জি-২০ সামিট: যুক্তরাজ্যে কড়া হাতে দমন হবে খালিস্তানি আক্রমণ - ভারতে এসে বার্তা যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রীর

ভারতের নয়া দিল্লিতে জি২০শীর্ষ সম্মেলনের জন্য ভারত মন্ডপম সম্মেলন কেন্দ্রে পৌঁছানোর পর ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাকের সাথে হাত মেলাচ্ছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি৷ শনিবার, ৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৩।

জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেওয়ার জন্য শুক্রবার ৮ অগাস্ট সস্ত্রীক ভারতে এসে পৌঁছেছেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনক। প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর প্রথমবার ভারতে এসেই খালিস্তানি জঙ্গিদের কড়া হাতে দমন করার বার্তা দিলেন তিনি। তিনি জানিয়েছেন, এ ব্যাপারে ভারত এবং যুক্তরাজ্য হাত মিলিয়ে একসঙ্গে লড়াই করতে চলেছে।

যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী জানান, খালিস্তানপন্থী জঙ্গিদের বারবার হামলার ঘটনা একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। "আমি দ্ব্যর্থহীনভাবে বলতে চাই, যুক্তরাজ্যে এরকম কোনও চরমপন্থা বা সহিংসতা একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয়। সেই কারণেই আমরা পিকেই (PKE) মোকাবিলায় ভারত সরকারের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করছি," জানিয়েছেন ঋষি সুনক।

"আমাদের নিরাপত্তামন্ত্রী সম্প্রতি ভারতে এসেছিলেন। আমরা যাতে এই ধরনের সহিংস চরমপন্থী আচরণকে একেবারে নির্মূল করতে পারি তার জন্য আমাদের বিভিন্ন গোয়েন্দা দলগুলি একসঙ্গে কাজ করছে। এটা একেবারেই ঠিক নয় এবং যুক্তরাজ্যে আমি কিছুতেই এটা বরদাস্ত করব না," আরও জানিয়েছেন তিনি।

উল্লেখ্য, জি২০ শীর্ষ সম্মেলনের আগে গত মাসে ভারতে এসেছিলেন যুক্তরাজ্যের নিরাপত্তামন্ত্রী টম টুগেনঢাত। তিনি লন্ডনের ভারতীয় কূটনীতিবিদদের নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। এই ঘটনাকে পুরোপুরি যুক্তরাজ্যের সমস্যা বলে দাবি করে তিনি জানান, "আমি একটা কথা খুব স্পষ্ট করে বলতে চাই। এটা যুক্তরাজ্যে ঘটা কোনও ভারতীয় সমস্যা নয়। যে মুহূর্ত থেকে যুক্তরাজ্যের নাগরিকরা চরমপন্থী কার্যকলাপে লিপ্ত হন, তখন থেকে সেটা যুক্তরাজ্যেরই সমস্যা হয়ে ওঠে। তাই যুক্তরাজ্যের নাগরিকদের কোনওভাবে যদি উগ্রপন্থী বানানোর চেষ্টা করা হয়, যুক্তরাজ্যের সরকার তা কড়া হাতে দমন করবে।"

প্রসঙ্গত, গত মার্চ মাসে খালিস্তানি জঙ্গিরা যুক্তরাজ্যে ভারতীয় হাইকমিশনে আক্রমণ চালিয়েছিল। সেখান থেকে ভারতের জাতীয় পতাকা খুলে ফেলে দেয় তারা। ভারতে যখন খালিস্তানপন্থী নেতা অমৃত পাল সিং-এর সন্ধানে চিরুনি তল্লাশি চালাচ্ছিল পাঞ্জাব পুলিশ, ঠিক তার একদিন পরেই এই ঘটনা ঘটেছিল। এই ঘটনাকে অসম্মানজনক বলে আখ্যা দিয়েছিলেন যুক্তরাজ্যের ব্যবসা এবং বাণিজ্যমন্ত্রী।

গত মাসেই এ ব্যাপারে ভারত এবং যুক্তরাজ্যের মধ্যে আলোচনা চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে বলে জানা গিয়েছিল। তারপর শুক্রবারের বৈঠকে এই বার্তা দেন সুনক। একই সঙ্গে ভারত-যুক্তরাজ্যের বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে মুখ খোলেন তিনি। তিনি বলেন, 'একটি বাণিজ্য চুক্তি সম্পূর্ণ করার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদী এবং আমি খুবই উৎসাহী।" তবে তিনি একথাও জানিয়ে দিয়েছেন, ব্যবসায়িক চুক্তি সম্পূর্ণ হতে সময় লাগে। তার জন্য দুই দেশকেই সমানভাবে কাজ করতে হবে।

সেই সঙ্গে তিনি আরও জানিয়েছেন, উচ্চশিক্ষা, গবেষণা, বিশ্ববিদ্যালয় এবং বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধির ব্যাপারে তিনি উৎসাহী। "ভারত এবং যুক্তরাজ্য প্রযুক্তিক্ষেত্রে বিশ্বের সবচেয়ে পরাক্রমশালী দেশগুলির মধ্যে অন্যতম। তাই আমরা একসঙ্গে কাজ করলে অনেক বেশি কর্মসংস্থান, ব্যবসা তৈরি করতে পারব, বিশ্বের অনেক গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা সমাধানেও সাহায্য করতে পারব," জানিয়েছেন যুক্তরাজ্যের ভারতীয় বংশোদ্ভূত প্রধানমন্ত্রী।