বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি তাদের নতুন পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থার অধীনে, পরীক্ষামূলকভাবে ইথিওপিয়ার যুদ্ধ-বিধ্বস্ত টিগ্রায় অঞ্চলে খাদ্য সহায়তা বিতরণ করতে শুরু করেছে বলে, মঙ্গলবার জাতিসংঘের সংস্থাটি জানিয়েছে।
বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি বা ডব্লিউএফপি এবং আমেরিকান সাহায্য সংস্থা ইউএসএআইডি গত জুন মাসে আফ্রিকার দ্বিতীয় সর্বাধিক জনবহুল এই দেশটিতে খাদ্য সহায়তা বন্ধ করে দেয়, যখন জানা গিয়েছিল যে, সরবরাহগুলি অভাবগ্রস্তদের কাছে যথাযথভাবে পৌঁছাচ্ছে না।
মঙ্গলবার, জাতিসংঘের খাদ্য সংস্থা বলেছে, তারা উন্নত পর্যবেক্ষণ প্রক্রিয়াসহ একটি পাইলট প্রকল্পের অংশ হিসাবে, আপাতত এক লাখ অভাবী লোকের মধ্যে ১৫-কিলোগ্রাম করে গমের ব্যাগ বিতরণ শুরু করেছে।
বার্তা সংস্থা এএফপি-কে দেওয়া এক বার্তায় সংস্থাটি বলেছে, তারা "৩১ জুলাই, বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি টিগ্রায়-এর চারটি জেলায় খাদ্য সহায়তা প্রদানের জন্য বর্ধিত নিয়ন্ত্রণ ও সরবরাহ ব্যবস্থা যাচাই বাছাই শুরু করেছে।"
নতুন পদক্ষেপের মধ্যে রয়েছে, খাদ্য সরবরাহ নিশ্চিত করা এবং গ্রহীতাদের ডিজিটাল ভাবে নিবন্ধন করা, যাতে সঠিক লোকের হাতে সাহায্য পৌঁছায়।
টিগ্রায়-তে গত দুই বছরের নৃশংস যুদ্ধের পাশাপাশি, সোমালিয়া এবং কেনিয়ার কিছু অংশে ভয়াবহ খরার কারণে, লক্ষ লক্ষ ইথিওপিয়ান মারাত্মক খাদ্য সংকটের সম্মুখীন হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র সরকারের প্রধান আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থা ইউএসএআইডি-এর একজন মুখপাত্র এএফপিকে বলেছেন, ইথিওপিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য সহায়তা স্থগিত রাখা রয়েছে।
মুখপাত্র বলেন, "যত দ্রুত সম্ভব খাদ্য সহায়তা পুনরায় শুরু করার জন্য আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, কিন্তু আমাদের সহায়তা সত্যিকারের অভাবী লোকেদের কাছে ঠিক মতো পৌঁছাচ্ছে কিনা, সে বিষয়ে আগে আমাদের নিশ্চিত হতে হবে।"
সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলিতে স্থানীয় মিলিশিয়া এবং জাতীয় সেনাবাহিনীর মধ্যে চলা সংঘর্ষ প্রত্যক্ষ করেছে টিগ্রায়-এর প্রতিবেশী আমহারা অঞ্চল। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, সংঘর্ষের ফলে সেখানে মানবিক কার্যক্রম ব্যাহত হয়েছে।
আমহারায় সহিংসতা বৃদ্ধি পাওয়ায়, গত সপ্তাহে সেখানে ছয় মাসের জরুরি অবস্থা ঘোষণা করতে বাধ্য হয় প্রধানমন্ত্রী আবি আহমেদের সরকার।
সংঘর্ষের কারণে মঙ্গলবার, ইথিওপিয়ান এয়ারলাইন্স আমহারা অঞ্চলের রাজধানী শহর বাহির দার যাওয়ার সব ফ্লাইট বাতিল করেছে। গত সপ্তাহে, এয়ারলাইনটি উত্তরাঞ্চলের আরও তিনটি বিমানবন্দরে তাদের সমস্ত ফ্লাইট বাতিল করেছে।
গত এপ্রিলে, ফেডারেল সরকার ইথিওপিয়া জুড়ে আঞ্চলিক বাহিনীকে প্রত্যাহার করার ঘোষণা দেয়ার পর থেকে সেখানে উত্তেজনা বেড়েই চলেছে।