পৃথিবীর তৃতীয় কক্ষপথ পেরিয়ে সূর্যের আরও কাছে পৌঁছল ভারতের সৌরযান আদিত্য এল-১

আগামী ১৮ তারিখ পর্যন্ত পৃথিবীর সবকটা কক্ষপথ প্রদক্ষিণ করে মহাকাশে সূর্যের পথ ধরবে আদিত্য এল-১। যাত্রাপথে কয়েক হাজার ছবি পাঠাবে সে।

সূর্যের পথে আরও এক ধাপ এগোল ভারতের সৌরযান আদিত্য এল-১। পৃথিবীর তৃতীয় কক্ষপথ পেরিয়ে গেল আদিত্যযান। পৃথিবীর ২৯৬ কিমি x ৭১৭৬৭ কিমি কক্ষপথে এখন প্রদক্ষিণ করছে সে। এই কক্ষপথ পরিবর্তনের পদ্ধতিকে বলা হয় আর্থ বাউন্ড ম্যানুভার। সৌরযানের পরবর্তী কক্ষপথ বদল হবে আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর বেলা ২টো নাগাদ।

ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরো জানিয়েছে, আগামী ১৮ তারিখ পর্যন্ত পৃথিবীর সবকটা কক্ষপথ প্রদক্ষিণ করে মহাকাশে সূর্যের পথ ধরবে আদিত্য এল-১। যাত্রাপথে কয়েক হাজার ছবি পাঠাবে সে।

আদিত্য এল- ১ যানটিতে মোট সাতটি পেলোড আছে। এগুলি সূর্যের বিভিন্ন স্তর খুঁটিয়ে পর্যবেক্ষণের জন্য তৈরি করা হয়েছে। ফটোস্ফিয়ার থেকে ক্রোমোস্ফিয়ার কিংবা সূর্যের একেবারে বাইরের দিকের স্তর কোরোনা, পর্যবেক্ষণ করবে এই পেলোডগুলি।

ভিসিবল এমিশন লাইন করোনাগ্রাফি (ভিইএলসি) এবং সোলার আল্ট্রাভায়োলেট ইমেজিং টেলিস্কোপ (এসএউআইটি) নামে দু’টি মূল পেলোড রয়েছে। ল্যাগরেঞ্জ পয়েন্ট পৌঁছানোর পরে এই ভিইএলসি পেলোড প্রতিদিন ১,৪৪০টি ছবি তুলে পাঠাবে। অন্য পেলোডগুলি হল সোলার লো এনার্জি এক্স-রে স্পেক্ট্রোমিটার (এসওএলইএক্সএস), হাই এনার্জি এল-১ অরবিটিং এক্স-রে স্পেক্ট্রোমিটার (এইচইএল১ওএস), আদিত্য সোলার উইন্ড পার্টিকল এক্সপেরিমেন্ট (এসপিইএক্স) এবং প্লাজ়মা অ্যানালাইজ়ার প্যাকেজ ফর আদিত্য (পিএপিএ)।

আদিত্য এল-১ মিশনের এই ‘এল-১’ পয়েন্ট হল ল্যাগরেঞ্জ পয়েন্ট। পৃথিবী ও সূর্যের মাঝামাঝি এই পয়েন্টে গিয়ে পৃথিবী ও সূর্যের মাধ্যাকর্ষণ শক্তি ব্যালান্স হয়ে যায়। এখানে গেলে স্পেসক্রাফট খুব কম জ্বালানিতে দীর্ঘসময় স্থির হয়ে থাকতে পারে। আর ওই পয়েন্ট থেকে সূর্যকে কাছ থেকে দেখা সম্ভব। এই ল্যাগরেঞ্জ পয়েন্ট এমন এক মধ্যবর্তী জায়গা যেখানে সূর্য ও পৃথিবীর আকর্ষণ সরাসরি পড়বে না স্পেসক্রাফ্টে। ফলে সেটি সূর্যের দিকে এগিয়ে যাবে না আবার পৃথিবীর দিকে পিছিয়েও আসবে না। সূর্যের গনগন আগুনে তেজ কোনও ক্ষতি করতে পারবে না স্পেসক্রাফ্টের। সে স্থির হয়ে বসে সূর্যের ছবি তুলবে, সূর্যের করোনার খবর পাঠাবে পৃথিবীর গ্রাউন্ড স্টেশনে।