টাইফুন ডকসুরির কারণে সৃষ্ট বন্যার পানি চীনের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে খামার ও শহরগুলোকে প্লাবিত করছে, এই প্লাবন পরিস্থিতি সপ্তাহান্তেও অব্যাহত ছিলো। গত কয়েক বছরের মধ্যে সবচেয়ে প্রবল এই ঝড়ের পরবর্তী প্রভাব নিয়ন্ত্রণে আনতে দেশটির দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থাগুলো হিমশিম খাচ্ছে।
ভুট্টা উৎপাদনের জন্য পরিচিত জিলিন প্রদেশের শুলান শহর থেকে প্রায় ১৫ হাজার বাসিন্দাকে অন্যত্র সরিয়ে নেয়া হয়েছে। রাষ্ট্রায়ত্ত গণমাধ্যম জানিয়েছে, এই এলাকায় ১ ব্যক্তি নিহত হয়েছেন; আর নিখোঁজ রয়েছেন আরো ৪ জন।
রাষ্ট্রায়ত্ত গণমাধ্যম জানিয়েছে, ১ আগস্ট থেকে নিরবচ্ছিন্নভাবে শুলানে বৃষ্টিপাত হচ্ছে। কিছু এলাকায় প্রায় ৪৯ সেন্টিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে, যা আগের রেকর্ডের চেয়ে ৫ গুণ বেশি। শহর জুড়ে সেতু ধ্বসে পড়েছে এবং সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
টাইফুন ডকসুরির একটা অংশ দেশটির অভ্যন্তরে প্রবেশ করলে, জুলাইর শেষের দিকে তুমুল বৃষ্টিপাত শুরু হয়। এই বৃষ্টিপাত আগের সব রেকর্ড ভেঙেছে। ডাকসুরির প্রভাবে চীনের উত্তরাঞ্চলে ব্যাপক বন্যা দেখা দেয় এবং লাখ লাখ মানুষের জীবন-যাপন বিঘ্নিত হয়।
গত সপ্তাহে বেইজিং ও চীনের উত্তরাঞ্চলের বেশ কিছু স্থানে বৃষ্টিপাতের নতুন রেকর্ড সৃষ্টি হয়েছে। সুবিস্তৃত হাইহে নদীর পৃষ্ঠের পানি উপচে ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছে। এটা ১৯৬৩ সালের পর সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যা।
বেইজিং এর দক্ষিণ পশ্চিমে অবস্থিত ঝৌঝৌ শহর। হেবেই প্রদেশে এই শহরটি সবচেয়ে বেশি দুর্দশার শিকার হয়েছে। এ শহরের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৬ ভাগের ১ ভাগ; অর্থাৎ ১ লাখ মানুষকে সেখান থেকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে।
চীন দীর্ঘদিন ধরে নগরাঞ্চলের জলাবদ্ধতার ঝুঁকির বিষয়ে সচেতন। দ্রুতগতির উন্নয়নের কারণে নির্মিত হচ্ছে অসংখ্য বড় শহর। আর, এসব নগর প্লাবন-ভূমিকে ইট-পাথরে ঢেকে দিচ্ছে। বৈশ্বিক উষ্ণতার কারণে সৃষ্ট বৈরি আবহাওয়ার কারণে পরিস্থিতিকে আরো অবনতির দিকে নিয়ে যাচ্ছে।
চীনের আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশটির উত্তর-পূর্বাঞ্চলে টাইফুনের প্রভাব খুবই বিরল। কারণ, বেশিরভাগ ঝড় চীনের স্থলভাগে আঘাত হানার পর পশ্চিম বা উত্তর পশ্চিমে ধাবিত হয়।