অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্টনি আলবানিজ এই বছর বেইজিং সফরে যাচ্ছেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন। তাঁর আসন্ন এই সফরে তিনি চীনের সাথে বাণিজ্য বিরোধের অবসান ঘটানোর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবেন বলে আশা করা হচ্ছে। বৃহস্পতিবার ঘোষিত এই সফরটি হতে যাচ্ছে ২০১৬ সালের পর প্রথম কোনও অস্ট্রেলিয়ান নেতার চীন সফর।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এই সফরটি দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের উন্নতির সর্বসাম্প্রতিক লক্ষণ, তবে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে উভয় দেশের আরও কাজ করা দরকার।
অস্ট্রেলিয়ায় ২০২২ সালের মে মাসে নির্বাচিত মধ্য-বামপন্থী আলবেনিজের সরকার চীনের সাথে বিরোধ নিষ্পত্তি করতে আগ্রহী, কারণ এখন পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়ায় সবচেয়ে বড় ব্যবসায়িক অংশীদার চীন।
সাম্প্রতিক বছরগুলিতে, কয়লা, বার্লি এবং ওয়াইনসহ অস্ট্রেলিয়ার বেশ কিছু পণ্য আমদানির উপর বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে চীন।
বিশ্লেষকরা বলেছেন, দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক উত্তেজনার বিবিধ কারণ রয়েছে; এর মধ্যে মানবাধিকার, তাইওয়ান ইস্যু এবং দক্ষিণ চীন সাগরে নৌ চলাচলের স্বাধীনতা নিয়ে মতবিরোধ উল্লেখযোগ্য।
অতি সম্প্রতি, দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের কিছুটা উন্নতি হচ্ছে এবং অস্ট্রেলিয়ার আমদানির উপর কিছু নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করেছে চীন, তবে সব নয়।
সিডনি-ভিত্তিক গবেষণা গোষ্ঠী লোই ইনস্টিটিউটের পূর্ব এশিয়ার সিনিয়র ফেলো রিচার্ড ম্যাকগ্রেগর অস্ট্রেলিয়ান ব্রডকাস্টিং কর্পোরেশনকে বলেছেন, আলবেনিজের সফর পারস্পরিক সম্পর্ক উন্নতির একটি লক্ষণ ঠিকই, কিন্তু দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসতে আরও সময় লাগবে।
অস্ট্রেলিয়ার ওয়াইন আমদানিতে চীনা শুল্ক এখনো বহাল রয়েছে। অস্ট্রেলিয়া বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় সেই নিষেধাজ্ঞাগুলির বিরুদ্ধে তার পদক্ষেপ স্থগিত করতে সম্মত হয়েছে, যদি বেইজিং বাধাগুলির বিষয়ে দ্রুত পর্যালোচনা করতে সম্মত হয়।
সম্পদের জন্য চীনের চাহিদা, বিশেষ করে লোহা, আকরিক এবং কয়লা, অস্ট্রেলিয়ার সাম্প্রতিক সমৃদ্ধিতে অবদান রেখেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সুদূরপ্রসারী নিরাপত্তা সম্পর্কসহ মধ্যম শক্তিধর একটি দেশ অস্ট্রেলিয়া। সাবেক ব্রিটিশ উপনিবেশ এবং বিশ্বের অন্যতম বহুসংস্কৃতির দেশটির সবচেয়ে বড় বাণিজ্য অংশীদার চীন।
আলবেনিজ সরকারকে এই প্রায়শই প্রতিযোগিতামূলক স্বার্থের ভারসাম্য বজায় রাখতে হবে।
গত বছর ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী বালিতে জি-২০ বৈঠকের ফাঁকে তিনি চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে দেখা করেন।
তবে, আলবেনিজের বেইজিং সফরের সম্ভাব্য দিন-ক্ষণ এখনো নির্ধারিত হয়নি।
গত সপ্তাহে ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তায় অ্যাসোসিয়েশন অফ সাউথইস্ট এশিয়ান নেশনস বা আসিয়ান শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে, আলবেনিজ এবং চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াংয়ের মধ্যে এক বৈঠকের পর পরই এই ঘোষণা দেওয়া হয়।