হাইতির গ্যাং লিডারের দাবি দৃঢ়তার সাথে প্রত্যাখ্যান করেছে যুক্তরাষ্ট্র

হাইতির পোর্ট-অ-প্রিন্স-এ সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর সংঘর্ষ থেকে বাঁচতে, বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে যাচ্ছেন বাসিন্দারা; ১৫ আগস্ট, ২০২৩।

হাইতির এক শক্তিশালী গ্যাং লিডারের বক্তব্যকে দৃঢ়তার সাথে প্রত্যাখ্যান করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এক বিবৃতিতে ঐ গ্যাং লিডার দাবি করেছে যে প্রস্তাবিত বহুজাতিক বাহিনী যদি নিরাপত্তা পূনঃপ্রতিষ্ঠা করতে চায় তবে হাইতির বৈধ নেতাদের গ্রেপ্তার করতে হবে।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রকের এক মুখপাত্র ই-মেইলের মাধ্যমে ভয়েস অফ আমেরিকাকে জানান,"যুক্তরাষ্ট্র সরকার চেরিজিয়ার-এর মতো গ্যাং লিডারদের কর্মকাণ্ড এবং বিবৃতিকে সম্ভাব্য কঠোর ভাষায় নিন্দা জানিয়েছে।” এই অপরাধ চক্রটি পোর্ট-অ-প্রিন্স এবং আর্টিবোনাইট বিভাগের বেশিরভাগ অংশক পঙ্গু করে দিয়েছে এবং হাইতির এক লাখের বেশি নাগরিককে বাস্তুচ্যুত করেছে।

পোর্ট-অ-প্রিন্সের শক্তিশালী জি-৯ ফ্যামিলি এবং এর সহযোগী অপরাধী চক্র এফআরজি-৯ এর নেতা জিমি চেরিজিয়ার বুধবার সংবাদদাতাদের বলেন, হাইতির নিরাপত্তা পুনরুদ্ধারে সহায়তা করার জন্য, কিছু নির্দিষ্ট পরিস্থিতি বিবেচনায় তিনি একটি বহুজাতিক পুলিশ বাহিনীকে স্বাগত জানাবেন।

জিমি চেরিজিয়ার বলেন, “যদি, কখনো বিদেশি বাহিনী আসে; আর তারা সেই সব দুর্নীতিবাজ অভিজাত, রাজনীতিবিদ এবং যেসব রাজনীতিবিদ সুবিধা বঞ্চিত বসতিগুলোতে অস্ত্র ও গোলাবারুদ বিক্রি করছে; তাদের গ্রেপ্তার করে; তবে আমি তাদের প্রশংসা করবো।”

সেই সাথে তিনি সাবধান করেন, “২০২৩ বা ২০২৪ সালে যদি বিদেশি বাহিনী আসে এবং যদি আমরা দেখি তারা নারীদের যৌন নিপীড়ন করছে বা ২০০৪ সালে উরুগুয়ের সৈন্যদের মতো অল্পবয়সী ছেলেদের ধর্ষণ করছে; যদি তারা হাইতিতে কলেরা ফিরিয়ে আনে কিংবা যদি তারা সুবিধাবঞ্চিত এলাকায় আমাদের ওপর গুলি চালায়, মানুষকে হত্যা করে বা গণহত্যার পরিকল্পনা করে; তবে শেষ রক্ত বিন্দু দিয়ে আমরা হাইতিবাসীরা তাদের বিরুদ্ধে লড়াই করে যাবো।

পররাষ্ট্র মন্ত্রকের ঐ মুখপাত্র ভয়েস অফ আমেরিকাকে বলেন, হাইতিতে যারা “মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন করছে এবং উল্লেখযোগ্য হারে দুর্নীতি” করছে তাদের জবাদিহির আওতায় আনতে যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসন কাজ করে যাবে।

মুখপাত্র উল্লেখ করেন, লা স্যালাইন হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগে মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য গ্লোবাল ম্যাগনিটস্কি নিষেধাজ্ঞা কর্মসূচির আওতায় ২০২০ সালের ডিসেম্বরে চেরিজিয়ারের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র। ২০১৮ সালে পোর্ট-অ-প্রিন্স এর সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর ওপর চালানো সহিংস হামলায় কমপক্ষে ৭১ জন নিহত হয়।

২০২২ সালে হাইতিকে পঙ্গু করে দেয়া অর্থনৈতিক ও মানবিক সংকটে ভূমিকার জন্য চেরিজিয়ারকে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের একটি প্রস্তাবেও অভিযুক্ত করা হয়। অপরাধ চক্রের এই নেতা রাজধানীর সবচেয়ে বড় তেল টার্মিনাল ভারেক্স থেকে তেল সরবরাহে বাধা দিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এর ফলে সারা দেশে জ্বালানি ও বিদ্যুৎ সংকট দেখা দেয়।

পররাষ্ট্র মন্ত্রকের মুখপাত্র জানান, বহুজাতিক বাহিনীকে নেতৃত্ব দেয়ার জন্য কেনিয়া সরকারের ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।