ভারতের উত্তর প্রদেশে স্কুলশিক্ষিকার ধর্মবিদ্বেষে নিগৃহীত মুসলিম ছাত্রের পড়াশোনার ভার নিতে চাইল কেরলের সরকার

ভারতের উত্তর প্রদেশে স্কুলশিক্ষিকার ধর্মবিদ্বেষে নিগৃহীত মুসলিম ছাত্রের পড়াশোনার ভার নিতে চাইল কেরলের সরকার।

ভারতের উত্তর প্রদেশের মুজফ্ফরনগরের ক্লাস ওয়ানের এক মুসলিম ছাত্র, যার ক্লাসের হিন্দু শিক্ষিকা ক্লাসের অন্য হিন্দু ছাত্রদের বাধ্য করেছিলেন তাকে চড় মারতে, সেই শিশু ছাত্রটির পড়াশোনার ভার নিতে চাইল দক্ষিণ ভারতের রাজ্য কেরলের সিপিএম পরিচালিত রাজ্য সরকার।

সোমবার ২৮ অগাস্ট কেরলের শিক্ষামন্ত্রী ভি শিবকুট্টি তিরুবনন্তপুরমে বলেছেন, "শিশুটির পরিবার রাজি থাকলে আমাদের সরকার ওর জন্য সেরা শিক্ষার ব্যবস্থা করবে।"

প্রসঙ্গত, উত্তর প্রদেশের মুজফফনগরের একটি স্কুলের শিক্ষিকা বছর ষাটের তৃপ্তা ত্যাগীর বিরুদ্ধে ক্লাস ওয়ানের এক মুসলিম ছাত্রের প্রতি ধর্মবিদ্বেষ পোষণের অভিযোগ ওঠে গত সপ্তাহে। সমাজমধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, শিক্ষিকা সংখ্যালঘু পড়ুয়াদের উদ্দেশ্য করে বিদ্বেষমূলক কথাবার্তা বলেছেন। সেই সঙ্গে সহপাঠীদের ওই মুসলিম ছাত্রটিকে মারধর করতে বলেন। অনিচ্ছা সত্ত্বেও শিক্ষিকার নির্দেশ পালন করতে বাধ্য হয় খুদে সহপাঠীরা।

এই ঘটনায় দেশ জুড়ে সমালোচনার ঝড় বইছে। মুখ খুলেছে বিরোধী দলগুলি। ঘটনায় মুজফ্ফরনগর পুলিশ মহিলার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে। ওই শিক্ষিকা অপরাধ স্বীকার করে নিয়ে দাবি করেছিলেন, "ছোট ঘটনা। তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে বেশি হইচই করা হচ্ছে।"

সোমবার অবশ্য ভিডিও ক্যামেরার সামনে হাত জোড় করে বলেছেন "আমার ভুল হয়েছে।" মনে করা হচ্ছে মামলা থেকে বাঁচতেই তিনি সিদ্ধান্ত বদলে ভুল স্বীকার করে নিলেন।

কেরলের শিক্ষামন্ত্রী শিবকুট্টি অবশ্য চান উত্তর প্রদেশ সরকার ওই শিক্ষিকার বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহন করুক। এই কথা জানিয়ে উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথকে চিঠি লিখেছেন কেরলের শিক্ষামন্ত্রী ।

মুজফ্ফরনগরের শিশুটির শিক্ষার ভার নিতে চেয়ে প্রস্তাব দিতে গিয়ে শিবকুট্টি জানান, জাতি দাঙ্গায় বিধ্বস্ত মণিপুরের অনেক শিশু কেরলে পড়াশোনা করছে। উত্তর প্রদেশ ও মণিপুরের ঘটনাবলীকে ধর্ম নিরপেক্ষতার জন্য ভয়াবহ ইঙ্গিত করে কেরলের শিক্ষামন্ত্রী বলেন, কেরলে এই ধরনের ভেদাভেদ নেই।