পাকিস্তানে ধর্ম অবমাননার অভিযোগে গীর্জাসহ বেশ কয়েকটি ভবনে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে মুসলমানরা

পাকিস্তানের ফয়সালাবাদের উপকণ্ঠে একটি খ্রিস্টান পরিবারের বিরুদ্ধে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ আনার পর উত্তেজিত মুসলমানরা গির্জায় আগুন ধরিয়ে দেয়। ১৬ অগাস্ট, ২০২৩।

ধর্ম অবমাননার অভিযোগে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ পাকিস্তানের পূর্বাঞ্চলে একটি খ্রিস্টান অধ্যুষিত এলাকায় হামলা চালিয়েছে উত্তেজিত জনতা। এ সময় তারা গীর্জাসহ বেশ কয়েকটি ভবনে আগুন ধরিয়ে দেয়।

স্থানীয় পুলিশ জানিয়েছে, পাকিস্তানের তৃতীয় বৃহত্তম শহর ফয়সালাবাদের শিল্পাঞ্চল জরানওয়ালায়, একটি খ্রিস্টান ছেলের বিরুদ্ধে পবিত্র কুরআন শরীফ অবমাননা করার অভিযোগ আনার পর, ভাঙচুরের ওই ঘটনা ঘটে।

সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর ক্ষুব্ধ জনতার আক্রমণে ঠিক কী পরিমাণে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তাৎক্ষণিকভাবে তা স্পষ্ট করে বলেনি পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষ। তবে খ্রিস্টান নেতারা, হামলায় একাধিক গীর্জা এবং ঘরবাড়ির ব্যাপক ক্ষতির কথা জানিয়েছেন।

পাকিস্তানের চার্চের মডারেটর বিশপ আজাদ মার্শাল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স (আগে টুইটার নামে পরিচিত)-এ বলেছেন, "আমি যখন এটি লিখছি, তখন এর প্রতিটি শব্দ আমার বুকে কাঁটার মতো বিঁধছে। আমরা, বিশপ, পুরোহিত এবং সাধারণ মানুষ জারানওয়ালার ঘটনায় গভীরভাবে ব্যথিত এবং মর্মাহত।"

মার্শাল দাবি করেছেন, পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষ অবিলম্বে দায়ীদের বিচারের আওতায় আনতে সক্ষম হবে এবং তারা সমস্ত নাগরিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।

পাকিস্তানের তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার-উল-হক কাকার, বুধবারের হামলার পিছনে যারা রয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে "কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার" প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

পাকিস্তানের স্বাধীন মানবাধিকার কমিশন খ্রিস্টান এলাকায় মুসলিম জনতার হামলার নিন্দা করেছে। দেশের ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের রক্ষা করতে সরকার ব্যর্থ হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে কমিশন।

ব্লাসফেমি বা ধর্ম আবমাননা পাকিস্তানে একটি অত্যন্ত সংবেদনশীল বিষয়, এবং নিছক অভিযোগের কারণেই কয়েক ডজন সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে গণপিটুনি দিয়েছে উত্তেজিত জনতা। এমনকি, কেউ কেউ এখনো পুলিশ হেফাজতে রয়েছে৷ দেশটির ব্লাসফেমি আইনে কুরআন বা ইসলামিক বিশ্বাসের অবমাননা মৃত্যুদন্ডযোগ্য অপরাধ, যদিও এর আগে কাউকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়নি।