ভারতে সংসদের বিশেষ অধিবেশনের কর্মসূচী নিয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদীকে চিঠি সনিয়া গান্ধীর, তৎক্ষনাৎ উত্তর সংসদীয় মন্ত্রীর

বুধবার ৬ অগাস্ট প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি দিয়েছেন কংগ্রেসের প্রাক্তন সভানেত্রী সনিয়া গান্ধী। তৎক্ষনাৎ কংগ্রেস নেত্রীর চিঠির জবাব দিয়েছেন সংসদীয় মন্ত্রী প্রহ্লাদ যোশী।

ভারতে সদ্য সংসদের বাদল অধিবেশন শেষ হয়েছে। তার পর মাত্র এক মাসের ব্যবধানে সেপ্টেম্বরের ১৮ থেকে ২২ তারিখ পর্যন্ত সংসদের বিশেষ অধিবেশন ডেকেছে কেন্দ্র সরকার। কিন্তু এই অধিবেশনের অ্যাজেন্ডা কী তা এখনও স্পষ্ট নয়। রাজনৈতিক মহলে নানা বিষয় নিয়ে চলছে জল্পনা - যেমন, 'এক দেশ এক ভোট' নিয়ে সংবিধান সংশোধন প্রস্তাব আনা হতে পারে, দেশের ইন্ডিয়া নাম পরিত্যাগ করে শুধু ভারতই রাখা হবে, মহিলা সংরক্ষণ বিল পাস হতে পারে ইত্যাদি।

এমত পরিস্থিতিতে বুধবার ৬ অগাস্ট প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি দিয়েছেন কংগ্রেসের প্রাক্তন সভানেত্রী সনিয়া গান্ধী। চিঠিতে তিনি লিখেছেন, "বিশেষ অধিবেশনে কী আলোচনা হবে তা আপনি জানাননি। তাই বলছি সংসদের অধিবেশন যখন ডাকাই হচ্ছে, তখন এই ৯টি বিষয় নিয়েও আলোচনা হোক।" তার প্রস্তাবিত বিষয়গুলির মধ্যে রয়েছে দেশের মূল্যবদ্ধি পরিস্থিতি, কর্মসংস্থানের অভাব, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের সংকট, মণিপুর পরিস্থিতি, হরিয়ানায় সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা।

প্রধানমন্ত্রীকে সনিয়া চিঠি দেওয়ার আগে মঙ্গলবার ৫ অগাস্ট রাতে বিরোধী জোট ইন্ডিয়া-র নেতারা বৈঠকে বসেছিলেন। তাদের মতে, সরকার মূল্যবদ্ধি, বেকারত্ব, অর্থনৈতিক অব্যবস্থার মতো বিষয় থেকে মুখ ঘোরাতে নানা রকম খেলা করছে। সংসদের বিশেষ অধিবেশন ডাকার উদ্দেশ্যও তাই। কেন্দ্রে মোদী সরকারের ৯ বছর হয়ে গেছে। এবার তাদের উত্তর দেওয়ার পালা। সেই পরিস্থিতি থেকেই পালাতে চাইছে সরকার।

বুধবার সকালে কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক জয়রাম রমেশ বলেন, “সংসদের বিশেষ অধিবেশন কেন ডাকা হয়েছে কেউ জানে না। আমরা তো মোদী চালিশা শুনতে যাব না। দেশের মানুষের অনেক প্রশ্ন রয়েছে। তার জবাব সরকারকে দিতে হবে।”

সনিয়া গান্ধী যে বিষয়গুলির কথা জানিয়েছেন, তার পাশাপাশি সংসদের আসন্ন অধিবেশনে আদানি শিল্পগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ নিয়েও আলোচনা চান বিরোধীরা। সম্প্রতি যুক্তরাজ্যের দুই সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়েছে যে ভারত থেকে টাকা বেআইনি ভাবে বিদেশে পাচার করে সেই টাকা ঘুরিয়ে আদানির সংস্থায় বিনিয়োগ হিসাবে দেখানো হয়েছে। আর তার মাধ্যমে স্টক মার্কেটকে প্রভাবিত করে আদানির শেয়ার দর বাড়ানো হয়েছে। এ ব্যাপারে যৌথ সংসদীয় কমিটির তদন্ত দাবি করে সংসদে সরব হতে চায় কংগ্রেস ও বিরোধীরা।

পর্যবেক্ষকদের অনেকের মতে, বিরোধীরা সরকারের খেলা ধরতে পেরে গেছেন। তারা মনে করছেন, সংসদের বিশেষ অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী মোদীর আত্মপ্রচার ছাড়া কিছু হবে না। তা ছাড়া সরকার প্রকৃত বিষয় থেকে দৃষ্টি ঘোরাতে এই সব কাজকর্ম করছে। তাই সংসদের মধ্যেই চেপে ধরা হোক সরকারকে। বিজেপির অস্ত্র ব্যুমেরাং করে তাদের দিকেই ফিরিয়ে দেওয়া হোক। সনিয়ার চিঠিতেই বিরোধীদের সেই কৌশল স্পষ্ট।