কুরআন পোড়ানোর অনুমতি দেওয়া দেশগুলোর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে আহ্বান ইসলামিক সংস্থার

সুইডেনে কুরআন পোড়ানোর প্রতিবাদে বাগদাদে সুইডিশ দূতাবাসের সামনে শিয়া মুসলিম নেতা মুক্তাদা আল-সদরের সমর্থকরা বিক্ষোভ করেছে। ( ৩০ জুন , ২০২৩)

ইসলামি সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি) সোমবার, যেসব দেশ প্রকাশ্যে কুরআন পোড়ানো বা অবমাননার অনুমতি দেয় তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে তাদের সদস্য দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।

সুইডেন ও ডেনমার্কে সরকারিভাবে অনুমোদিত বিক্ষোভে ইসলামি পবিত্র গ্রন্থ পুড়িয়ে দেওয়া বা বিকৃত করার সাম্প্রতিক ঘটনা নিয়ে আলোচনার জন্য সৌদি আরবভিত্তিক গোষ্ঠীটি তাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের একটি জরুরি অনলাইন বৈঠকের পর এক বিবৃতিতে এ আহ্বান জানিয়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, সংস্থাটির ৫৭টি সদস্য দেশকে তাদের রাষ্ট্রদূতদের ডেকে পাঠানোসহ এ ধরনের ঘটনার অনুমতি দানকারী অন্যান্য দেশের সঙ্গে "সম্পর্কের ক্ষেত্রে উপযোগী যেকোনো প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত ও পদক্ষেপ গ্রহণের বিষয়টি বিবেচনা করা উচিত।"

এতে সদস্য রাষ্ট্রগুলোর সুশীল সমাজ সংগঠনগুলোকে যেসব দেশে কুরআন পোড়ানো বা অপবিত্র করা হয়েছে সেসব দেশের সহযোগী মানুষের সঙ্গে কাজ করতে উৎসাহিত করা হয়েছে, যাতে তারা “প্রযোজ্য ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক বিচার বিভাগীয় সংস্থায় মামলা নেয়ার আগে” স্থানীয় ভাবে মামলা দায়ের করতে পারে।

এতে সুইডেনে বিতরণের জন্য সুইডিশ ভাষায় অনূদিত কুরআনের এক লাখ কপি মুদ্রণের জন্য কুয়েতের প্রশংসা করে ইসলামোফোবিয়া মোকাবেলায় আরও প্রচেষ্টা চালানোর আহ্বান জানানো হয়।

চূড়ান্ত বিবৃতিতে ইরাকের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফুয়াদ হুসেনের সুপারিশ প্রতিফলিত হয়, যাতে জাতিসংঘকে "এই ঘটনাগুলি রোধে ব্যবস্থা নেওয়ার" আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

সুইডেন এবং ডেনমার্ক উভয় দেশেই ব্লাসফেমির বিরুদ্ধে কোনও আইন নেই এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে সাধারণত উচ্চ মর্যাদায় দেখা হয়।

কিন্তু সম্প্রতি কুরআন পোড়ানোর ঘটনায় মুসলিম দেশগুলোতে ক্ষুব্ধ বিক্ষোভ ও কূটনৈতিক প্রতিক্রিয়া দেখা দেওয়ায় স্ক্যান্ডিনেভিয়ান দেশগুলোর কর্মকর্তারা, পবিত্র গ্রন্থ বা অন্যান্য ধর্মীয় প্রতীকের জনসমক্ষে বিকৃত করার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা উচিত কিনা তা বিবেচনা করতে শুরু করেছেন।

ডেনমার্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী রাসমুসেন ডেনমার্কের পাবলিক ব্রডকাস্টার ডিআর-কে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, মত প্রকাশের স্বাধীনতার সঙ্গে আপস না করে এ ধরনের উস্কানিমূলক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ করার জন্য সরকার একটি “আইনি হাতিয়ার” খুঁজছে।

সুইডেনের প্রধানমন্ত্রী উলফ ক্রিস্টারসন ইনস্টাগ্রামে বলেছেন, তার সরকার কুরআন ও অন্যান্য পবিত্র গ্রন্থের অবমাননার বিষয়ে আইনি পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করছে।

সোমবারের বৈঠকের আগে ওআইসি কুরআন পোড়ানোর ঘটনায় সুইডেনের বিশেষ দূতের মর্যাদা স্থগিত করেছে।

ডেনমার্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তার সরকার কুরআনের অবমাননার নিন্দা জানিয়েছে এবং “তারা অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে বিষয়টি পর্যালোচনা করছে।“