সুদানের সামরিক শাসকের সফর শুরু; যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ার সতর্কবাণী জাতিসংঘের

সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আব্দুল ফাত্তাহ আল-বুরহান খার্তুমের বেসামরিক ব্যক্তিদের সঙ্গে ছবিতে পোজ দিচ্ছেন;(সুদানের সশস্ত্র বাহিনীর ফেসবুক ছবি); ২৪ আগস্ট ২০২৩।

এপ্রিলে সুদানে গৃহযুদ্ধ শুরুর পর, প্রথমবারের মতো রাজধানীর বাইরে সফরে গেছেন সুদানের সামরিক শাসক। তিনি খার্তুমের কাছাকাছি অবস্থিত কিছু সামরিক ঘাঁটিতে যান। অপরদিকে, জাতিসংঘ সতর্কবাণী দিয়েছে, যুদ্ধ সমগ্র অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়তে পারে। আর, এ কারণে একটি মানবিক বিপর্যয়ের আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে।

দুটি সরকারি সূত্র জানিয়েছে, আঞ্চলিক ঘাঁটি ও সরকারের অস্থায়ী দপ্তর পোর্ট সুদান পরিদর্শনের পর, প্রতিবেশি দেশগুলোর সঙ্গে আলোচনার জন্য সুদানের বাইরে যেতে চান জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান।

এদিকে, মন্ত্রিসভার বৈঠকে সভাপতিত্ব করারও পরিকল্পনা করছেন বুরহান।তিনি একই সঙ্গে সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান।

গত ১৫ এপ্রিল থেকে উত্তর আফ্রিকার এই দেশটির সেনাবাহিনী ও আধা সামরিক র‍্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস বাহিনী, আরএসএফ-এর মধ্যে লড়াই চলছে। খার্তুম এবং আরো কিছু শহরের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার জন্য তারা লড়াই করছে।

সেনাবাহিনী শুক্রবার বুরহানের কিছু ভিডিও-চিত্র প্রকাশ করেছে। এসব ভিডিও-চিত্রে দেখা যায়, তিনি খার্তুমের উত্তরে রিভার নাইল প্রদেশে অবস্থিত আতবারা’র গোলন্দাজ ঘাঁটি পরিদর্শন করছেন। ভিডিওতে দেখা যায়, সেনারা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করতে করতে বুরহানকে কাঁধে তুলে নিয়ে যাচ্ছেন।

আলোচনার মাধ্যমে সংঘাত নিরসনের সব প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। কূটনীতিকরা বলেন, উভয় পক্ষ বিশ্বাস করে যে তারাই জিতবে। ইতোমধ্যে ৪০ লাখের বেশি মানুষ বাসস্থান ছেড়ে পালিয়ে গেছে।সংঘাতের কারণ মৌলিক সেবা-ব্যবস্থা ধ্বংস হয়ে গেছে। আর এই যুদ্ধ, আরএসএফ ও তাদের মিত্র আধা-সামরিক বাহিনীগুলোকে দারফুরে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী বিরোধী হামলা চালানোর সুযোগ করে দিয়েছে।

জাতিসংঘের ত্রাণ বিষয়ক সংস্থার প্রধান মার্টিন গ্রিফিথস শুক্রবার এক বিবৃতিতে বলেছেন, “দ্রুত ছড়িয়ে পড়া এই সংঘাত এবং ক্ষুধা, রোগ ও সংঘাতের কারণে সৃষ্ট বাস্তুচ্যুতির ঘটনাগুলো এখন পুরো দেশকে গ্রাস করে নেয়ার হুমকি সৃষ্টি করেছে।”

তিনি জানান, দেশটির খাদ্য উৎপাদনের মূল কেন্দ্র, গেজিরা প্রদেশে যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ার কারণে তিনি উদ্বিগ্ন। ইতোমধ্যে সেখানে আরএসএফ হামলা চালিয়েছে। গেজিরা প্রদেশ খার্তুম-এর দক্ষিণে, সামান্য দূরত্বে অবস্থিত একটি অঞ্চল।

গ্রিফিথস বলেন, “হাজার হাজার শিশু ব্যাপক অপুষ্টিতে ভুগছে। আর, উপযুক্ত চিকিৎসা না পেলে, আসন্ন মৃত্যু-ঝুঁকিতে রয়েছে তারা।” তিনি আরো বলেন, ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গু জ্বর, হাম ও পানিবাহিত ডায়রিয়ার মতো মারাত্বক রোগ-ব্যাধি ছড়িয়ে পড়ছে এখানে।