রাজনীতি থেকে ৫ বছরের জন্য নিষিদ্ধ পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান

পাকিস্তানের ইসলামাবাদে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান একটি আদালত চত্বরে হাজিরা দেওয়ার জন্য উপস্থিত হবার সাথে সাথে নিরাপত্তা কর্মকর্তারা তাকে নিয়ে যাচ্ছেন। ১২ মে, ২০২৩।

পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান দুর্নীতির অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হয়ে কারুরুদ্ধ হওয়ায়, আগামী পাঁচ বছর সরকারি কোনো পদে থাকতে পারবেন না বলে, মঙ্গলবার দেশটির নির্বাচন কমিশন এক রায় দিয়েছে।

খান ইসলামাবাদের একটি উচ্চ আদালতে দোষী সাব্যস্ত হলে, রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার কয়েক ঘণ্টা পর কমিশন অযোগ্যতার ঘোষণা দেয়। আদালত বুধবার শুনানির দিন ধার্য করেছে।

পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশনের মঙ্গলবারের আদেশে খানকে সরকারী পদে থাকার জন্য অযোগ্য ঘোষণা করার জন্য আদালতের রায় এবং প্রাসঙ্গিক নির্বাচনী আইনের বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, "অতএব, জনাব ইমরান আহমেদ খান নিয়াজীকে পাঁচ বছরের জন্য রাজনীতিতে অযোগ্য বলে ঘোষণা করা হয়েছে।"

যুক্তরাষ্ট্র সোমবার সপ্তাহান্তে পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের গ্রেপ্তারকে দক্ষিণ এশিয়ার ওই দেশটির “অভ্যন্তরীণ বিষয়” হিসেবে অভিহিত করেছে। অন্যদিকে জাতিসংঘ, বিবাদের মধ্যে থাকা এই রাজনীতিকের বিরুদ্ধে বিচারের যথাযথ প্রক্রিয়াকে সম্মান করার আহ্বান জানিয়েছে।

রাষ্ট্রীয় উপহার বিক্রি এবং তাদের আয় গোপন করার অভিযোগে তিন বছরের কারাদণ্ডের পর ৭০ বছর বয়সী পাকিস্তানি এই বিরোধী নেতাকে শনিবার পুলিশ হেফাজতে নেয়ার পর দেশটির রাজধানী ইসলামাবাদের পশ্চিমে অ্যাটক কারাগারে দ্রুত স্থানান্তরিত করা হয়।

সোমবার নিউইয়র্কে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস সকল পক্ষকে সহিংসতা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।

ইমরান খান দুর্নীতির অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, এ বছরের শেষের দিকে অনুষ্ঠিতব্য সাধারণ নির্বাচনে তাকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে বিরত রাখার জন্য রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে অনুপ্রাণিত। আপিল আদালত বাতিল না করলে দোষী সাব্যস্ত হলে তাকে পাঁচ বছরের জন্য জাতীয় নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার অযোগ্য বলে ঘোষণা করা হবে।

সোমবার এই ক্রিকেট তারকা ও রাজনীতিবিদকে তার দোষী সাব্যস্ত হওয়ার বিরুদ্ধে আপিল প্রস্তুত করতে প্রথমবারের মতো কারাগারে তার একজন আইনজীবীর সাথে সাক্ষাৎ করার অনুমতি দেয়া হয়েছিল।

পাকিস্তানের কর্মকর্তারা বলেছেন, আদালতের রায় বা আইনি প্রক্রিয়ার সাথে তাদের কোনো সম্পর্ক নেই। কারাগারে ইমরান খানের সাথে দুর্ব্যবহার করা হচ্ছে এমন অভিযোগের বিষয়ে সরকারি কর্মকর্তারা এখনো কোনো মন্তব্য করেননি।

বিশ্লেষকরা বলছেন, ইমরান খান যেসব আইনি ঝামেলা এবং হামলার মুখোমুখি হয়েছেন, সেগুলো সত্ত্বেও তিনি পাকিস্তানের সবচেয়ে জনপ্রিয় রাজনীতিবিদ এবং তার দলকে দেশের বৃহত্তম রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে মূল্যায়ন করা হয়।