ধ বাড়াতে ব্যবহার হয়, তার পাশাপাশি জাফরানের ওষধিগুণও রয়েছে। প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট থাকার কারণে জাফরান ত্বক এবং স্বাস্থ্যের জন্যও খুবই উপকারি।

পশমিনা শাল: পশমিনা হল কাশ্মীরের একটি বিখ্যাত কাপড়। হিমালয়ের ছাগলের লোমে চিরুনি চালিয়ে যে পশম পাওয়া যায়, তা দিয়েই বোনা হয় সম্পূর্ণ শাল। দেখতে অত্যন্ত সুন্দর হওয়ার পাশাপাশি শরীর গরম রাখতেও দারুণ কার্যকরী এই শাল।

জি-২০ সামিট: রাষ্ট্রনেতাদের সারা ভারতের বাছাই করা সামগ্রী উপহার দিলেন প্রধানমন্ত্রী মোদী

সুন্দরবনের বনফুল মধু: সুন্দরবন হল পৃথিবীর বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ অরণ্য। এই জঙ্গলে বাস অজস্র মৌমাছির। মৌচাক ভেঙে বাংলার এই উপকূল এলাকার মানুষ খাঁটি মধু সংগ্রহ করে তা বাজারজাত করেন। বাংলার সেই মধুই উপহার হিসাবে দেওয়া হয়েছে জি-২০-র অতিথিদের।

আরাকুর কফি: আরাকু ভ্যালির বিস্তীর্ণ অঞ্চল জুড়ে এই কফির চাষ হয়, যা টেক্সচার এবং অনন্য গন্ধের জন্য বিখ্যাত। উপত্যকার সমৃদ্ধ মাটি এবং নাতিশীতোষ্ণ জলবায়ুতে সম্পূর্ণ অরগ্যানিক পদ্ধতিতে চাষ করা হয় এই কফি বিন।

ইক্কত স্টোল: মালবেরি সিল্ক দিয়ে ‘ইক্কত’ পদ্ধতিতে তৈরি এই স্টোল হল ওড়িশার ঐতিহ্য। টাই-অ্যান্ড-ডাই পদ্ধতিতে রাঙিয়ে তোলা হয় এই কাপড়। মরিশাসের প্রধানমন্ত্রী প্রবিন্দ জগনাউথের স্ত্রী কবিতা রামদানিকে উপহার হিসাবে পাঠানো হয়েছে এই চাদর। গুজরাতের কারিগরদের তৈরি সেগুন কাঠের নকশা আঁকা বাক্সে করে দেওয়া হয়েছে এটি।

খাদি স্টোল: খাদি একটি পরিবেশ বান্ধব কাপড় যা এর টেক্সচার এবং বহুমুখী ব্যবহারের জন্য পরিচিত। এটি তুলা, সিল্ক, পাট বা উলের তন্তু ব্যবহার করে বোনা হয়। ভারতের গ্রামীণ কারিগররা, যার মধ্যে ৭০ শতাংশই মহিলা, তারা হাতে বুনে তৈরি করেন এই কাপড়। বর্তমানে শুধু ভারত নয় বিশ্বের ফ্যাশন দুনিয়ায় বড় জায়গা করে নিয়েছে খাদির তৈরি পোশাক।

পেকো দার্জিলিং এবং নীলগিরি চা: দার্জিলিং চায়ের সুখ্যাতি এমনিতেই বিশ্বজোড়া। তার মধ্যে পেকো দার্জিলিং এবং নীলগিরি চা চায়ের জগতের ‘শ্যাম্পেন’ হিসাবে খ্যাত। পশ্চিমবঙ্গের পাহাড়ের ধাপে ৩০০০ থেকে ৫০০০ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত এই চা-বাগান থেকে বেছে শুধুমাত্র উপরের দিকের কোমল পাতাগুলি তুলে নেওয়া হয়। তারপর বিভিন্ন প্রক্রিয়াকরণের মাধ্যমে তা পানীয়-যোগ্য হয়ে ওঠে। এই বৈশিষ্ট্যগুলিই চায়ের কাপে প্রতিফলিত হয়।