জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়োশিমাসা হায়াশি শনিবার বলেছেন, ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের আশেপাশের নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা গড়ে তোলার লক্ষ্যে টোকিও-নেতৃত্বাধীন উদ্যোগে শ্রীলঙ্কা একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার।
হায়াশি বলেন, কৌশলগতভাবে ভারত মহাসাগরে অবস্থিত দ্বীপদেশ শ্রীলঙ্কা স্বাধীন ও উন্মুক্ত ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের একটি অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। রাজধানী কলম্বোতে শ্রীলঙ্কার পররাষ্ট্রমন্ত্রী আলি সাবরির সঙ্গে বৈঠকের পর তিনি এ কথা বলেন।
গত মার্চ মাসে জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা ঘোষিত এই উদ্যোগের মধ্যে রয়েছে, শ্রীলঙ্কার উদীয়মান অর্থনীতিতে জাপানের সহায়তা, সামুদ্রিক নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, উপকূলরক্ষী টহল জাহাজ এবং সরঞ্জামসহ অন্যান্য অবকাঠামোগত সহযোগিতার ব্যবস্থা।
যদিও জাপান শ্রীলঙ্কার সবচেয়ে বড় ঋণদাতা দেশ, তারপরও দেশটির ঋণের প্রায় ১০% চীনের কাছে দায়বদ্ধ। চীন তার বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের অংশ হিসেবে সমুদ্রবন্দর, বিমানবন্দর এবং বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের জন্য কলম্বোকে শত শত কোটি ডলার ধার দিয়েছে। এছাড়া, গত মার্চ মাসে, শ্রীলঙ্কাকে ঋণ পরিশোধে দুই বছরের স্থগিতাদেশ দিতে সম্মত হয় চীন।
হায়াশি বলেন, তিনি শ্রীলঙ্কার ঋণ পুনর্গঠন প্রক্রিয়ায় আরও অগ্রগতির প্রত্যাশা করছেন। তিনি আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের সাথে করা চুক্তির অধীনে শ্রীলঙ্কার প্রচেষ্টাকে স্বাগত জানান, যার মধ্যে রয়েছে দুর্নীতিবিরোধী পদক্ষেপ এবং নীতি-নির্ধারণ প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা।
শ্রীলঙ্কার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাবরি বলেছেন, তিনি শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহের সাথে জাপানকে ইতোমধ্যে পাইপলাইনে থাকা বিনিয়োগ প্রকল্পগুলি পুনরায় শুরু করতে এবং বিদ্যুৎ উৎপাদন, বন্দর ও মহাসড়ক এবং বিশেষ বিনিয়োগ অঞ্চলের মতো খাতে নতুন বিনিয়োগ বিবেচনা করার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছেন, বিশেষ করে, পরিবেশ-বান্ধব এবং ডিজিটাল অর্থনীতিতে।
বহু দশক ধরে, শ্রীলঙ্কার অন্যতম প্রধান দাতা হয়ে উঠেছে জাপান। দেশটি, রেয়াতি শর্তে মূল প্রকল্পগুলি পরিচালনা করছে। তবে, বিক্রমাসিংহের পূর্বসূরি, গোটাবায়া রাজাপাকসে, ২০১৯ সালে তার নির্বাচনের পর একতরফাভাবে জাপানের অর্থায়নকৃত একটি রেলপথ প্রকল্প বাতিল করার পর, দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের টানাপোড়েন শুরু হয়।
তবে, রেল প্রকল্পটি পুনরায় চালু করার একটি প্রস্তাব ইতোমধ্যে অনুমোদন করেছে শ্রীলঙ্কার মন্ত্রিসভা।
দেশটির ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক সংকট নিয়ে ক্ষুব্ধ জনগণের বিক্ষোভের মুখে ২০২২ সালের জুলাই মাসে রাজাপাকসে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন।